Bankura: ৮০ ছুঁইছুঁই বৃদ্ধ চার বছর ধরে দৌড়ে বেড়াচ্ছেন শুধু নিজেকে জীবিত প্রমাণ করতে!

৮০ বছরের বৃদ্ধের হালও কি হবে রবীন্দ্রনাথের কাদম্বিনীর মতো!
Bankura
Bankura

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'জীবিত ও মৃত' গল্পের কথা মনে আছে? মনে পড়ে সেই বিখ্যাত লাইন, "কাদম্বিনী মরিয়া প্রমাণ করিল সে মরে নাই"?
এবার আসছি বাঁকুড়ার (Bankura) সিমলাপাল ব্লকের কানাকাটা গ্রামের নজর আলি খানের কথায়। বয়সের ভারে ন্যুব্জ এই ব্যক্তিকেও না একদিন ওই রাস্তাতেই হাঁটতে হয়! কারণ, দিব্যি হেঁটেচলে বেড়ানো এই বৃদ্ধ সরকারের খাতায় 'মৃত'। ফলে এক সময় তিনি প্রতি মাসে বার্ধক্য ভাতা বাবদ যে ১০০০ টাকা করে পেতেন, তা গত চার বছর হল বন্ধ। সমস্যা সমাধানে তিনি স্থানীয় নেতা, পঞ্চায়েত, প্রশাসন সর্বত্র দরবার করেছেন। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি আজও। ফলে একজন জীবিত ব্যক্তি কি নিজেকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে প্রমাণ করতে বাধ্য হবেন যে তিনি মৃত নন? পরিবেশ এবং পরিস্থিতি দেখে ওই বৃদ্ধ রীতিমতো হতাশ। তিনিও বুঝতে পারছেন না, এবার কী করবেন।

সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়ছে (Bankura)

নজর আলি খানের বয়স ৮০ ছুঁই ছুঁই। মাথার সব চুল পেকে গিয়েছে। মুখ সাদা দাড়িতে ভরা। কয়েকটা দাঁতও আস্ত নেই। ভালো করে কথা বলার শক্তি হারিয়েছেন তিনি। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী তিনি দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই বার্ধক্য ভাতা পেয়ে আসছিলেন। কিন্তু ছন্দপতন ঘটে ২০২০ সালে। বার্ধক্য ভাতা হিসেবে ওই টাকা বন্ধ হয়ে যায়। তখনই তিনি পড়ে যান আতান্তরে। গ্রামের মানুষ যা করে, তিনিও ছুটলেন পঞ্চায়েত দফতরে (Bankura)। কাজ হল না। ছুটে গেলেন বিডিও অফিসে। সেখানেও একই কথা, সরকারের খাতায় আপনি তো মৃত। মানুষের নানা সমস্যা সমাধানের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে যে দুয়ারে সরকার শিবির চালু হয়েছে, দৌড়ে গেলেন সেখানেও। একরাশ হতাশা ছাড়া জুটল না আর কিছুই। এদিকে অভাবের সংসারে ওই টাকাটুকু না পাওয়ায় সমস্যা জটিল থেকে জটিলতর হয়ে ওঠে। নিজেকে জীবিত প্রমাণ করার চেষ্টা এখনও চালিয়ে যাচ্ছেন ওই অসহায় বৃদ্ধ।

প্রশাসনের কি আদৌ কোনও সদিচ্ছা আছে? (Bankura)

প্রশ্ন উঠতে পারে, দিব্যি হাঁটাচলা করা এক ব্যক্তির গা থেকে মৃত লেবেলটা গত চার বছর ধরে পার্টি বা প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা কেন তুলে দিতে পারলেন না? কেন একে অন্যের ওপর দায় চাপালেন। সিমলাপাল গ্রাম পঞ্চায়েত স্বীকার করেছে যে একটা অনিচ্ছাকৃত ভুল। তা যত দ্রুত সম্ভব ঠিক করা হবে, এমন আশ্বাসও তারা দিয়েছে। চার বছর অপেক্ষা করা কি সেই দ্রুত সমাধানের পরিচয়? বিডিও মানস চক্রবর্তীর মুখেও সেই একই আশ্বাস, দ্রুত সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে। বাঁকুড়া জেলা তৃণমূলের সম্পাদক রামানুজ সিংহ মহাপাত্রও আশ্বাস দেওয়ার ব্যাপারে এঁদের থেকে পিছিয়ে নেই। হক কথাটি বলেছেন বাঁকুড়া (Bankura) জেলার বিজেপির সম্পাদক দীপককুমার দাস। তাঁর প্রশ্ন, প্রশাসনের কি আদৌ কোনও সদিচ্ছা আছে?   

 

দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles