মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: তাঁর পোস্টার ঘিরে যে সময় উত্তাল বঙ্গ-রাজনীতি, ঠিক সেই সময় চুপচাপ ‘গোপনে’ দুবাই গেলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)।
গত রবিবার মধ্যরাতে দুবাই গিয়েছেন অভিষেক (Abhishek Banerjee in Dubai)। দলের তরফে জানানো হয়েছে, চোখের চিকিৎসা করাতেই স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে দুবাই গিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (AITC General Secretary)। ভালো কথা, তিনি যেতেই পারেন। বলা বাহুল্য, তিনি এর আগেও গেছেন। কিন্তু, এবার তাঁর যাত্রা নিয়ে এত কৌতুহল বা এত প্রশ্ন কেন?
সূত্রের খবর, অভিষেক যে দুবাই যাচ্ছেন, তা জানতেন না কেউ-ই। অর্থাৎ, তৃণমূলের ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড’ যে দুবাই যাচ্ছেন, তা ঘুণাক্ষরেও কাউকে জানানো হয়নি। জানা গিয়েছে, তাঁর এই যাত্রা সম্পর্কে কোনও ধারণাই ছিল না স্টেট প্রোটোকলের। এমনকী, কলকাতা পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ থেকে শুরু করে রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ বা আইবি - কারও কাছে কোনও তথ্য ছিল না। সূত্রের খবর, অভিষেকের যাওয়ার বিষয়টা এতটাই গোপনীয়তায় মোড়া ছিল যে, এয়ারপোর্ট পুলিশ ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে শেষ মুহূর্তে জানানো হয়।
অভিষেক যে দুবাই গিয়েছেন, তা জানা যায় যাত্রার একদিন অতিক্রান্ত হওয়ার পর। ততক্ষণে দক্ষিণ কলকাতায় তাঁর নামে দক্ষিণ কলকাতা জুড়ে যে পোস্টার পড়েছে, তা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে জল্পনা ছড়িয়েছে। কিন্তু, কেন এত গোপন রাখা হয়েছিল তাঁর দুবাই যাত্রার বিষয়টি? যাত্রার বিষয়টি কার থেকে আড়াল করতে চাইছিলেন? সংবাদমাধ্যমের থেকে নাকি দলীয় নেতা-কর্মীদের থেকে? তাই যদি হয়, তাহলেও প্রোটোকল কেন তাঁর যাত্রার বিষয়টা জানল না? গোয়েন্দারাও কেন ছিলেন অন্ধকারে? তাহলে কি ইডি-সিবিআইকে আড়াল করতেই এই পদক্ষেপ? আর যখন তিনি চোখের চিকিৎসার জন্যই যাচ্ছেন, তাহলে এত লুকোচুরির কী প্রয়োজন?
একাধিক কাণ্ড নিয়ে তৃণমূল যখন অথৈ জলে, তখন অভিষেকের এই বিদেশ যাত্রা অবশ্যই রাজ্য রাজনীতির মহলে আলোড়ন তুলেছে, বিশেষ করে অভিষেকের পোস্টার নিয়ে যখন ছয়লাপ কালীঘাট চত্বর। কোনও পোস্টারে লেখা, ‘আগামী ৬ মাসের মধ্যে সামনে আসবে নতুন তৃণমূল। ঠিক যেমন সাধারণ মানুষ চায়।’ কোনও পোস্টারে আবার লেখা, ‘চলুন লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হন। এই লড়াই আমাদের ২৪ এর লড়াই।’
আরও পড়ুন: তৃণমূল পার্টিটা আর ছ'মাসও টিকবে না, ডেডলাইন শুভেন্দুর
এখানে মনে করিয়ে দেওয়া যাক, ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে ‘নতুন তৃণমূলে’র ডাক দিয়েছিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। সেই সভার পর ইডির (ED) জালে ধরা পড়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী তথা দলের প্রাক্তন মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee), সিবিআই (CBI) হাতকড়া পরিয়েছে বীরভূম (Birbhum) জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mondal)। ফলে, এই পরিস্থিতিতে অভিষেকের নামে এবং উদ্ধৃতি দিয়ে পোস্টার পড়ায় নতুন জল্পনা শুরু হয়েছে। এই সব প্রশ্ন এড়াতেই কি ‘গোপনে’ বিদেশ যাত্রার সিদ্ধান্ত নিলেন অভিষেক?
অনেকে অভিষেকের এই যাত্রার সঙ্গে আবার কংগ্রেসের (Congress) রাহুল গান্ধীর (Rahul Gandhi) আচমকা দলের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বিদেশে চলে যাওয়ার মিল খুঁজে পাচ্ছেন। তাঁদের মতে, মিল তো হওয়ারই কথা। দুজনই তো ‘যুবরাজ’।
+ There are no comments
Add yours