মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পেশায় স্কুল-শিক্ষিকা। তাতেই কেষ্ট-কন্যার অর্জিত সম্পত্তির পরিমাণ কয়েক'শ কোটি টাকারও বেশি! কী করে? গরুপাচার মামলার (Cattle smuggling case) তদন্তে এই প্রশ্নের উত্তরই এখন হন্যে হয়ে খুঁজে চলেছে সিবিআই (CBI)। যে কারণে, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের পাখির চোখ ফের একবার বোলপুরের (Bolpur) নিচুপট্টিতে অনুব্রতর বাড়ি। এবার অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) স্কুল শিক্ষিকা মেয়ে সুকন্যাকে (Sukanya Mondal) জেরা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে সিবিআই।
এদিন সকালে, নিচুপট্টির বাড়িতে সুকন্যাকে জেরা করতে পৌঁছ গিয়েছিল সিবিআই। কিন্তু, আইনজীবী মারফৎ সুকন্যার তরফে জানিয়ে দেওয়া হয় যে, মা বেঁচে নেই, বাবা হেফাজতে। তিনি বাড়িতে একা রয়েছেন। মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন। তাই এমতাবস্থায় তিনি কথা বলতে চান না। তবে, সিবিআই যে এত সহজে ছেড়ে দেবে, তা হয় না।
গরুপাচার মামলার তদন্তে সিবিআই যে আঁটঘাঁট বেঁধেই নেমেছে, তা বলাই বাহুল্য। সুকন্যার পাশাপাশি, বুধবার পূর্ব পল্লিতে সিবিআই-এর শিবিরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় অনুব্রতর অ্যাকাউন্ট্যান্ট মণীশ কোঠারিকে। প্রায় দেড় ঘণ্টা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সেখানে সিবিআই-এর হাতে বেশ কিছু তথ্য উঠে আসে বলে খবর।
আরও পড়ুন: কয়লা-গরু পাচারে সন্ধান ‘সেটিং গুরু’ দয়িতাপতির, খোঁজ নিচ্ছে ইডি-সিবিআই
সূত্রের খবর, অনুব্রতর বাড়ি থেকে বেরিয়ে সিবিআই দুটি দলে বিভক্ত হয়ে যায়। একটি দল যায় আদালতে। সেখানে সার্চ ওয়ারেন্ট বের করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। অন্য একটি দল সেই সময় পৌঁছয় স্থানীয় ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া শাখায়। সেখানে মণীশ কোঠারিকে জেরা করে পাওয়া তথ্য খতিয়ে দেখেন গোয়েন্দারা। ডিজ্ঞাসাবাদ করা হয় ব্যাংকের আধিকারিকদেরও।
কেন সিবিআইয়ের নজরে সুকন্যা?
সিবিআই সূত্রে দাবি, কয়েক বছর আগে স্কুল শিক্ষিকার চাকরি পাওয়া সুকন্যার আয়ের সঙ্গে তাঁর নামে থাকা সম্পত্তি সঙ্গতিহীন। তদন্তকারী সংস্থার দাবি, সুকন্যার নামে বোলপুরে কেনা হয়েছে জমি, চালকল-সহ একাধিক সম্পত্তি। সূত্রে খবর, অনুব্রত-কন্যার নামে এখনও পর্যন্ত বোলপুরেই দশটি সম্পত্তির খোঁজ মিলেছে। এর প্রায় প্রতিটিই ২০১৪ থেকে ২০১৬-র মধ্যে কেনা হয়েছে।
এ ছাড়াও, সুকন্যার নামে দ্বিতীয় কোম্পানির হদিশ মিলেছে বলে সিবিআই সূত্রে দাবি। নীড় ডেভেলপার প্রাইভেট লিমিটেড নামে ওই রিয়েল এস্টেট কোম্পানি তৈরি হয়েছিল ২০০৬ সালে, যার শেয়ার ক্যাপিটাল ছিল দেড় কোটি টাকা। এএনএম অ্যাগ্রোকেম ফুড প্রাইভেট লিমিটেডের ঠিকানাতেই তৈরি হয় এই রিয়েল এস্টেট কোম্পানি।
আরও পড়ুন: যৌথ ব্যবসার সত্যতা স্বীকার অর্পিতার! জেলে গিয়ে পার্থকে দেড় ঘণ্টা জেরা ইডি-র
আবার বোলপুরের কালিকাপুরের হারাধন মণ্ডল রোডে এই একই ঠিকানায় কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে ভোলে ব্যোম রাইস মিলেরও। অর্থাৎ একই ঠিকানায় রয়েছে তিন-তিনটি কোম্পানি। সিবিআই সূত্রের দাবি, বেনামেও সুকন্যার মালিকানায় কোম্পানিও খোলা হয়েছে, যার শেয়ার ভ্যালু কোটি টাকা। পেশায় স্কুলশিক্ষিকা অনুব্রত-কন্যার নামে এত সম্পত্তি কীভাবে হল, সেটাই জানতে চান সিবিআই আধিকারিকরা।
+ There are no comments
Add yours