মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কেরলের নরবলি কাণ্ড (Human Sacrifice) নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে পুরো দেশ জুড়ে। পুরো দেশবাসীর মধ্যে দিয়ে আতঙ্কের ঝড় বয়ে চলছে। তদন্ত যত এগোচ্ছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত দম্পতি সহ এই ঘটনার মূল ষড়যন্ত্রকারী মহম্মদ শফি ওরফে রশিদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আর এরপরেই গা শিউরে ওঠার মত কিছু তথ্য উঠে এসেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহত রোজলিন ও পদ্মা নামের দুই মহিলাকে শুধুমাত্র খুনই (Human Sacrifice) করা হয়নি। খুন করার আগে তাঁদের ওপর নৃশংসভাবে চালানো হয় যৌন নির্যাতন। পুলিশ জানিয়েছে, রশিদ একজন সাইকোপ্যাথ। বিকৃত যৌনকামের শিকার সে৷ এছাড়াও নিহতের মাংসও যে অভিযুক্ত দম্পতি খেয়েছে, তা আগেই স্বীকার করেছে লায়লা। জানা গিয়েছে, এর আগেও রশিদের বিরুদ্ধে এক ৭৫ বছর বয়সী বৃদ্ধাকেও ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছিল। এখনও সেই মামলা চলছে।
তবে কে এই রশিদ ও এই হত্যাকাণ্ডের (Human Sacrifice) শুরু কোথা থেকে, তা নিয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন উঠতে শুরু হয়েছে। কোচি সিটি পুলিশের কমিশনার নাগারাজু জানিয়েছেন, ‘রশিদ একজন সাইকোপ্যাথ। বিকৃত যৌনকামের শিকার সে৷ আর এর ফলেই খুন করেছে সে।’ জানা গেছে, এর্নাকুলাম জেলার পেরাম্বাভুর এলাকার বাসিন্দা রশিদ। ক্লাস সিক্স পর্যন্ত তার পড়াশোনা। এর পরে কখনও সে গাড়ি চালিয়েছে, কখনও সারাইকর্মী হিসেবে দোকানে কাজ করেছে। কোচিতে একটি হোটেলও চালাচ্ছিল সে। তার স্ত্রী এবং দুই মেয়েও রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ফেক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট আছে রশিদের৷ সে প্রোফাইলের নাম শ্রীদেবী। এরপর ফেসবুকেই ওই দম্পতি ভগবল সিং ও লায়লার সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় ও তাদের জীবনে ধনসম্পত্তি বাড়ানোর লোভ দেখিয়ে নরবলির মত ঘটনায় রাজি করায়।
আরও পড়ুন: ধনী হতে নরবলি দিল কেরলের এক দম্পতি, খেয়েছে তাঁদের মাংসও!
তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, দুই মহিলা রোজলিন এবং পদ্মাকে পর্নোগ্রাফি এবং টাকার লোভ দেখিয়ে তুলে নিয়ে এসেছিল শফি। তারপর সিং দম্পতির বাড়িতে তাঁদের আটকে রাখা হয়। এরপর সেখানেই রোজলিনকে প্রথমে বিছানায় বেঁধে রেখে তাঁর মাথা থেঁতলে দেওয়া হয় ও গোপনাঙ্গে একটি ছুরি ঢুকিয়ে দেওয়া হয় এবং কয়েক মিনিট পরে তাঁর গলা কেটে দিলে সেখানেই মারা যান তিনি। এমনকি তাঁর স্তনও কেটে ফেলা হয় বলে জানা গিয়েছে। অন্যদিকে পদ্মার সঙ্গেও এমনি ঘটনা (Human Sacrifice) ঘটেছে বলে জানা গিয়েছে। তাঁকেও পর্ন ছবিতে অভিনয় করার লোভ দেখিয়ে ১৫০০০টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় ও তাঁর ওপরেও রোজলিনের মত যৌন নির্যাতন করা হয় ও নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এরপর তাঁদের দেহকে ৫৬ টি টুকরো করে মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, গলগল করে রক্ত বেরিয়ে আসছে, এই দৃশ্য দেখেও প্রচণ্ড ‘উত্তেজিত’ ছিল সাইকোপ্যাথ রশিদ।
এখানেই থেমে নয়, তদন্তে আরও চাঞ্চল্যকর খবর উঠে এসেছে। পুলিশ সূত্রের খবর, লায়লা জেরায় জানিয়েছে, রশিদ তার সঙ্গেও যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছিল ব্ল্যাক ম্যাজিকের দোহাই দিয়ে৷ স্বামী ভগবলকে সামনে বেঁধে রাখত সেই সময়ে। ভগবলকে একথা শফি বোঝাতে সক্ষম হয়েছিল যে, লায়লার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করলে তাঁদের ধনী হওয়ার পথ আরও সহজ হবে। এমনটাও জানা গিয়েছে রশিদ এই দম্পতির থেকে তিন লক্ষ টাকাও নিয়েছে। পুলিশ কমিশনার নাগারাজু এও বলেছিলেন যে এটি "নরবলি"-এর একটি মামলা ছিল, তবে এর সঙ্গে ‘ক্যানিব্যালিজম’ জড়িত ছিল কিনা তা এখনও প্রমাণিত হয়নি। ইতিমধ্যেই ডিএনএ পরীক্ষা করা শুরু হয়েছে এবং বৈজ্ঞানিক উপায়ে হত্যার (Human Sacrifice) তদন্ত করার জন্য একটি বিশেষ তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে।
তবে রশিদের বিরুদ্ধে এই ঘটনাই (Human Sacrifice) প্রথম নয়। ২০২০ সালে ৭৫ বছর বয়সি এক বৃদ্ধাকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে৷ সেই মামলা এখনও চলছে৷ অভিযোগ, ওই বৃদ্ধাকে ধর্ষণ করে তাঁর গোপনাঙ্গ ক্ষতবিক্ষত করে দিয়েছিল রশিদ। ২০২১ সাল থেকে সে জামিনে রয়েছে। সেই একইরকম ক্ষত মিলেছে সম্প্রতি নিহত রোজলিন ও পদ্মার দেহেও।
+ There are no comments
Add yours