Jagadhatri Puja: দেবী জগদ্ধাত্রীর পৌরাণিক আখ্যান জানুন

সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী – এই তিন দিন মাতা জগদ্ধাত্রীর আরাধনা করে থাকেন ভক্তরা।
Jagadhatri_Puja
Jagadhatri_Puja

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: উৎসবের মরসুমে দুর্গা পুজো, লক্ষ্মী পুজো, কালী পুজোর পরেই আসে জগদ্ধাত্রী পুজো। মা জগদ্ধাত্রী (Jagadhatri Puja) ত্রিনয়না, চতুর্ভূজা ও সিংহের উপর আসীন। তাঁর হাতে শঙ্খ, চক্র, ধনুক ও বাণ; গলায় নাগযজ্ঞোপবীত। দেবীর গাত্রবর্ণ উদীয়মান সূর্যের মতো। রাজসিক দেবী দুর্গা, তামসিক কালীর পরে সত্ত্ব গুণের দেবী জগদ্ধাত্রীর পুজো হয়। দেবী জগদ্ধাত্রীর পুজো অনুষ্ঠিত হয় দুর্গা পুজোর ঠিক একমাস পর কার্তিক মাসের শুক্লা নবমী তিথিতে। কাত্যায়নীতন্ত্র অনুসারে কার্তিকী শুক্লা নবমীতে দেবী জগদ্ধাত্রীর আবির্ভূত হওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে। দুর্গাকল্প অনুযায়ী,

কার্তিকে শুক্লপক্ষেঽহনি ভৌমবারে জগৎপ্রসূঃ। 
সর্বদেবহিতার্থায় দুর্বৃত্তশমনায় চ।।
আবিরাসীৎ জগচ্ছান্ত্যৈ যুগাদৌ পরমেশ্বরী।।

যার বাংলা অনুবাদ হলো, দেবতাদের হিত, দুর্বত্তের দমন এবং জগতের কল্যাণের  জন্য যুগের প্রারম্ভে কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের মঙ্গলবারে পরমেশ্বরী  অর্থাৎ মাতা জগদ্ধাত্রী আবির্ভূতা হলেন।

আবার শূলপাণি লিখছেন:
কার্তিকোঽমলপক্ষস্য ত্রেতাদৌ নবমেঽহনি।
পূজয়েত্তাং জগদ্ধাত্রীং সিংহপৃষ্ঠে নিষেদূষীম্।।

অর্থাৎ ত্রেতাযুগের প্রারম্ভে কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের নবমী তিথিতে সিংহপৃষ্ঠে আসীন দেবী জগদ্ধাত্রীর পুজো করিবে। 

সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী – এই তিন দিন মাতা জগদ্ধাত্রীর আরাধনা করে থাকেন ভক্তরা। তবে অনেকে নবমীর দিন তিন বার পুজা করে সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী পুজো সম্পন্ন করেন। কোথাও কোথাও প্রথম বা দ্বিতীয় পুজোর পর কুমারী পুজোরও আয়োজন করা হয়। দুর্গা পুজোর মতোই জগদ্ধাত্রী পুজোতেও বিসর্জনকৃত্য বিজয়াকৃত্য নামে পরিচিত। এমনকি পুষ্পাঞ্জলি ও প্রণাম মন্ত্রসহ পুজোর অনেক মন্ত্রও দুর্গা পুজোর অনুরূপ। 

পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী,  একবার দেবতা ও অসুরদের সংগ্রামে দেবগণ অসুরদের পরাস্ত করলেন। কিন্তু তাঁরা বিস্মৃত হলেন যে নিজ শক্তিতে নয়, বরং ব্রহ্মার বলে বলীয়ান হয়েই তাদের এই বিজয়। ফলত তাঁরা হয়ে উঠলেন অহংকার-প্রমত্ত। তখন দেবী লক্ষ্মী এক কুমারী বালিকার রূপ ধারণ করে তাদের সম্মুখে আবির্ভূত হলেন। তিনি একটি তৃণখণ্ড দেবতাদের সামনে রাখলেন। অগ্নি ও বায়ু তাদের সমস্ত শক্তি প্রয়োগ করেও সেই তৃণখণ্ডটিকে দগ্ধ করতে বা উড়িয়ে দিতে পারলেন না। তখন দেবতারা ইন্দ্রকে বালিকার পরিচয় জানবার জন্য পাঠালেন। ইন্দ্র আত্ম অহংকার নিয়ে দেবীর সামনে আসেননি এসেছিলেন জিজ্ঞাসু মন নিয়ে, তাই ব্রহ্মরূপী দেবী মহালক্ষী তার সম্মুখ হতে তিরোহিত হলেন এবং নিমেষ তার সম্মুখের আকাশে দিব্য স্ত্রীমূর্তিতে আবির্ভূত হলেন হৈমবতী রমা। রমা, ব্রহ্মের স্বরূপ ব্যাখ্যা করে ইন্দ্রের জ্ঞানপিপাসা নিবৃত্ত করলেন। এই দেবী পুরাণে মাতা জগদ্ধাত্রী নামে প্রসিদ্ধ। জগদ্ধাত্রী অর্থাৎ জগৎ কে ধারণ যিনি করেন। ভক্তদের বিশ্বাস রয়েছে, মাতা জগদ্ধাত্রী সমগ্র জগতে কল্যাণকারী। তাঁর আরাধনায় ভক্তের জীবনে সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি বিরাজ করে। 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles