GSDP: যেভাবে ঋণ নিচ্ছে রাজ্য, তাতে ভেঙে পড়তে পারে অর্থনৈতিক কাঠামো! আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের

রাজ্য যত টাকা ধার করেছে, তার ৭১.৫৩ শতাংশ খরচ করেছে আগের ধার শোধ করতে।
money
money

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আর্থিক বিপর্যয়ের খাঁড়া অচিরেই কি নেমে আসতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গের ওপর? সরকারি নথি সেই আশঙ্কারই ইঙ্গিত দিচ্ছে। বর্তমানে শাসক দল যেভাবে যথেচ্ছভাবে ঋণ নিতে শুরু করেছে, তাতে অদূর ভবিষ্যতে রাজ্যের সমগ্র অর্থনৈতিক কাঠামো ভেঙে পড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। 

কেন এমন আশঙ্কার সৃষ্টি হচ্ছে?

National Institute of Public Finance and Policy-র পরিচালিত একটি সমীক্ষা বলছে, প্রাক-কোভিড বছরে (২০১৯-২০ অর্থবর্ষ) ১৮টি রাজ্যের সম্মিলিত সরকারি ঋণের পরিমাণ রাজ্যগুলোর মোট জিডিপি বা জিএসডিপি-র (GSDP) ২০.৫৩ শতাংশ ছিল। পরের বছর, অর্থাৎ ২০২০-২১ অর্থবর্ষে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২৩.৫ শতাংশ। তবে, তার পর থেকে ধীরে ধীরে এই ঋণের পরিমাণ কমতে শুরু করে। ২০২০-২১ অর্থবর্ষের সংশোধিত হিসেব অনুযায়ী, এই সম্মিলিত ঋণের পরিমাণের গড় সামান্য বেড়ে ২৩.৬৬ শতাংশ হয়। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে তা আরও সামান্য বেড়ে ২৩.৯৩ শতাংশ হতে পারে।

এ তো গেল সম্মিলিত রাজ্যগুলোর কথা। এবার, এক-একটি রাজ্যের ওপর পৃথকভাবে নজর দিলে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলোর সরকারি ঋণ-সম্পর্কিত বাস্তব পরিস্থিতি স্পষ্ট হবে। ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে পঞ্চদশ অর্থ কমিশন তাদের রিপোর্টে জানিয়েছিল, কীভাবে রাজ্যগুলো ঋণের বোঝায় জর্জরিত। রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রতিটি রাজ্যকে তাদের সরকারি ঋণের পরিমাণ তাদের নিজ নিজ মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের (GSDP) একটি নির্দিষ্ট শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্র।

রাজ্যগুলোকে কী নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্র?

সেই শতাংশের ঊর্ধ্বসীমা কত হবে তাও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছিল। সেই অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবর্ষের জন্য রাজ্যগুলোকে বলা হয়েছিল সরকারি ঋণের পরিমাণ তাদের নিজ নিজ রাজ্য জিডিপি বা জিএসডিপি-র (GSDP) ৩১.১ শতাংশের নীচে বেঁধে রাখতে। একইভাবে, ২০২১-২২ সালের জন্য এই ঊর্ধ্বসীমা ছিল ৩০.৭ শতাংশ। ২০২২-২৩ সালের জন্য তা ছিল ৩১.৩ শতাংশ। বাকি রাজ্যগুলো এই মাপকাঠি অনুযায়ী নিজেদের ঋণের পরিমাণ বেঁধে রাখতে সক্ষম হলেও, ২টি রাজ্যের পরিমাণ এই সীমা অতিক্রম করে। সেই ২ রাজ্য হল — পশ্চিমবঙ্গ ও পাঞ্জাব। 

আরও পড়ুন: গুজরাটে বিজেপির প্রার্থী তালিকায় চমক, কে কে লড়ছেন জানেন?

পশ্চিমবঙ্গের ঋণের হাল-হকিকৎ কেমন?

সরকারি খতিয়ান বলছে, ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে পশ্চিমবঙ্গের ঋণের পরিমাণ ছিল জিএসডিপি’র (GSDP) ৩৫.৬৮ শতাংশ। ২০২০-২১ অর্থবর্ষে তা দাঁড়িয়েছে ৩৭.০৫ শতাংশে। অনুমান, ২০২৬-'২৭ অর্থবর্ষের মধ্যে এই দুটি রাজ্যের ঋণ এবং জিএসডিপি-র অনুপাত প্রায় ৪০ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছে যেতে পারে বলে ধারণা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের। যা আর্থিকভাবে আরও পঙ্গু করে তুলবে ভারতের এই রাজ্যকে। 

রাজ্যের অর্থ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকার ২০,৫০০ কোটি টাকা বাজার থেকে ধার করতে চলেছে। এরমধ্যে, অক্টোবরে ৪৫০০ কোটি, নভেম্বরে ৭০০০ কোটি এবং ডিসেম্বরে ৯০০০ কোটি। চলতি বছরে রাজ্য ঋণ নিচ্ছে ৭৩,২৮৬ কোটি। মোট ঋণ হবে ৫ লক্ষ ৮৬ হাজারের বেশি কোটি টাকা। দেখা গিয়েছে, রাজ্য যত টাকা ধার করেছে, তার ৭১.৫৩ শতাংশ খরচ করেছে আগের ধার শোধ করতে।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles