মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: চাকরি চেয়ে পুলিশের কামড় খাওয়া চাকরিপ্রার্থী অরুণিমা পাল সহ সব আন্দোলনকারী টেট চাকরিপ্রার্থী গতকাল অবশেষে জামিন পেল (TET Agitation)। পুলিশের এমন আচরণে সারা রাজ্যবাসী স্তম্ভিত। এমন নৃশংসতার খবর ছড়িয়ে পড়তেই রাজ্য পুলিশকে ধিক্কার না করেও কেউ ছাড়েনি। কোনও অপরাধ না করেই এক রাত জেলে কাটিয়ে অবশেষে আন্দোলনকারীরা জামিন পেলে বাকি আন্দোলনকারী চাকরীপ্রার্থীরা উচ্ছাসে ফেটে পড়েন। চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে কেউ কেউ বলে ওঠেন, 'মজবুত হলাম। মানসিকভাবে আমরা তৈরি হয়েছি। আরও আমরা গর্জে উঠে সাহস এবং সুযোগ পেলাম।'
কী ঘটেছিল?
গত বুধবার এক্সাইড মোড়ে চাকরির জন্য আন্দোলনে নামেন ২০১৪-এর টেটে উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীরা (TET Agitation)। আর তখই তাঁদের সেখান থেকে সরাতে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। আন্দোলনকারীদের টেনে-হিঁচড়ে, চ্যাংদোলা করে প্রিজন ভ্যানে তোলা হচ্ছিল। অনেকে আবার প্রিজন ভ্যানের নীচে শুয়েও বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল। আবার পুলিশের বিরুদ্ধে কয়েকজন আন্দোলনকারীর মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছিল। এরই মধ্যে অভিযোগ ওঠে, যে এক মহিলা পুলিশকর্মী অরুণিমার হতে কামড়ে দেয়।
চাকরিপ্রার্থীকে কামড়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে (TET Agitation)। কিন্তু উল্টে সেই চাকরিপ্রার্থীকেই গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তবে শুধুমাত্র গ্রেফতারি নয়, টেট বিক্ষোভে আক্রান্ত অরুণিমা পাল-সহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলাও রুজু করা হয়েছিল। এরপর গতকাল ধৃতদের পেশ করা হয় ব্যাঙ্কশাল আদালতে। তারপর দুপক্ষের সওয়াল-জবাবের পর ওই ৩০ জন আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীদের জামিন দেয় আদালত।
আরও পড়ুন: টেট বিক্ষোভকারীর হাতে কামড় পুলিশের! জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতার আক্রান্তই
আন্দোলনকারীদের প্রতিক্রিয়া
বৃহস্পতিবার রাতে জামিনের পরেই উঠল স্লোগান (TET Agitation)। 'লড়াই চলছে, চলবে।' এক আন্দোলনকারী বললেন, 'সরকার তো মুখ থুবড়েছে। ওদের কোনও লজ্জা নেই। আমরা অপরাধী নই। আমাদের পাঁচটা জামিন অযোগ্য ধারা দিয়ে ধরতে চেয়েছিল।' আরও এক এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, ১৪ সাল থেকে বঞ্চিত হয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন তাঁরা। আর তাঁদেরকেই আসামী বানানো হচ্ছে। তাঁরা কী অন্যায় করেছিল? তাঁদের যে ধারা দেওয়া হয়েছিল, জামিন অযোগ্য ধারা, কেন কী অন্যায় করেছিল? জামিন অযোগ্য ধারা দিতে হয়েছিল?’
অরুণিমা কী বললেন?
অরুণিমা বলেন, জামিনে মুক্তি পেয়ে অত্যন্ত খুশি তাঁরা (TET Agitation)। তবে থানায় থাকার সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা এখনও ভুলতে পারছেন না তাঁরা। মুক্তি পেয়ে অরুণিমা বলেন, ‘এটা সার্বিক জয়। আমরা ক্রিমিনাল নই। সেটা প্রমাণ হল। এতদিনে কোর্টের বিচারে তো প্রমাণ হয়েই গিয়েছে আমাদের চাকরি চুরি গিয়েছে।’ তিনি আরও জানিয়েছেন, হাতে যেখানে কামড় দিয়েছে সেখানে ব্যথা রয়েছে। চিকিৎসা করাতে হবে। অঝোর ধারায় রক্ত ঝড়ছিল।
পুলিশের আচরণে উঠছে প্রশ্ন
আবার এরই মধ্যে এক ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে, যেখানে পুলিশকে বলতে শোনা যাচ্ছে, মৃত্যু হলে তার দায় নেবে পুলিশ। একেতেই এরূপ আচরণে হতবাক বঙ্গবাসী। তারপর আবার এই কথা, সবমিলিয়ে রাজ্যে পুলিশের কাজ নিয়ে আগেই প্রশ্ন উঠতে শুরু হয়েছে। এরপর আন্দোলনকারীকে কামড়ে দেওয়ার অভিযোগের ফলে ফের প্রশ্ন উঠছে যে, পুলিশের এমন আচরণের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হবে, নাকি সেই পুলিশকে আড়াল করার চেষ্টা করা হচ্ছে (TET Agitation)?
+ There are no comments
Add yours