মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রাজ্যে অ্যাডিনো ভাইরাসের দাপট ক্রমশ বেড়েই চলেছে। শিশুমৃত্যুও অব্যাহত। এই পরিস্থিতিতে এবার শিশু মৃত্যুর কারণ খুঁজতে 'ডেথ অডিট' করার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। সূত্রের খবর, বেসরকারি মতে, চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত ১৪৮ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সরকারি মতে ১৯ জনের মৃত্যু, আর ১২ হাজার ৩৪৩ জন হাসপাতালে ভর্তি। এই ১৯ জনের মধ্যেই ১৩ জনেরই কোমর্বিডিটি ছিল।
শিশুমৃত্যুর সংখ্যা
শিশুদের শ্বাসনালীতে সংক্রমণ (অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন বা এআরআই) চিন্তা বাড়াচ্ছে চিকিৎসকদের। গত সপ্তাহে শ্বাসনালীর সংক্রমণ নিয়ে প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় ৮০০ শিশুকে। যদিও চলতি সপ্তাহে সেই সংখ্যা কমেছে। এখন রোজ হাসপাতালে শ্বাসনালীর সংক্রমণ নিয়ে ভর্তি করানো হচ্ছে ৬০০ জনকে। পরিসংখ্যান বলছে, অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত ১৯ জনের মধ্যে ১৩ জনই অন্য অসুখে আক্রান্ত ছিল। জন্মের সময় ওজন কম ছিল ৩ জনের। ২ জনের ফুসফুসে সমস্যা ছিল সংক্রমণের আগে থেকেই। মৃতদের মধ্যে ৩ জনের হার্টের সমস্যা ছিল। জিনগত সমস্যা ছিল ২টি শিশুর। ২ জনের পেশির সমস্যা এবং ১টি শিশুর অন্য জটিল সমস্যা ছিল।
ডেথ অডিট
রাজ্যের এই পরিস্থিততে রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, করোনার মতই শিশু মৃত্যুর দৈনিক বুলেটিন প্রকাশ করবে স্বাস্থ্যভবন। বেসরকারি হাসপাতালের জন্যেও প্রোটোকল তৈরির সিদ্ধান্ত সরকারের। অ্যাডিনো ভাইরাস টেস্টের খরচও কম করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। অ্যাডিনো সংক্রমণ, অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইলনেসের ক্ষেত্রেও করা হবে ডেথ অডিট। সোমবার ভার্চুয়াল বৈঠকে এমনই সিদ্ধান্ত নিল ৮ সদস্যর টাস্ক ফোর্স। বেসরকারি হাসপাতালের ক্ষেত্রে প্রোটোকল তৈরি করবে রাজ্য সরকার। আজই বেসরকারি হাসপাতালগুলির সঙ্গে বৈঠক করবে সরকার।
টাস্ক ফোর্স
এআরআই মোকাবিলায় টাস্ক ফোর্স গঠন করেছে রাজ্য সরকার। সেই টাস্ক ফোর্সের মাথায় রয়েছেন মুখ্যসচিব। বিশেষজ্ঞদের নিয়ে তৈরি ওই টাস্ক ফোর্স প্রতিদিন পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে। ১৩ মার্চ প্রথম বার বৈঠকে বসেছিল টাস্ক ফোর্স। সেখানে প্রয়োজনীয় কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। পদক্ষেপগুলো কী কী দেখে নিন-
১) বেসরকারি হাসপাতালের কর্মী এবং চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হবে।
২) এআরআই নিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার কাজে সাহায্য করবে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ) এবং ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব পেডিয়াট্রিশিয়ানস (আইএপি)।
৩) সাধারণ মানুষকে সচেতন এবং শিশুদের প্রাথমিক পরীক্ষার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের।
৪) সরকারি পোর্টাল এবং সমাজমাধ্যমের দ্বারাও সাধারণ মানুষকে এআরআই নিয়ে সচেতন করা হবে।
৫) বাড়ি বাড়ি গিয়ে অসুস্থ শিশুদের খোঁজ নেবেন আশাকর্মীরা, যাতে প্রাথমিক স্তরেই সংক্রমণ নির্ণয় করা যায়।
৬) হাসপাতালে সঠিক পদ্ধতিতে চিকিৎসা চলছে কি না, তা পর্যবেক্ষণ দেখবেন সিনিয়র চিকিৎসকেরা।
৭) বেসরকারি হাসপাতালেও নজর দেওয়া হবে। নিয়ম মেনে সেখানে চিকিৎসা হচ্ছে কি না, তা-ও দেখা হবে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours