মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সেই দুর্নীতি, সেই স্বজনপোষণের অভিযোগ। এবার বিতর্কে মুখ্যমন্ত্রীর সাধের ত্রিফলা। অকেজো হয়ে পড়া ত্রিফলার নিলাম ঘিরেই শুরু হয়েছে জলঘোলা। লোকদেখানো নিলাম ডেকে বিদ্যুৎ বিভাগের দায়িত্বে থাকা কাউন্সিলারের ছেলেকে অকেজো ত্রিফলা পাইয়ে দেওয়া হয়েছে, এই অভিযোগ ঘিরে উত্তপ্ত পুরুলিয়া পুরসভা। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, শাসকদলেরই একাধিক কাউন্সিলার এনিয়ে সরব হয়েছেন। যদিও পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, আইন মেনেই নিলাম হয়েছে। কাউকে পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। প্রসঙ্গত, অকেজো ত্রিফলা বাতিস্তম্ভের কেটে ফেলা অংশ নিলাম করা নিয়েই ঘটনার সূত্রপাত। গত শনিবার ওই ত্রিফলা বাতিস্তম্ভগুলির নিলাম হয়। নিলামে এই সমস্ত সামগ্রী পান বিদ্যুৎ বিভাগের দায়িত্বে থাকা তৃণমূল (TMC) কাউন্সিলার আনোয়ারি বিবির ছেলে শেখ সাহিদ।
দলের বিরুদ্ধেই অভিযোগ, কী বলছে তৃণমূল ?
পুরুলিয়া পুরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল (TMC) কাউন্সিলার রবিশঙ্কর দাস বলেন, ওই ত্রিফলা মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প। ত্রিফলা আলো কেটে দেওয়ার সময়ই আপত্তি করেছিলাম। কারণ কিছু ত্রিফলা খারাপ হয়ে থাকলে তা সারানো যেত। তিনি আরও বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগের দায়িত্বে থাকা চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল ও ২২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলার আনোয়ারি বিবির ছেলেই নিলামে ওই ত্রিফলা বাতিস্তম্ভগুলি পেয়েছে। আর এর ফলেই উঠেছে প্রশ্ন। কাউন্সিলারের ছেলেকে এই নিলাম পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অনেকেই অভিযোগে সরব হয়েছেন।
এ বিষয়ে ২০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলার সমীরণ রায় বলেন, নিলাম নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই, প্রশ্ন উঠেছে আমাদের দলেরই কাউন্সিলার তথা বিদ্যুৎ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্তের ছেলেই নিলামে সব জিনিস পাচ্ছেন বলে। এই কারণেই সবাই দল এবং পুরসভার বিরুদ্ধে আঙুল তুলছেন। ৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলার সুনয় কবিরাজ বলেন, নিলাম হয়তো নিয়ম মেনে হয়েছে। কিন্তু বাইরে কে কী সেটিং করেছে, সেটা বলা সম্ভব নয়। কিন্তু আমি থাকলে নৈতিকভাবে এরকম নিলামে অংশগ্রহণ করতাম না।
কী বলছেন পুরুলিয়া পুরসভার বিরোধী দলনেতা ?
অন্যদিকে পুরুলিয়া পুরসভার বিরোধী দলনেতা প্রদীপ মুখার্জি বলেন, কাউন্সিলারের ছেলে ছাড়া আর কি কোনও ব্যবসায়ী নেই শহরে? গোটা নিলাম প্রক্রিয়া প্রশ্নের মুখে পড়ছে। একই সুর বিজেপি বিধায়ক সুদীপ মুখার্জির গলাতেও। এবিষয়ে পুরুলিয়া পুরসভার বিদ্যুৎ বিভাগের চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল ও তৃণমূল (TMC) কাউন্সিলর আনোয়ারি বিবির কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর ছেলে ও বরাত পাওয়া ঠিকাদার শেখ সাহিদের ভাই সেখ সাব্বির বলেন, সমস্ত আইন মেনেই ভাই নিলামে অংশগ্রহণ করে সবচেয়ে বেশি দাম দিয়ে ওই সামগ্রী পেয়েছে। কাউন্সিলারের ছেলে বলে নিলামে অংশ নিতে পারবে না, এমন কোনও আইন নেই। মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।
অভিযোগ সঠিক নয়, দাবি করে কী যুক্তি দিলেন পুরপ্রধান ?
পুরপ্রধান নবেন্দু মাহালি বলেন, বিরোধীদের অভিযোগ সঠিক নয়। সমস্ত আইন মেনেই নিলাম করা হয়েছে। নিলামে পাঁচজন অংশগ্রহণ করেছিলেন। প্রত্যেককে নিলামের আগে ৩ লক্ষ টাকা জমাও করতে হয়েছিল। ওপেন নিলামে যে কেউ অংশ নিতেই পারেন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours