মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: নববর্ষের দিন সকালেই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এবার সিবিআই (CBI) স্ক্যানারে তৃণমূলের নলহাটির ২ নম্বর ব্লকের প্রাক্তন সভাপতি বিভাস অধিকারী। মূলত প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তল্লাশি চালাচ্ছে সিবিআই। শনিবার সকাল থেকে তাঁর নলহাটির কৃষ্ণপুরের বাড়ি এবং কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিটের ফ্ল্যাটে সিবিআই (CBI) আধিকারিকরা হানা দেন। আর একদল হানা দিয়েছে বিভাসের আশ্রমেও। সার্চ ওয়ারেন্ট নিয়ে বিভাসের আশ্রমেও যায় সিবিআই। দফায় দফায় জেরা করা হচ্ছে বিভাসকেও। বিভাসের আমহার্স্ট স্ট্রিটের ফ্ল্যাট সিল করে দেয় সিবিআই। কলকাতার ফ্ল্যাটেই বিভাসের বেঙ্গল টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের সিটি অফিস ছিল। এই ফ্ল্যাটে নীল বাতি লাগানো গাড়িতে চড়ে মাঝেমধ্যে তিনি আসতেন। এদিন কলকাতার ফ্ল্যাটের চাবি না পেয়ে সিল করে দেন সিবিআই (CBI) আধিকারিকরা।
কে এই বিভাস অধিকারী?
বরাবরই বীরভূমের নলহাটির বাসিন্দা বিভাস অধিকারী। স্ত্রী, সন্তান নিয়ে গ্রামের বাড়িতে থাকতেন তিনি। গ্রামে তাঁর পেল্লাই বাড়ি রয়েছে। তাঁর তিনটে পরিচয় রয়েছে। প্রথমত, অত্যন্ত ধার্মিক হিসেবেই এলাকায় পরিচিত বিভাস। নিজের হাতে তিনি একটি আশ্রম তৈরি করেছেন। পাশাপাশি রাজনীতিতেও সক্রিয় তিনি। নলহাটি ২ নম্বর ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি ছিলেন। এখন তিনি ওই পদে নেই। তবে, শাসক দলের সঙ্গে তাঁর যোগ রয়েছে। যদিও বিভাসের দাবি, শারীরিক অসুস্থতার কারণে সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নই। তবে, শুধু যে ধর্ম ও রাজনীতি নিয়ে বিভাস মেতে থাকতেন, তেমনটা নয়। আশ্রমের পাশাপাশি একটি বিএড কলেজ তৈরি করেছিলেন তিনি। বহু পড়ুয়া প্রচুর অর্থের বিনিময়ে সেখানে ভরতি হতেন। কারণ, হিসেবে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা যাচ্ছে, ওই কলেজ থেকে পাশ করতে পারলে চাকরি নাকি নিশ্চিত ছিল। সেই কারণে রাতারাতি বাড়ছিল পড়ুয়ার সংখ্যা। শোনা যায়, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ ছিল বিভাস অধিকারীর। বীরভূম জেলায় দলের অনেকেই সে কথা জানতেন। এমনকী মানিক ভট্টাচার্যেরও ঘনিষ্ঠ ছিলেন তিনি। শুধু তিনি নন, একাধিক দাপুটে নেতার আনাগোনা ছিল বিভাসের কলেজে। মাস চারেক আগে সিউড়ির হরিপুরের কাছে একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও ক্যানসার রিসার্চ সেন্টার খোলার সিদ্ধান্তও নিয়েছিলেন বিভাস। মোটের উপর অত্যন্ত প্রভাবশালী হিসেবেই পরিচিত ছিলেন তিনি। স্থানীয়দের কথায়, ধর্মকে হাতিয়ার করেই দুর্নীতি চালিয়ে গিয়েছেন তিনি। যদিও এই অভিযোগ মানতে নারাজ বিভাস। এর আগে ইডি-র জেরার মুখে পড়েছিলেন বিভাস। আর নববর্ষের সকালের সিবিআই (CBI) হানা দিল তাঁর ডেরায়। সিবিআই তল্লাশিতে নতুন কোনও তথ্য সামনে আসে কিনা, সেটাই এখন দেখার।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours