Manipur Violence: ইম্ফল, চূড়াচাঁদপুর যেন যুদ্ধক্ষেত্র! নিহত সিআরপিএফ জওয়ান, আয়কর আধিকারিক

শুক্রবার মণিপুরে ৩৫৫ ধারা জারি করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং নিরাপত্তার দায়িত্ব নিজেদের হাতে তুলে নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার
Manipur-Violence-Main
Manipur-Violence-Main

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মেইতেই জনগোষ্ঠীর তফশিলি উপজাতি পরিচয়ের দাবিতে অশান্তির আগুনে জ্বলছে মণিপুর (Manipur Violence)। ৩৫৫ ধারা জারি করে, সেনা মোতায়েন করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। চলতি সপ্তাহের গোড়ায় শুরু হয়েছিল আন্দোলন। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই কার্যত যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে মণিপুর। শুক্রবার গভীর রাতে চূড়াচাঁদপুরে গুলি করে খুন করা হয়েছে বাড়িতে ছুটি কাটাতে আসা এক সিআরপিএফ কোবরা কমান্ডোকে। রাজধানী ইম্ফলে হিংসার বলি ইন্ডিয়ান রেভিনিউ সার্ভিসের এক আয়কর আধিকারিকও।

হিংসায় অন্তত ১৫ জনের মৃত্যু

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সেনা নামার পরে মুহুর্মুহু গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। মনে হচ্ছে ইম্ফল, চূড়াচাঁদপুর যেন যুদ্ধক্ষেত্র। অসমর্থিত সূত্রে পাওয়া খবরে জানা গিয়েছে, চলতি হিংসায় অন্তত ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত বুধবার মেইতেই সম্প্রদায়কে তফশিলি জাতিভুক্ত করার প্রতিবাদ জানিয়ে মণিপুরের জনজাতি ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে মিছিল বের করা হয়। ওই মিছিল ঘিরে শুরু হয় হিংসা। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে হিংসা ছড়িয়ে পড়েছে। 

মণিপুরে ৩৫৫ ধারা

পরিস্থিতি সামলাতে শুক্রবার মণিপুরে ৩৫৫ ধারা জারি করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং নিরাপত্তার দায়িত্ব নিজেদের হাতে তুলে নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। তার পরেই চূড়াচাঁদপুরে গুলি করে খুন করা হয়েছে বাড়িতে ছুটি কাটাতে আসা সিআরপিএফের কোবরা বাহিনীর এক কমান্ডোকে। নিহতের নাম ছোনখেলেন হাওকিপ। পাশাপাশি রাজধানী ইম্ফলে লেটমিনথাং হাওকিপ নামে এক আয়কর আধিকারিককে বাড়ি থেকে টেনে বের করে এনে খুন করার অভিযোগ উঠেছে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে। ঘটনার নিন্দায় সরব হয়েছে ইন্ডিয়ান রেভিনিউ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। বিক্ষোভকারীদের থামাতে সেনা মোতায়েনের পাশাপাশি দেখামাত্র গুলির নির্দেশ জারি করা হয়েছে।

সেনার সক্রিয়তা

ইতিমধ্যেই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি থেকে ১৩ হাজার সাধারণ নাগরিককে উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী। তাঁরা মণিপুরে যাওয়ার জন্য সি ১৭ গ্লোবমাস্টার এবং এন ৩২ বিমান ব্যবহার করেন। ভারতীয় সেনাবাহিনী শুক্রবার একটি বিবৃতি জারি করে বলেছে যে, তাঁরা প্রায় ১৩ হাজার সাধারণ নাগরিকদের উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছেন। উদ্ধার করা বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপদ আশ্রয়ে রাখা হয়েছে। এখনও অবধি র‍্যাফ, সিআরপিএফ, বিএসএফ-সহ আধাসামরিক বাহিনীর ১৪টি কোম্পানি মোতায়েন করা হয়েছে। আরও বাহিনী রাজ্যে মোতায়েন করার ব্যবস্থা হচ্ছে। গত ৩ মে অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুরের একটি সমাবেশ হিংসাত্মক হয়ে ওঠে। রাজ্যে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। চূড়াচাঁদপুরের তোরবুং এলাকায় ৬০ হাজারের বেশি লোক সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন। তখনই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

আরও পড়ুন: ‘‘জেগে উঠুন, কফির ঘ্রাণ নিন, ৩৭০ ধারা ইতিহাস’’! বিলাওয়ালকে জয়শঙ্কর

মণিপুরের বৃহত্তম জনগোষ্ঠী মেইতেইরা। মূলত সমতল এলাকার বাসিন্দা এরা। অন্য দিকে, কুকি, অঙ্গামি, লুসাই, নাগা, থাড়োয়াসের মতো প্রায় ৩০টি জনজাতি গোষ্ঠীর বাস পাহাড়ি এলাকায়। তাদের আশঙ্কা, জনজাতির মর্যাদা পেলেই পাহাড়ি এলাকার জমিতে হাত বাড়াবে। এখন জনজাতির মর্যাদা না পাওয়ায় তারা ওই জমি কিনতে পারে না। অন্য দিকে, মেইতেইদের দাবি, ১৯৪৯ সালে ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মণিপুর সংযুক্ত হওয়ার আগে তাঁরা জনজাতি হিসাবে গণ্য হতেন। কিন্তু সংযুক্তিকরণের পর সেই পরিচয় হারান তাঁরা। ফলে জনজাতি জমির অধিকার, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সাংবিধানিক রক্ষাকবচও হারিয়েছেন। 

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles