মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: যে গান গাওয়ার জন্য সাজা পেতে হত ব্রিটিশ জমানায়, যে গান গাইলে আজও গরম রক্তের স্রোত ছুটতে থাকে ধমনী বেয়ে, সেই গানকেই বিনির্মাণ করতে গিয়ে বারোটা বাজিয়ে দিয়েছেন সুরকার এআর রহমান। এমনই অভিমত শিল্পীদের বৃহত্তর অংশের। ব্রিটিশ আমলে ‘কারার ওই লৌহ কপাট’ ((Karar Oi Louho Kopat)।) গানটি রচনা করেছিলেন কাজী নজরুল ইসলাম। ব্রিটিশ জমানায় গানটি গাওয়ার অনুমতি না থাকলেও, স্বাধীনতা-উত্তর কালে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায় গানটি।
ক্ষোভ কবি পরিবারেরও
সম্প্রতি একটি সিনেমায় সেই গানটির সুরই বিকৃত করা হয়েছে বলে অভিযোগ। যার সমালোচনায় মুখর শিল্পীদের পাশাপাশি কবি পরিবারও। নজরুলের নাতি অনির্বাণ কাজী বলেন, “যে সৎ বিশ্বাসে গানটি ব্যবহার করার লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল, তার মর্যাদা রাখা হয়নি। আমরা বুঝতে পারিনি যে রহমানের মতো একজন শিল্পী এতটা অসংবেদনশীল হতে পারেন এবং এভাবে গানটিকে হত্যা করতে পারেন। প্রতিবাদ হিসেবে, আমি চলচ্চিত্রের ক্রেডিট লাইনে বিশেষ ধন্যবাদে আমাদের পরিবারের নাম চাই না।”
গানটি বিকৃত করার অধিকার কে দিল
কবির নাতি বলেন, “মা গানটি ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিলেন সুর ও কথা না বদলে রিক্রিয়েট করার জন্য। কিন্তু সেই সময় ওদের তরফে বলা হয়েছিল, গানটা ওরা নিজেদের মতো করে ব্যবহার করতে চায়। মা ওদের বলেছিল, গানটি তৈরি হয়ে গেলে একবার শোনাতেও। ২০২১ সালে মা অনুমতি দেন। কিন্তু ওরা কিছুই শোনায়নি। এরপর মা-ও মারা যান।” অনির্বাণ বলেন, “রহমানকে শ্রদ্ধা জানিয়েই জানতে চাই, ওঁকে কে অধিকার দিল গানটি বিকৃত করার। স্বত্ব দেওয়ার সময় তো সুর বদলের কথা বলা হয়নি। একটা গ্রামীণ সঙ্গীতের মতো ভাটিয়ালির মতো করে দিয়েছে। অনেক সস্তা করে দিয়েছে।”
আরও পড়ুুন: মমতা সরকারের সঙ্গে সংঘাত? ইস্তফা রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলের
কবির নাতনি মিষ্টি কাজী বলেন, “এই গান শুনে মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করেছেন, সারা বিশ্বে এই গান কারাগারের গান হিসেবে চিহ্নিত হয়। একজন সম্মানীয় সুরকার হিসেবে এ আর রহমান কীভাবে পারলেন আমার দাদার গান নিয়ে এভাবে নিজের মতো সুর করে প্রচার করতে।” প্রসঙ্গত, ১৯২২ সালের ২০ জুন গানটি (Karar Oi Louho Kopat) লিখেছিলেন কবি। রেকর্ড করা হয়েছিল ১৯৪৯ সালের জুন মাসে। গেয়েছিলেন গিরিন চক্রবর্তী।
‘কারার ওই লৌহ কপাটে’র মতো জনপ্রিয় গানটি বিনির্মাণ করায় ক্ষোভে ফুঁসছে নেট-নাগরিকরাও। নজরুল ভক্তদের মতে, গানের মূল ভাবকেই বিকৃত করে ফেলেছেন রহমান। গানটিকে না বুঝেই সেটির নয়া সংস্করণ তৈরি করে ফেলেছেন সঙ্গীত পরিচালক। পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী বলেন, “গানটা (Karar Oi Louho Kopat)। নিয়ে যা খুশি করা হবে? মামলা হওয়া উচিত! লিখিতভাবে প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানানো উচিত।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের , Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours