মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারত ও বাংলাদেশ সীমান্তের অদূরে মায়ানমারের গুরুত্বপূর্ণ নদীবন্দর পালেতাওয়ার দখল করল সেখানকার বিদ্রোহীরা। রাখাইন প্রদেশের অন্তর্গত কালাদান নদীর তীরবর্তী ওই শহর দখল করেছে মায়ানমারের শক্তিধর সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। ওই বন্দরের সাহায্যে ভারত ও বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য চালাত মায়ানমার। এই বন্দর বিদ্রোহীদের হাতে গেলে মানানমারের সামরিক জুন্টা সরকার আর্থিক ও বাণিজ্যিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে অনুমান কূটনীতিকদের। একই সঙ্গে এর ফলে নতুন করে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে শরণার্থীদের অনুপ্রবেশের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মায়ানমারে বিদ্রোহ
মায়ানমারের পশ্চিমাংশের রাখাইন প্রদেশ থেকে সশস্ত্র কার্যকলাপ পরিচালনা করে ‘আরাকান আর্মি’। মায়ানমারের তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠী— ‘তাঙ ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি’ (টিএনএলএ), ‘আরাকান আর্মি’ (এএ) এবং ‘মায়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি’ (এমএনডিএএ)-র জোট ‘ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্স’ নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে সে দেশের সামরিক জুন্টা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছে। বিদ্রোহীদের হামলার জেরে ইতিমধ্যেই সে দেশের অর্ধেক এলাকা সরকারি সেনার হাতছাড়া হয়েছে। বিদ্রোহী সংগঠন আরাকান আর্মির পক্ষ থেকে সোমবার জানানো হয়েছে, সীমান্তে স্থিতিশীলতা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও তাঁরা প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতার চেষ্টা চালিয়ে চালাবেন।’ সংগঠনের মুখপাত্র খিন থু খা এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘‘পালেতাওয়ার প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব নেব আমরা।’’
আরও পড়ুন: পাঞ্জাব সীমান্তে নজরদারি বাড়াতে সেনার হাতে আসছে দেশীয় ড্রোন ‘দৃষ্টি-১০’
আরাকান আর্মির দাবি
বিষয়টি নিয়ে আপাতত মায়ানমার সরকারের তরফে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। বিশ্বস্ত সূত্রে খবর, পালেতাওয়ার অঞ্চলে গত সপ্তাহে মায়ানমারের সামরিক বাহিনী এবং আরাকান আর্মির মধ্যে তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। তবে অধিকাংশ মানুষই চলতি মাসের গোড়ার দিকে পালেতাওয়া ছেড়ে চলে গিয়েছেন। স্থানীয় গ্রামে আশ্রয় নিয়েছেন। কয়েকজন বাসিন্দাই শুধুমাত্র পালেতাওয়ায় থেকে গিয়েছেন। যেখানে ইন্টারনেট এবং মোবাইল সংযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। মায়ানমারে গৃহযুদ্ধের জেরে ঘরছাড়া হয়েছেন লক্ষাধিক মানুষ , যার মধ্যে কয়েক হাজার আশ্রয় নিয়েছেন উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্য মিজেরামে। উল্লেখ্য, মায়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করতে ২০১৫ সালে ওই পালেতাওয়া অঞ্চলে প্রথমবার পা রেখেছিল আরাকান আর্মি। যে অঞ্চলের অধিকাংশ বাসিন্দা আদতে চিন গোষ্ঠীর। যত দ্রুত সম্ভব পালেতাওয়া অঞ্চলে সুরক্ষা এবং আইনের শাসন কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছেন আরাকান আর্মির এক মুখপাত্র।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours