Kamal Haasan: চোল রাজত্বকালে হিন্দু ধর্মের অস্তিত্ব ছিল না, দাবি অভিনেতা কমল হাসানের

চোল সাম্রাজ্যের প্রথম রাজা প্রথম রাজ রাজ চোল হিন্দু রাজা ছিলেন না,ওই সময় ছিল বৈনাবরণ, শিভম এবং সামানাম...
1665043384_kamal-1
1665043384_kamal-1

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ফের জাতীয় পুরস্কার জয়ী দক্ষিনী অভিনেতা কমল হাসানের মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক। দক্ষিণ ভারতের চোল রাজাদের আমলে হিন্দু ধর্মের অস্তিত্ব ছিল না বলে বিস্ফোরক দাবি করেন কমল হাসান। মণি রত্নমের (Mani Ratnam) ‘পোন্নিয়িন সেল্ভান ১’(Ponniyin Selvan) মুক্তি পেয়েছে সেপ্টেম্বর মাসে। ঐশ্বর্যা রাই ও বিক্রম অভিনীত সে ছবি দর্শকের মন কাড়লেও ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ তুলেছে দক্ষিনপন্থীরা। তামিল পরিচালক ভেত্রিমারানের দাবি, চোল সাম্রাজ্যের প্রথম রাজা প্রথম রাজ রাজ চোল হিন্দু রাজা ছিলেন না।ওই সময় ছিল বৈনাবরণ, শিভম এবং সামানাম। কিন্তু ব্রিটিশরা অজ্ঞতার কারণে হিন্দু প্রতিশব্দটি নিয়ে আসেন।খ্রিস্টীয় ৮ শতকের এক জন শাসককে হিন্দু বলা আদৌ যুক্তিযুক্ত কি না, প্রশ্ন তুলেছেন ভেত্রিমারান। এই বক্তব্য ঘিরেই শুরু হয় নয়া বিতর্ক। তামিল পরিচালক ভেত্রিমারানের (Vetrimaaran) যুক্তির সমর্থনে বলতে গিয়ে এই কথা বলেন কমল হাসান।

[tw]

[/tw]

পোন্নিয়িন সেল্ভান ১ সিনেমাটির মূল গল্পটি আবর্তিত হয়েছে  চোল সাম্রাজ্য (Chola Empire) এবং সিংহাসন দখল ঘিরে। রাষ্ট্রকূটদের উপর চোল যুবরাজ আদিত্য কারিকলনের আক্রমণ দিয়ে গল্পের সূত্রপাত। যুদ্ধ শেষে যুবরাজ আদিত্য (বিক্রম) নিজের অন্যতম বিশ্বস্ত সেনাপতি ভান্থিয়াথেবন (কার্থি)-কে গুপ্তচর হিসাবে পাঠিয়ে দেন, চোল রাজ্যের উপর কাদের কুনজর রয়েছে তা খুঁজে বার করতে। সেখান থেকেই আস্তে আস্তে খুলতে থাকে ছবির জট। গল্পের মাঝে আসেন যুবরাজ আদিত্যের ভাই যুবরাজ পনিয়ন সেলভান (জয়ম রবি)। গল্প যত গড়ায় ততই বোঝা যায়, বাইরের শত্রুর থেকে ভিতরের শত্রুর সংখ্যা বেশি। চোল বংশ ছাড়া আরও কিছু দক্ষিণ ভারতীয় রাজবংশের উল্লেখ রয়েছে এই ছবিতে। তাদের অধিকাংশই চোলদের শত্রু। তবে চোলদের সব সময়েই হিন্দু শাসক হিসাবে পরিচয় দেওয়া হয়েছে এ ছবিতে।

এই ছবি দেখার পর জাতীয় পুরস্কার জয়ী তামিল পরিচালক ভেত্রিমারান আরও বলেন, ক্রমাগত আমাদের প্রতীকগুলি ছিনিয়ে নেওয়া হচ্ছে।ইতিমধ্যেই তিরুভালুভারে গৈরিকীকরণের চেষ্টা চালিয়েছে তাঁরা। এটা কখনই বরদাস্ত করা যায় না। সিনেমা এমন এক মাধ্যম যা সকলের কাছে তথ্য পৌঁছে দেয়। ঠিক হলে ঠিক, ভুল হলে ভুল। আর রাজনীতির কাজ কিন্তু ইতিহাস সুরক্ষিত করা, যেটা আমরা ভুলতে বসেছি। তাঁর এই বক্তব্যে খেপে ওঠেন বিজেপি নেতা এইচ রাজা। তিনি বলেন, ভেত্রিমারানের মতো ইতিহাসে দখল নেই আমার। তবু রাজ রাজের তৈরি দুটি চার্চ এবং দুটি মন্দিরের কথা আমি বলতে পারি। নিজেকে তিনি শিবপদ সেকারন নামে পরিচয় দিতেন। তিনি হিন্দু নন এর পরও? তা হলে ঠিক কী?”

এই ঘটনার প্রেক্ষিতেই অভিনেতা কমল হাসান বলেন চোলরাজ রাজ রাজ চোলের আমলে হিন্দু ধর্ম বলে কোনও ধর্মের অস্তিত্ব ছিল না। বইনবম, শিবম এবং সমনাম এই তিন গোষ্ঠীকে এক ছাতার তলায় এনে পরবর্তীকালে হিন্দু বলে চিহ্নিত করেছিলেন ব্রিটিশেরা। তাঁরা জানতেন না কোনটার উচ্চারণ কি। যেমন থুথুকুন্ডিকে করেছিলেন তুতিকোরিন।

আরও পড়ুন: মুক্তি পেয়েছে 'আদিপুরুষ'- এর টিজার, মুগ্ধ দর্শক

প্রসঙ্গত, খ্রীষ্টপূর্ব ৩০০ শতাব্দীতে চোল রাজবংশের উত্থান দক্ষিণ ভারতের ইতিহাসে এক অতি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। কেবল রাজনৈতিক সংহতি নয়, শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিকাশের ক্ষেত্রেও চোল রাজাদের অবদান গুরুত্বপূর্ণ।আদি-মধ্যযুগে ভারতের রাজবংশগুলির মধ্যে চোল বংশ অন্যতম।চোল রাজবংশের প্রথম নথিভুক্ত উল্লেখ পাওয়া যায় খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে লিখিত সম্রাট অশোকের শিলালিপিতে।  এই রাজবংশের শাসন খ্রিষ্টীয় ত্রয়োদশ শতাব্দী পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছিল। বিজয়ালয় (৮৫০-৮৭১ খ্রিঃ) ছিলেন চোল বংশের প্রথম রাজা। তিনি পল্লবরাজা নৃপতুঙ্গের অধীন সামন্ত নৃপতি ছিলেন। পল্লবরাজের হয়ে তিনি তাঞ্জোর অধিকার করেন। তাঁর পুত্র প্রথম আদিত্যও (৮৭১-৯০৭ খ্রিঃ) পাণ্ডাদের বিরুদ্ধে শ্রীপুরামবিয়ামের যুদ্ধে পল্লবরাজাকে সাহায্য করেন। পরিবর্তে পল্লবরাজ অপরাজিত বর্মন তাঞ্জোরের ওপর আদিত্যের অধিকার স্বীকার করে নেন। এইভাবে তিনি ক্ষুদ্র চোলরাজ্যের ভিত্তিপ্রস্তর হয়।

চোলবংশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ শাসক ছিলেন প্রথম রাজরাজ চোল। তাঁর সুদক্ষ পরিচালনায় চোলরাজ্য সমৃদ্ধ হয়ে উঠেছিল। 'তাঞ্জোর লিপি' থেকে তাঁর সামরিক কৃতিত্ব সম্পর্কে জানা যায়। তিনি শৈব ধর্মাবলম্বী  হলেও অন্যান্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। তাঞ্জোরের বিখ্যাত রাজরাজেশ্বর মন্দির (Raj Rajeshwara Temple) তারই কীর্তি।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ। 

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles