মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ব্যবসায়ী রাজু ঝা খুনের ১৮ দিনের মাথায় অভিজিত্ মণ্ডল নামে এক যুবককে পুলিশ গ্রেফতার করে। এবার এই খুনের পিছনে আর কারা রয়েছে, তা নিয়ে চর্চা চলছে সর্বত্র। অভিজিত্ গ্রেফতার হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই এই খুনের ঘটনার তদন্তে গঠিত স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম বা সিটের (SIT) সদস্যরা পৌঁছে গেলেন দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের অন্য এক ব্যবসায়ী নারায়ণ খারকার অফিসে। তাকে দেখা করার জন্য নোটিশও দেওয়া হয়েছে। যদিও ওই ব্যবসায়ীর আইনজীবী নোটিশ পাওয়ার কথা স্বীকার করেননি।
নারায়ণ খারকার অফিসে হানা দিয়ে কী করল সিট (SIT)?
মঙ্গলবার রাতে দুর্গাপুরের অম্বুজা কলোনিতে হানা দেয় পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের সিট (SIT)। একদম ভরা বাজার থেকে অভিজিৎকে পাকড়াও করে পুলিশ। একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, সেই সময় নারায়ণ অম্বুজা কলোনিতে তাঁর অফিসেই ছিলেন। অভিজিৎকে পুলিশ ধরার সঙ্গে সঙ্গেই খবর পৌঁছে গিয়েছিল অফিসে। স্করপিও গাড়িতে করে চম্পট দেন ‘কয়লা মাফিয়া’ নারায়ণ। যদিও অন্য একটি সূত্রের দাবি, কয়েকদিন ধরেই নারায়ণ এলাকাতে নেই। বুধবার রাত ৮টা নাগাদ সিটের আধিকারিকরা ফের দুর্গাপুরের অম্বুজা কলোনিতে নারায়ণের অফিসে হানা দেন। সঙ্গে ১০টি গাড়িতে ছিল পুলিশ। নারায়ণের অফিস পুলিশে ছয়লাপ হয়ে যায়। অফিসে তল্লাশির জন্য ধৃত অভিজিত্ মণ্ডলকেও সঙ্গে করে নিয়ে এসেছিলেন সিটের (SIT) আধিকারিকরা। কিন্তু, অফিসে কারও দেখা মেলেনি। এরপরই অফিস সিল করে দেওয়া হয়।
কে এই নারায়ণ খারকা?
একসময় রাজু ঝায়ের সঙ্গে কয়লার কারবারে যুক্ত ছিলেন নারায়ণ। একসঙ্গে তাঁরা ব্যবসা করতেন। রাজ্যে পালাবদল হওয়ার পরই নারায়ণের প্রভাব বাড়তে শুরু করে। জেলে যেতে হয় রাজুকে। বহুদিনের জুটি ভেঙে যায়। কারবারের দ্বন্দ্ব চরম শত্রুতার পর্যায়ে চলে যায়। পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল-দুর্গাপুর খনি অঞ্চলে ইসিএলের কয়লা পরিবহণের ‘ডিস্ট্রিবিউশন অর্ডার’ পাওয়া সংস্থার উপর তোলা আদায় করার কারবার শুরু করেছিল রাজু। প্রতি টন কয়লার জন্য ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা ডান্ডা ট্যাক্স চালু করেছিল সে। এই নিয়ে নারায়ণের সঙ্গে শত্রুতা বাড়তে থাকে রাজুর। ইসিএলের কয়লা নিলাম হলে কোনও সংস্থা তা কিনত। সেখানেও থাবা বসিয়েছিল রাজু। তার জেরেও অনেকেরই সঙ্গে শত্রুতা বাড়ছিল রাজুবাহিনীর। নারায়ণের সঙ্গে রাজু-র দুরত্ব অনেকটাই বেড়ে গিয়েছিল। ধৃত অভিজিত্ মণ্ডল নারায়ণের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। তাই, অভিজিত্ গ্রেফতার হওয়ার অর্থ নারায়ণকে বার্তা দেওয়া। বুধবার রাতে দুর্গাপুর অফিসে সিল করে সিট (SIT) আধিকারিকরা সেই বার্তা আরও স্পষ্ট করলেন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours