Akshay Tritiya 2023: মহাভারতের রচনা থেকে গঙ্গার মর্ত্যে আগমন! কী কী মাহাত্ম্য রয়েছে অক্ষয় তৃতীয়ার?

শুধুমাত্র হিন্দুদের কাছেই নয়, জৈন সমাজের কাছেও দিনটির মাহাত্ম্য রয়েছে
akshay_tritiya
akshay_tritiya

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক:  হিন্দুধর্মে এই দিনটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষের তৃতীয়া তিথিতে উদযাপিত হয় অক্ষয় তৃতীয়া (Akshay Tritiya 2023)। দীপাবলি বা ধনতেরাসের মতোই গুরুত্বপূর্ণ এই তিথি। অনেকে এদিন সোনা কিনে থাকেন। দেশের নানা প্রান্তে অক্ষয় তৃতীয়া (Akshay Tritiya 2023) 'আখা তিজ' নামেও পরিচিত। শুধুমাত্র হিন্দুদের কাছেই নয়, জৈন সমাজের কাছেও দিনটির মাহাত্ম্য রয়েছে। ভক্তদের বিশ্বাস এই তিথিতে পূজা-অর্চনায় জীবনে সমৃদ্ধি বিরাজ করে। সাধারণত, অক্ষয় তৃতীয়ার (Akshay Tritiya 2023) দিনে ব্যবসায়ীরা সিদ্ধিদাতা গণেশ ও সম্পদ ও সৌভাগ্যের দেবী লক্ষ্মীর পুজো করে থাকেন। পয়লা বৈশাখের মতো অনেক দোকানে অক্ষয় তৃতীয়া থেকেও হালখাতা শুরু করা হয়। অনেক বাড়িতেও অক্ষয় তৃতীয়ায় লক্ষ্মী পুজো করা হয়। পরিবারের মঙ্গল কামনায় বিভিন্ন মন্দিরেও পুজো দেন অনেকে। ভক্তদের বিশ্বাস অনুযায়ী, অক্ষয় তৃতীয়ার সঙ্গে জুড়ে রয়েছে বেশ কিছু পৌরাণিক আখ্যান।

অক্ষয় তৃতীয়ার (Akshay Tritiya 2023) মাহাত্ম্য

পুরাণ মতে, অক্ষয় তৃতীয়ায় (Akshay Tritiya 2023) বিষ্ণুর ষষ্ঠ অবতার পরশুরামের জন্ম হয়।

অক্ষয় তৃতীয়াকে দেশের অনেক প্রান্তে পরশুরাম জয়ন্তীও বলা হয়। ভক্তদের বিশ্বাস, এই দিন জন্মেছিলেন বিষ্ণুর ষষ্ঠ অবতার পরশুরাম।


ঋষি জমদগ্নি ও মাতা রেণুকার পুত্র পরশুরাম জাতিতে ব্রাহ্মণ হলেও আচার আচরণে ছিলেন ক্ষত্রিয়। পিতৃহত্যার প্রতিশোধ নিতে তিনি পৃথিবীকে ২১ বার ক্ষত্রিশূন্য করেছিলেন। ব্রহ্মক্ষত্রিয় পরশুরামের রাজত্ব ছিল দেশের বিস্তীর্ণ অংশে।

অক্ষয় তৃতীয়া (Akshay Tritiya 2023) থেকেই সত্য যুগের অবসান ও ত্রেতা যুগের শুরু হয়।

অক্ষয় তৃতীয়া থেকে নতুন যুগের শুরু করা হয়। ভবিষ্যপুরাণ অনুসারে সত্য, ত্রেতা ও কলিযুগের সূচনা হয়। দ্বাপর যুগের অবসান ঘটে অক্ষয় তৃতীয়াতেই।

সত্যযুগে নারায়ণ মত্‍স্য, কূর্ম, বরাহ ও নরসিংহ অবতার রূপে ধরাধামে আসেন। ত্রেতাযুগে তিনি বামন অবতার, পরশুরাম অবতার ও রাম অবতার রূপে জন্ম নেন। অধর্মের বিনাশ করে ধর্মের প্রতিষ্ঠা করতে বারবার অবতার-রূপে পৃথিবীতে এসেছেন বিষ্ণু।

বিশ্বাস মতে, অক্ষয় তৃতীয়ায় (Akshay Tritiya 2023) শ্রীকৃষ্ণের বাল্যবন্ধু সুদামা তাঁকে অন্ন ভোগ দেন।

পুরাণ অনুযায়ী, এই বিশেষ তিথিতেই  সুদামা তাঁর বাল্যবন্ধু শ্রীকৃষ্ণকে অন্নভোগ দেন। তার পরিবর্তে কৃষ্ণ তাঁর এই প্রিয় বন্ধুকে সুখ ও সমৃদ্ধির কামনা করেন।

এরপর থেকেই সুদামার জীবন সুখ সমৃদ্ধিতে ভরে যায়। ভক্তদের বিশ্বাস এইদিন দান করলে তার ফল খুব তাড়াতাড়ি পাওয়া যায়।

মহাভারত অনুসারে বনবাসে থাকাকালীন অক্ষয় তৃতীয়াতেই (Akshay Tritiya 2023) শ্রীকৃষ্ণ দ্রৌপদীকে অক্ষয়পাত্র দান করেন।

এই দিনই দ্রোপদীকে অক্ষয়পাত্র দান করেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ, যাতে বনবাসে তাঁদের কখনও খাদ্যাভাব না হয়।


পুরাণ মতে দেবী অন্নপূর্ণার কাছেই এই পৃথিবীর সমস্ত খাদ্য রয়েছে। এদিন খাদ্যসামগ্রী দান করলে কোনও খাবারের অভাব হয় না বলে প্রচলিত বিশ্বাস। এই কারণে অক্ষয় তৃতীয়া থেকেই ক্ষেতে বীজ রোপণ করা শুরু করেন কৃষকরা। 

অক্ষয় তৃতীয়া (Akshay Tritiya 2023) থেকেই বেদব্যাস মহাভারত লেখা শুরু করেন।

মহাভারতকে বলা হয় পঞ্চম বেদ। অক্ষয় তৃতীয়া (Akshay Tritiya 2023) থেকেই মহর্ষি বেদব্যাস মহাভারত রচনা শুরু করেন।

মহাভারতের মধ্যেই রয়েছে শ্রীমদ ভগবত্‍ গীতা। বলা হয়ে থাকে, গীতার অষ্টদশ অধ্যায় যিনি পাঠ করেন, তাঁকে কোনও দুঃখ কষ্ট স্পর্শ করতে পারে না।

অক্ষয় তৃতীয়াতেই (Akshay Tritiya 2023) ভগীরথের প্রার্থনায় স্বর্গ থেকে মর্ত্যে নেমে আসেন গঙ্গা।

পুরাণ অনুসারে অক্ষয় তৃতীয়াতেই (Akshay Tritiya 2023) স্বর্গ থেকে মর্ত্যে আসেন দেবী গঙ্গা।

এদিন থেকে মর্ত্যে প্রবাহিত হতে শুরু করে এই পূণ্যসলিলা নদী। রাজা ভগীরথ তপস্যায় খুশি হয়ে মহাদেবের বরে অক্ষয় তৃতীয়া তিথিতে মর্ত্যে নেমে আসেন গঙ্গা। ভক্তদের বিশ্বাস, গঙ্গার জলে স্নান করলে গত সাত জন্মের পাপ ধুয়ে যায় বলে মনে করা হয়।

কুবেরকে এই বিশেষ তিথিতে বরদান করেছিলেন মহাদেব।

পুরাণ মতে, এদিনই কুবেরের তপস্যায় তুষ্ট হয়ে মহাদেব তাঁকে অতুল ঐশ্বর্য প্রদান করেছিলেন। এ দিনেই কুবেরের লক্ষ্মীলাভ হওয়ায় বৈভব-লক্ষ্মীর পূজা করা হয়।

চারধামযাত্রা ও চন্দন উৎসব

পুরীতে জগন্নাথের রথযাত্রার জন্য রথ তৈরি শুরু হয় অক্ষয় তৃতীয়া (Akshay Tritiya 2023) থেকেই।

অক্ষয় তৃতীয়া থেকেই (Akshay Tritiya 2023) রথ তৈরির কাজে হাত লাগানো হয়।

পুরীর জগন্নাথ ধামে এদিন থেকেই ধুমধাম করে শুরু হয় চন্দনযাত্রা উৎসব। টানা ২১ দিন চলে।

চারধামযাত্রা শুরু হয় এদিন থেকেই।

এদিন থেকেই খুলে যায় চারধামের অন্যতম বদ্রীনাথ মন্দিরের দরজা।


তার সঙ্গে এদিনই মথুরায় বাঁকে বিহারীর দর্শন পাওয়া যায়। সারা বছর পোশাকের আড়ালে ঢাকা থাকেন বাঁকে বিহারী। তাঁর চরণ দর্শন করতে পারলে মৃত্যুর পর স্বর্গে স্থান হয় বলে প্রচলিত বিশ্বাস।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles