West Bengal Health: একাধিক নতুন মেডিক্যাল কলেজের ঘোষণা, নেই প্রজেক্টর, স্মার্ট ক্লাসের সুযোগ

চিকিৎসার খুঁটিনাটিও জানতে পাড়ছেন না পড়ুয়া!
West_Bengal_Health
West_Bengal_Health

 

তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল

ক্লাসে নেই প্রজেক্টর! তাই বিভিন্ন গ্রাফিক চার্ট দেখানো যায় না। সাম্প্রতিক তথ্য বা ছবিও পড়ুয়াদের সামনে তুলে ধরতে অসুবিধা হয়। উপযুক্ত পরিকাঠামোর অভাবে পড়ুয়াদেরও ক্লাসে মনোযোগের অসুবিধা হচ্ছে। শুধু তত্ত্বগত জ্ঞান নয়, হাতে-কলমে কাজ শেখার ক্ষেত্রেও থাকছে ঘাটতি। সব বিভাগ ঠিকমতো চালু না থাকায় অনেক কিছুই শিখতে পারছেন না পড়ুয়ারা। এমনকী কিছু বিভাগে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাবে কার্যত কিছু বিষয় পড়ানো ও শেখানো থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। না, এই ঘটনাগুলি কোনও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নয়। রাজ্যের একাধিক মেডিক্যাল কলেজের পরিস্থিতি এরকমই। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ, মালদা মেডিক্যাল কলেজ কিংবা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ-সর্বত্র এই ছবি। কোথাও নেই স্মার্ট ক্লাসের সুবিধা, আবার কোথাও স্নায়ু চিকিৎসার প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো নেই। তাই ঠিকমতো শিখতেই পারছেন না চিকিৎসক পড়ুয়ারা। পরিকাঠামোর এই ত্রুটিতে বিরক্ত শিক্ষক-চিকিৎসকরাও। ২০১১ সালে রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদলের পরে, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা (West Bengal Health) ঢেলে সাজার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। গত কয়েক বছরে প্রত্যেক জেলাতেই প্রায় একটি করে মেডিক্যাল কলেজ খোলা হয়েছে। মেদিনীপুর, আরামবাগ, কোচবিহার সর্বত্র রয়েছে মেডিক্যাল কলেজ। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, পরিকাঠামো রয়েছে কী? 

সমস্যা কোথায়? 

রাজ্যের মেডিক্যাল এডুকেশন সার্ভিসের সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, ন্যূনতম পরিকাঠামো গড়ে তোলার আগেই মেডিক্যাল কলেজ হিসাবে ঘোষণা করা হচ্ছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেই হাসপাতালগুলি জেলা হাসপাতালের ভূমিকা পালনেও ব্যর্থ। স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য বলছে, রাজ্যে এখন ২৩টি মেডিক্যাল কলেজ রয়েছে। এই ২৩টি-র মধ্যে ১৬টি মেডিক্যাল কলেজ রাজ্য সরকারের অধীনস্থ। যেখান থেকে প্রতি বছর কয়েকশো নতুন চিকিৎসক তৈরি হয়। কিন্তু এমবিবিএস পড়ানোর পরিকাঠামো আদৌ আছে কি? প্রশ্ন তুলছেন চিকিৎসক মহলের একাংশ।শিক্ষক-চিকিৎসকদের একাংশের অভিযোগ, ক্লাসগুলোতে ঠিকমতো প্রজেক্টর নেই। ফলে, ক্লাস নেওয়ার সময়ে বিভিন্ন তথ্য দেখানো ও বোঝানোর ক্ষেত্রে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। তাছাড়া, চিকিৎসা পড়াকালীন হাতে-কলমে শিক্ষা অত্যন্ত জরুরি। নানান বিভাগের রোগী পরিষেবা (West Bengal Health) দেওয়ার পরেই পরবর্তী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হয়ে ওঠার পথ তৈরি করেন নতুন চিকিৎসকেরা। কিন্তু রাজ্যের অধিকাংশ নতুন মেডিক্যাল কলেজে সব বিভাগ ঠিকমতো চালু নেই। তাই অনেক বিষয়েই তাদের শেখা অসম্পূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। 

শিক্ষক-চিকিৎসকদের অভিজ্ঞতা কী? 

এই প্রসঙ্গে মালদা মেডিক্যাল কলেজের এক শিক্ষক-চিকিৎসক বলেন, এমবিবিএস পাশ করেও আধুনিক চিকিৎসার সব শাখা সম্পর্কে জানতে পারছেন না চিকিৎসক-পড়ুয়ারা। অধিকাংশ মেডিক্যাল কলেজেই পরিকাঠামোর অভাবে সব বিভাগ কাজ করতে পারছে না। এর ফলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের চিকিৎসকদের সমস্যা হবে। আর সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়বে রোগী পরিষেবা (West Bengal Health)। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের এক শিক্ষক-চিকিৎসক বলেন, অধিকাংশ সময়ে পরিকাঠামোর অভাবে অস্ত্রোপচার হয় না। রোগী রেফার করতে বাধ্য হচ্ছি। এই সব অস্ত্রোপচার থেকেই কিন্তু পড়ুয়ারা অভিজ্ঞতা অর্জন করে। অনেকক্ষেত্রেই সেগুলো ফাঁক থেকে যাচ্ছে। 

চিকিৎসকদের আশঙ্কা কোথায়? 

চিকিৎসকদের আশঙ্কা, বছরের পর বছর পরিকাঠামোর অভাব রাজ্যের চিকিৎসা (West Bengal Health) শিক্ষাকেই দুর্বল করছে। কোনও রকমে জোড়াতালি দিয়ে মেডিক্যাল কলেজের তকমা ধরে রাখলেও চিকিৎসা পরিষেবার ভিত্তি দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। বছরের পর বছর অসম্পূর্ণ পাঠ কখনোই অভিজ্ঞ চিকিৎসক গড়ে তুলতে পারবে না। তার ফলে সরাসরি রোগী পরিষেবাই ব্যাহত হবে।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles