মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: গ্রামে কোনও কাজ নেই। দিনের পর দিন হাতে কাজ না থাকায় সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার গঙ্গাসাগরের বেগুয়াখালির স্বপন প্রামাণিক। পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতেই ভিন রাজ্যে কাজে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। করমণ্ডল এক্সপ্রেস ধরে তিনি কেরল যাচ্ছিলেন। বালেশ্বরের কাছে ঘটে সেই ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা (Train Accident)। তারপর থেকে স্বপনবাবুর কোনও খোঁজ মিলছিল না। পরিবারের লোকজন স্থানীয় প্রশাসনের কাছে দরবার করেছেন। কিন্তু, কেউ তাঁর হদিশ দিতে পারেনি। রবিবার রাতে তাঁর মৃত্যুর খবর আসে। তাঁর মৃত্যুর খবর গ্রামে পৌঁছাতেই পরিবারের লোকজন কান্নায় ভেঙে পড়েন। সোমবার মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন।
কী বললেন স্বপনবাবুর ছেলে?
স্ত্রী, দুই সন্তান মিলে চারজনের ভরা সংসার ছিল। এক চিলতে মাটির বাড়িতে থাকতেন তাঁরা। দুই ছেলের নাম শুভদীপ প্রামাণিক ও সুমন প্রামাণিক। শুভদীপের বয়স ১৭ বছর। সে দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়ে। আর সুমনের বয়স ১৩ বছর। সে অষ্টম শ্রেণীতে পড়়ে। এতদিন লোকের জমিতে চাষ করেই সংসার চালাতেন স্বপনবাবু। স্বপনবাবুর বড় ছেলে শুভদীপের বক্তব্য, বাবার এক পরিচিত কেরলে কাজ করেন। তিনি বাবাকে কেরলে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। বাবা প্রথমে যেতে রাজি হয়নি। কিন্তু, সংসারের হাল দেখে বাবা মত বদলায়। বাইরে গিয়ে ভালো রোজগার করে এনে আর যাবে না বলেছিল। কিন্তু, ট্রেনে চাপার কয়েক ঘণ্টা পরই আমরা দুর্ঘটনার (Train Accident) খবর পাই। তারপর থেকে বাবার কোনও খোঁজ পাইনি। এদিন বাবার মৃত্যুর খবর পাই।
স্থানীয় বাসিন্দাদের কী বক্তব্য?
স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, স্বপনবাবু পরিবারে একমাত্র রোজগেরে ছিলেন। অন্যের জমিতে কাজ করে তাঁর সংসার চলত। কিন্তু, এই ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার (Train Accident) পর কী করে সংসার চলবে তা নিয়ে আমরা খুব দুশ্চিন্তায় রয়েছি। কারণ, আর ওর পরিবারে রোজগার করার মতো এখন কেউ নেই। ছেলেরা ছোট। এই বিষয়ে প্রশাসন উদ্যোগী না হলে ওই সংসারটি একেবারে ভেসে যাবে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours