মাধ্যম নিউজ ডেস্ক:পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুর (Durgapur) স্টিল প্ল্যান্টের (ডিএসপি) উচ্ছেদ অভিযানের প্রাক্কালে বৃহস্পতিবার ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় তামলা বস্তি এলাকায়। পাঁচিল দেওয়ার কাজের শুভ সূচনা করতেই ডিএসপি কর্তৃপক্ষকে বাধার মুখে পড়তে হয় এলাকাবাসীর। ডিএসপি'র জমিতে বসবাসকারীরা কাজ বন্ধ করে দেয়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ডিএসপি'র সিআইএসএফ ও এলাকাবাসীর সঙ্গে বচসা থেকে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। সিআইএসএফের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর ওপর লাঠিচার্জ করার অভিযোগ ওঠে। ঘটনায় কয়েকজন এলাকাবাসী আহত হন। গান্ধী মোড় থেকে মায়া বাজার যাওয়ার রাস্তা অবরোধ করে দেয় এলাকাবাসী। রাস্তায় গাছের ডাল ও বাঁশ দিয়ে রাস্তা ঘিরে বিক্ষোভ চলতে থাকে। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী পুনর্বাসনের দাবি করেন। ঘটনাস্থলে দুর্গাপুর থানার বিশাল পুলিস বাহিনী ও কমব্যাট ফোর্স এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
ঠিক কী ঘটনা ঘটেছে? (Durgapur)
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুর (Durgapur) ৩২ ও ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের তামলা বস্তি ও ফরিদপুর সহ পলাশডিহা এলাকায় ডিএসপি'র জমিতে প্রায় ১০ হাজারের বেশি বাসিন্দা বসবাস করেন। দীর্ঘদিন ধরে রুটিরুজি'র টানে বহু মানুষ বিহার, ঝাড়খণ্ড সহ এই রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে এসে বসবাস শুরু করেন। বর্তমানে ডিএসপি কর্তৃপক্ষ কারখানার সম্প্রসারণের জন্য অবৈধ দখলদার উচ্ছেদের নোটিস জারি করে। প্রায় দেড় মাস আগে ওই সব এলাকায় নোটিস জারি করতেই বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু হয়ে গিয়েছিল। ডিএসপি'র টাউন সার্ভিস বিল্ডিং ঘেরাও করে চলতে থাকে দফায় দফায় বিক্ষোভ। তৃণমূল, বিজেপি ও সিপিএম সহ প্রতিটি রাজনৈতিক দল ওই অবৈধ দখলদারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। এলাকায় এলাকায় রাজনৈতিক নেতাদের পথসভা হতে থাকে। যদিও এলাকাবাসী রাজনৈতিক দলের শিকার হতে নারাজ। তাঁদের দাবি, আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনের ভোটবাক্সে ভোট ভরতে নেতারা এগিয়ে আসছেন। তাই নেতাদের ওপর ভরসা হারিয়ে নিজেরাই কমিটি গঠন করে আন্দোলন জারি রাখেন। এরই মধ্যে এদিন সকালে অ্যালো স্টিল প্ল্যান্টের পাশে ডিএসপি কর্তৃপক্ষ পাঁচিল দেওয়ার কাজ শুরুর জন্য ভূমি পুজো করতে গিয়ে বিপত্তি ঘটে। ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে আমজনতা। তাঁরা রাস্তায় নেমে আন্দোলন শুরু করেন। ঘটনাস্থলে আসেন তৃণমূল নেতা বিশ্বনাথ পাড়িয়াল ও ধর্মেন্দ্র যাদব সহ একাধিক তৃণমূল নেতাকর্মীরা। বিক্ষোভকারীরা আন্দোলনে তৃণমূল নেতাকর্মীদের সামিল হতে প্রথম দিকে বাধা দেয়। রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে চলতে থাকে বিক্ষোভ। শেষমেশ পুলিস প্রশাসন ও তৃণমূল নেতাদের আশ্বাসে প্রায় ৭ ঘণ্টা পর বিক্ষোভ উঠে যায়।
বিক্ষোভকারী ও পুলিশ প্রশাসনের আধিকারিকের কী বক্তব্য?
বিক্ষোভকারী রতন সিং বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকায় মানুষজন বসবাস করে। আমাদের উচ্ছেদ করার আগে ডিএসপিকে পুনর্বাসন দিতে হবে। আসানসোল-দুর্গাপুর (Durgapur) পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি সুমন কুমার জয়সওয়াল বলেন, ডিএসপি কর্তৃপক্ষ লোকাল প্রশাসনকে না জানিয়ে এদিন ভূমি পুজো করতে এসেছিল। সেখান থেকে গন্ডগোল হয়েছে। আমরা সামাল দিচ্ছি। ঘটনার তদন্তও হচ্ছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours