মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে (Ration Distribution Scam) টানা ২১ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর ইডি গ্রেফতার করে মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। ব্যাঙ্কশাল কোর্টের নির্দেশে ১০ দিনের ইডি হেফাজত হয় প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর। রায় শুনে অসুস্থ হয়ে পড়েন মন্ত্রী। তাঁকে ভর্তি করা হয়েছে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে। জানা গিয়েছে, মন্ত্রী সুস্থ হওয়ার পরেই গণনা হবে ইডি হেফাজতের দিন। মন্ত্রীর গ্রেফতারির পরপরই উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। ঠিক যেমনটা প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির পরে উঠে এসেছিল। জানা গিয়েছে, পার্থর মতো বীরভূমে রয়েছে মন্ত্রীর সম্পত্তি। পার্থর ছিল 'অপা', মন্ত্রীর রয়েছে 'দোতারা' নামের বাড়ি। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, শান্তিনিকেতনে ১০ কাঠা জমির উপরে যে স্থানে বাড়িটি রয়েছে তার বর্তমান বাজারমূল্য ৬ কোটি টাকা। আবার অন্য একটি অংশের মতে, বর্তমান বাজারমূল্য ১০-১২ কোটিও হতে পারে। তবে বীরভূমে আরও প্রচুর সম্পত্তির হদিশ মিলেছে মন্ত্রীর, এমনটাই খবর ইডি সূত্রে। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরে, সেখানেও রয়েছে প্রাসাদোপম বাড়ি। মন্তেশ্বরে বিরোধী দলের নেতারা দাবি করছেন, গ্রামেও এরকম নামে-বেনামে প্রচুর সম্পত্তি করেছেন বালু। গ্রামে নাকি রয়েছে ৭০ থেকে ৮০ বিঘা সম্পত্তি। তাঁদের রয়েছে একটি আইটিআই কলেজও। এতো গেল দক্ষিণবঙ্গের কথা। সূত্রের খবর উত্তরবঙ্গেও নামে-বেনামে আরও সম্পত্তি রয়েছে মন্ত্রীর। শুধু মন্ত্রী নয়, মন্ত্রীর স্ত্রীর নামেও রয়েছে বেনামে প্রচুর সম্পত্তি। বাগডোগরাতে মল্লিক দম্পতির রয়েছে দশ কাঠা জমি।
বাড়ির পরিচারকও কোম্পানির ডিরেক্টর
অন্যদিকে জানা গিয়েছে, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের (Ration Distribution Scam) বাড়ির পরিচারকের কাজ করতেন যিনি, তিনিও নাকি দুটি কোম্পানির ডিরেক্টর ছিলেন। তদন্তকারী অফিসারদের মতে, রেশন দুর্নীতির কালো টাকা সরানোর ক্ষেত্রে সেল কোম্পানির গড়ে তোলেন বাকিবুর রহমান ও জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। ইডির দাবি, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নির্দেশ মতোই তিনটি কোম্পানি খুলেছিলেন বাকিবুর রহমান। প্রথমে ওই কোম্পানিগুলিতে ডিরেক্টর পদে রাখা হয় মন্ত্রীর স্ত্রী এবং কন্যাকে। পরে তাঁদের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ডিরেক্টর হয়ে আসেন অভিষেক বিশ্বাস ও রাম স্বরূপ শর্মা। জানা গিয়েছে, অভিষেক বিশ্বাস হলেন বাকিবুর রহমানের সম্পর্কে শ্যালক। রাম স্বরূপ শর্মা হলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বাড়ির পরিচারক। পরবর্তীতে ওই পরিচারক জ্যোতিপ্রিয়র সুপারিশে চাকরিও পেয়েছিলেন বলে জানা যাচ্ছে।
জ্যোতিপ্রিয় তৈরি করেছিলেন ফার্মও
তবে শুধুমাত্র এই তিনটে সেল কোম্পানিই নয়, দুটো ফার্মের কথাও উঠে এসেছে ইডি তদন্তে। তদন্তকারীদের দাবি, এ দুটি ফার্ম গড়ে তুলেছিলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক নিজেই। তাঁর ব্যক্তিগত হিসাবরক্ষক শান্তনু ভট্টাচার্য একাজ করতে তাঁকে সাহায্য করেন। ফার্মগুলির বর্তমান অবস্থান বাঁকুড়া জেলায়। জানা গিয়েছে, দুটি ফার্মের অ্যাকাউন্টে (Ration Distribution Scam) কুড়ি কোটি টাকার লেনদেন করা হয়েছিল অবৈধভাবে। এই ফার্মের অন্যতম অংশীদার ছিলেন সিপি জান। তাঁর বাড়িতে গত ২৬ অক্টোবর হানা দেয় ইডি। সেখানেই যাবতীয় তথ্য মেলে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours