Ram Mandir: অযোধ্যায় গেরুয়া পতাকা, ধুতি, উত্তরীয় সাজিয়ে ক্রেতার অপেক্ষায় মেহেবুবরাও

"রাম তো আমাদের সবার", অযোধ্যায় আমাদের প্রতিনিধি শুভ্র চট্টোপাধ্যায়কে সাফ জানাল মেহেবুব
Untitled_design(388)
Untitled_design(388)

শুভ্র চট্টোপাধ্যায়, অযোধ্যা

কৃষ্ণ ঠাকুরের মতো কালো। গোপালের মতো গোলগাল। মহাকাল ও জয় শ্রীরামের চিহ্ন আঁকা জামা বিক্রি করছিল ছেলেটি। নাম জিজ্ঞেস করতেই বলল, মেহেবুব আলি। রামপথের দুধারে অজস্র দোকান। কেউ বিক্রি করছেন হনুমানের গদা, কোথাও বা বিক্রি হচ্ছে জয় শ্রীরাম লেখা পতাকা। তিলক থেকে গলার মালা, সবটাই পাবেন এখানে। ঘুরতে ঘুরতে দেখা মিলল বাঙালি দোকানদারেরও। দেখা হল মিষ্টি বিক্রেতা পুরুলিয়ার বাসিন্দার সঙ্গে, তিনিও অপেক্ষায় রয়েছেন রাম মন্দির উদ্বোধনের। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক গিয়ে ঠেকছে হনুমান গড়িতে। পথের ধারে হাঁটতে হাঁটতেই দেখা মিলল ওই মুসলিম যুবক মেহেবুব আলির। বছর ২৫-এর মেহেবুব একেবারে কৃষ্ণকালো চেহারার। গেরুয়া পতাকা, ধুতি, উত্তরীয় দিয়ে সাজানো তার দোকান। কথায় কথায় জানা গেল রাম মন্দিরের খুব কাছেই তার বাড়ি।

জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে অযোধ্যা যেন রামময় হয়ে উঠেছে। রাম মন্দির (Ram Mandir) থেকে সরযূ নদী পর্যন্ত রাস্তা রামপথ নামেই পরিচিত। গত তিন ধরে ওই রাস্তার ধারের হোটেলেই আমরা রয়েছি। ভক্তদের ভিড়ে অযোধ্যার রামপথে যে জনজোয়ার আসবে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কারণ এখন থেকেই তো উৎসবের মেজাজ। রামপথের দু'দিকে পুরাতন বাড়িগুলি সংস্কারের কাজ চলছে। রাস্তা যে অনেকটাই সম্প্রসারিত হয়েছে, অবশ্যই এটা যোগী সরকারের দূরদর্শিতা। লক্ষ লক্ষ ভক্তের ভিড় সামলাতে রাস্তা প্রশস্ত হতেই হবে। 

কী বলছে মেহেবুব?

রাম মন্দির (Ram Mandir) উদ্বোধন নিয়ে তোমার মত কী? মেহেবুবের কাছ থেকে সাফ জবাব এল, ‘‘আমিও খুব আগ্রহ সহকারে অপেক্ষা করছি দিনটির। রাম তো আমাদের সবার।’’ এই দোকান মেহেবুবের রুটি-রুজির সন্ধান দেয়। সে বিক্রি করে জয় শ্রীরাম লেখা পোশাক, উত্তরীয়, ধুতি, চাদর। মহাকালের চিহ্ন আঁকা জামা, পোশাক, ফতুয়া, পাঞ্জাবিও নজরে পড়ল। শ্রীরাম এবং মহাকাল দুই দেবতাই রয়েছেন মেহেবুবের দোকানে। হাসিমুখে হিন্দু দেবতাদের প্রতীক আঁকা জামা বিক্রি করতে করতে মেহেবুব জানায়, এটাই তার পেশা। কারণ রাম মন্দিরের উদ্বোধনের পরে আরও লোক রামের নামে অযোধ্যায় আসবেন। আসবেন মহাকালের ডাকে। এর মাধ্যমেই গড়ে উঠবে তার রুটিরুজির সংস্থান। যদিও তার দোকান সরতে সরতে রাস্তার এক কোণে চলে এসেছে।

অপেক্ষা রাম মন্দির উদ্বোধনের

তার দোকানের পুঁজিতে টানও পড়েছে ভীষণ রকম। তবু সে হাসিমুখে অপেক্ষা করছে দেশের প্রধানমন্ত্রী কবে রাম মন্দিরের (Ram Mandir) দরজা খুলবেন, কবে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দামোদর মোদি এই রামলালার মূর্তি স্থাপন করবেন এবং সেই রামলালারা টানে অযোধ্যারে সরযূ নদীর তীরে এসে জমা হবেন হাজার হাজার মানুষ, লাখ লাখ জনতা, যাঁরা সবাই রামের ভক্ত এবং মহাকালের সন্তান। তাঁরা সবাই দু'হাত বাড়িয়ে কিনবেন ঈশ্বরের নাম খোদাই করা জামা। এ সমস্ত কিছুই বিক্রি হওয়ার অর্থ মেহেবুব আলি এবং তার পরিবারের মুখে নিত্যদিনের ভাত-রুটির সংস্থান হওয়া। তাই মেহেবুব আলি হাসিমুখে অপেক্ষা করছে সেই দিনটার জন্য যেদিন রাম মন্দিরের (Ram Mandir) দরজা খুলবে আর মেহবুব তার বিক্রিবাটা আরও একটু বাড়িয়ে তুলতে পারবে রামের নামে। এই ভাবেই অযোধ্যায় হাজারো মেহেবুবের মতো সংখ্যালঘু সন্তানরা অপেক্ষা করে আছেন রাম মন্দিরের উদ্বোধনের।

 

দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles