Mental Disease: চার বছরের সন্তানকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছেন‌ মা! মানসিক অসুখ থেকেই কি এই কাজ?

সন্তানের মনে কি অপরাধ প্রবণতা জন্ম নিচ্ছে? খেয়াল রাখছেন তো?
Mental_Disease
Mental_Disease

তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল

এক একরত্তির মৃত্যু ঘিরে তোলপাড় গোটা দেশ।‌ চার বছর বয়সের এক শিশুর মৃত্যুতে অভিযুক্ত তার মা। অভিযোগ, নিজের পুত্রসন্তানকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছেন‌ মা। পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন।‌ ঘটনাটি ঘটেছে গোয়ার একটি হোটেলে। খুনের পরে বেঙ্গালুরু পালিয়ে যাচ্ছিলেন। এরপরেই গ্রেফতার হন অভিযুক্ত মা। অত্যন্ত মেধাবী বাঙালি বিজ্ঞানী মায়ের হাতে মাত্র চার বছরের শিশুর নৃশংস খুনের ঘটনায় শিউরে উঠছেন সকলেই। দেশ-বিদেশের একাধিক ডিগ্রি থাকা, বিজ্ঞানী মায়ের এমন আচরণে অবাক হচ্ছেন‌ অনেকেই।‌ কিন্তু মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, মানসিক অসুখ থেকেই এমন কাজ করতে সক্ষম হয়েছেন ওই মহিলা। প্রথম থেকেই তাঁর রোগ নির্ণয় হলে এবং চিকিৎসা করালে এই ধরনের বড় বিপদ হয়তো এড়ানো যেতে পারত। তাই মনোরোগ চিকিৎসকের পরামর্শ, সন্তানের আচরণ প্রথম থেকেই নজরে রাখা জরুরি। কিছু লক্ষণ স্পষ্ট করে, সন্তানের মনে অপরাধ প্রবণতা জন্ম নিচ্ছে কিনা। তাহলে সতর্ক হতে হবে। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে হবে।

কীভাবে জানবেন সন্তান‌ অপরাধমনস্ক?

মনোরোগ চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, সন্তান অপরাধমনস্ক কিনা, তা জানার জন্য নজরদারি জরুরি। খুব‌ ছোট বয়সে অর্থাৎ, ৫ থেকে ৮ বছর, এই সময়ে বহু শিশু কল্পনা করে। তাদের কল্পনায় রাক্ষস থেকে রাজা-রানী, পরী অনেকে থাকে। তারা বাস্তবের সঙ্গে মিশিয়ে নানা কল্পনার গল্প বলে।‌ যা খুবই স্বাভাবিক। এগুলোকে কখনই মিথ্যে কথা বলা যায় না।‌ কারণ, তারা সচেতন ভাবে বানিয়ে কিছু বলছে না। কল্পনা আর বাস্তবের ফারাক করতে পারছে না। কিন্তু বছর দশেকের ছেলে-মেয়ে যদি খুব ছোট বিষয়েও মিথ্যে‌ কথা বলে, সেগুলো নজরে রাখা জরুরি। স্কুলের সামান্য ঘটনা কিংবা বন্ধুদের ব্যাপারে, যে কোনও গুরুত্বহীন বিষয়েও লাগাতার মিথ্যে বললে, বোঝা দরকার কোথাও সমস্যা হচ্ছে।‌
পাশপাশি, সন্তানের মধ্যে প্রতিযোগী মনোভাব কতখানি প্রবল, সেটাও বোঝা জরুরি বলে জানাচ্ছেন মনোরোগ চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, অনেক সময়ে দেখা যায়, স্কুল পড়ুয়াদের মধ্যে কেউ কেউ মারাত্মক প্রতিযোগী।‌ যে কোনও বিষয়ে জেতাকে তারা অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে এবং মরিয়া হয়ে উঠছে। এই মারাত্মক প্রতিযোগী মনোভাব একেবারেই স্বাস্থ্যকর নয় বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। পরবর্তীতে তা নানা মানসিক জটিলতা তৈরি করে। 
পছন্দের জিনিস ভাগ করে নিতে রাজি হচ্ছে কিনা, এটাও দেখা জরুরি বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, অনেকেই নিজের জিনিস নিয়ে মারাত্মক সচেতন হয়। খুব ছোট থেকেই খেলনা হোক বা পছন্দের জামা-কাপড়, চকোলেট ভাই-বোন বা বন্ধুদের সঙ্গে একেবারেই ভাগ করতে চায় না। এই কোনও কিছুই ভাগ করতে না পারা, সমস্যা তৈরি করতে পারে। 
স্কুলে বন্ধু হোক বা ভাই-বোন, একসঙ্গে খেলার সময় শিশু কেমন আচরণ করছে, সেদিকে নজর দেওয়া জরুরি। যদি অতিরিক্ত মারধর করার প্রবণতা থাকে, তাহলে কিন্তু সতর্ক হতে হবে। কারণ, বারবার মারধর করার প্রবণতায় শিশু মনে হিংস্রতা জন্ম নেবে। 
আবার একেবারে গুটিয়ে থাকা কিংবা অতিরিক্ত চুপচাপ থাকলেও সতর্ক হতে হবে। কারণ, সদ্য শৈশব পেরনো কৈশোরে পা দেওয়া ছেলেমেয়ে খুব বেশি গুটিয়ে থাকলে বুঝতে হবে, কোনও রকম মানসিক জটিলতা তৈরি হচ্ছে। এমনই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।

কীভাবে মোকাবিলা হবে?

মনোরোগ চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, সন্তান মিথ্যে কথা বললে প্রথম থেকেই তার স্বভাব পরিবর্তনে জোর দিতে হবে। কোনও রকম ভয় থেকেই শিশুরা মিথ্যের আশ্রয় নেয়। তাই কেন‌ মিথ্যে বলছে, সেদিকে নজর দিতে হবে। তবেই এই সমস্যার মোকাবিলা সম্ভব হবে। 
শিশুদের সামনে কোনও ভাবেই হিংসার ঘটনা আনা চলবে না। বাড়ির বড়দের কোনও অশান্তি কিংবা পরিবারের হিংসার ঘটনা শিশুদের সামনে ঘটলে, তাদের মনে গভীর প্রভাব ফেলে। যা দীর্ঘমেয়াদি হয়। তারা হিংসাকেই বহু সমস্যার সমাধান ভাবতে শেখে।
অতিরিক্ত রেগে যাওয়া, কোনও বিষয়ে হেরে গেলেও তা স্বাভাবিকভাবেই গ্রহণ করার মতো বিষয়গুলো ছোট থেকেই বোঝানো‌ জরুরি। তারপরেও পরিস্থিতির পরিবর্তন না হলে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে হবে বলেই জানাচ্ছেন মনোরোগ চিকিৎসকদের একাংশ।

 

DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles