চতুর্থ অধ্যায়
শুধু পাণ্ডিত্য, পুঁথিগত বিদ্যা অসার—ভক্তিই সার
শ্রীরামকৃষ্ণ—শুধু পাণ্ডিত্যে কিছু নাই। তাঁকে পাবার উপায়, তাঁকে জানবার জন্যই বইপড়া। একটি সাধুর পুঁথিতে কি আছে, একজন জিজ্ঞাসা করলে, সাধু খুলে দেখালে। পাতায় পাতায় ওঁ রামঃ লেখা রয়েছে, আর কিছুই লেখা নাই!
গীতার অর্থ কি? দশবার বললে যা হয়। গীতা গীতা, দশবার বলতে গেলে, ত্যাগী ত্যাগী হয়ে যায়। গীতায় এই শিক্ষা—হে জীব, সব ত্যাগ করে ভগবানকে লাভ করবার চেষ্টা কর। সাধুই হোক, সংসারীই হোক, মন থেকে সব আসক্তি ত্যাগ করতে হয়।
চৈতন্যদেব যখন দক্ষিণে তীর্থভ্রমণ করছিলেন—দেখলেন, একজন গীতা পড়ছে। আর-একজন একটু দূরে বসে শুনছে, আর কাঁদছে—কেঁদে চোখ ভেসে যাচ্ছে। চৈতন্যদেব জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি এ-সব বুঝতে পারছ? সে বললে, ঠাকুর! আমি শ্লোক এ-সব কিছু বুঝতে পারছিনা। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তবে কেন কাঁদছো? ভক্তটি বললে, আমি দেখছি অর্জুনের রথ, আর তার সামনে ঠাকুর আর অর্জুন কথা কচ্চেন। তাই দেখে আমি কাঁদছি।
পঞ্চম পরিচ্ছেদ
ভক্তিযোগের রহস্য—The Secret of Dualism
শ্রীরামকৃষ্ণ-বিজ্ঞানী কেন ভক্তি লয়ে থাকে? এর উত্তর এই যে, আমি যায় না। সমাধি অবস্থায় যায় বটে, কিন্তু আবার এসে পড়ে। আর সাধারণ জীবের ‘অহং’ যায় না। অশ্বত্থগাছ কেটে দাও, আবার তার পরদিন ফেঁক্ড়ি বেরিয়েছে। (সকলের হাস্য)
জ্ঞানলাভের পরও আবার কোথা থেকে আমি এসে পড়ে! স্বপনে বাঘ দেখেছিলে, তারপর জাগলে, তবুও তোমার বুক দুড়দুড় করছে। জীবের আমি লইয়েই তো যত যন্ত্রণা। গরু হাম্বা (আমি) হাম্বা করে, তাই তো অত যন্ত্রণা। লাঙলে জোড়ে, রোদ বৃষ্টি গায়ের উপর দিয়ে যায়, আবার কসাইয়ে কাটে, চামড়ায় জুতো হয়, ঢোল হয়—তখন খুব পেটে। (হাস্য)
আরও পড়ুনঃ বর্ধমান জেলা বিজেপির অফিসে হামলা তৃণমূল দুষ্কৃতীদের, একাধিক গাড়ি ভাঙচুর!
আরও পড়ুনঃ “দক্ষিণেশ্বরের পরমহংস সামান্য নহেন, এক্ষণে পৃথিবীর মধ্যে এত বড় লোক কেহ নাই”
আরও পড়ুনঃ "দু-চারটা মাছ এমন সেয়ানা যে, কখনও জালে পড়ে না"
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours