তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
ভারতে বাড়ছে অপুষ্টি! ইউনিসেফের সাম্প্রতিক রিপোর্ট (UNICEF's latest report) অনুযায়ী, ভারতে প্রতি চার জনের মধ্যে একজন শিশু অপুষ্টিতে (Malnutrition) ভুগছে। আর সেই সঙ্গে বাড়ছে অপুষ্টিজনিত স্বাস্থ্য সমস্যা। পাশপাশি লিভার, পাকস্থলীর নানান রোগের প্রকোপও বাড়ছে। বিশেষত খুব কম বয়স থেকেই তাই নানান স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিচ্ছে। শিশুদের বিকাশেও তার প্রভাব পড়ছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস তৈরি হচ্ছে না। আর তার জেরেই সমস্যা বাড়ছে।
কেন বাড়ছে অপুষ্টি? (Malnutrition)
বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, অধিকাংশ পরিবারেই 'কিছু একটা খেয়ে নিলেই হবে' এই মনোভাব দেখা দিচ্ছে। অনেকেই সুষম আহার কিংবা পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে না। আর তার থেকেই বিপত্তি। পুষ্টিবিদদের একাংশ জানাচ্ছেন, সকালের জলখাবার কিংবা সন্ধ্যার খাবারে অধিকাংশ সময়েই বাইরের চটজলদি খাবার খাওয়া হচ্ছে (Malnutrition)। তরুণ প্রজন্মের একাংশ কলেজে যাওয়ার পরে প্রথম ব্রেকফাস্ট করছে। আবার স্কুল পড়ুয়ার টিফিনেও থাকছে নানা রকমের ভাজা কিংবা প্যাকেটজাত খাবার। এই ধরনের খাবারে অধিকাংশ সময়েই কোনও পুষ্টিগুণ থাকে না। ফলে পেট ভরলেও পুষ্টি পাচ্ছে না। এর জেরেই বাড়ছে বিপদ। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, ছোট থেকেই বাইরের নানান প্রিজারভেটিভ খাবারে শিশুরা অভ্যস্থ হয়ে পড়ছে। নানান মাংসের পদ প্রিজারভেটিভ করে খাওয়ার চল বেড়েছে। এর জেরে শরীরে নানান সমস্যা দেখা দিচ্ছে। সুষম আহারের ধারণা অধিকাংশ পরিবারেই নেই। তাই শিশুদের মধ্যেও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস তৈরি হচ্ছে না। এর জেরেই স্বাস্থ্য সমস্যা বাড়ছে।
কোন বিপদ হতে পারে? (Malnutrition)
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন অপুষ্টি শরীরে একাধিক রোগ তৈরি করে। শরীরে রোগ প্রতিরোধ শক্তি কমে। ফলে নানান সংক্রামক রোগের প্রকোপ বাড়ে। ইনফ্লুয়েঞ্জা কিংবা পক্স, যে কোনও রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। পাশপাশি বিকাশেও সমস্যা দেখা যায়। মস্তিষ্কের বিকাশ ঠিকমতো হয় না। সর্বদাই ক্লান্তি অনুভব হয়। এছাড়া, হাড় ও পেশিতেও নানান সমস্যা দেখা দেয়। হাড়ে নানান রোগ হতে পারে। পেশি দুর্বল হয়ে পড়ে। পাকস্থলী ও লিভারেও অপুষ্টির জন্য নানান রোগ হতে পারে।
কী পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা? (Malnutrition)
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, সকালের জলখাবার কিংবা রাতের খাবারের সময় নির্দিষ্ট করা সবচেয়ে জরুরি। পুষ্টি সুনিশ্চিত করতে সময়ে খাবার খাওয়ার অভ্যাস প্রাথমিক শর্ত। সকালের জলখাবার দুধ, ফল কিংবা রুটি থাকা জরুরি। তেলেভাজা খাবার সকালে একেবারেই এড়িয়ে চলতে হবে। রাতে দীর্ঘ সময় না খাওয়ার জেরে পাকস্থলী খালি থাকে। তাই সকালের প্রথম খাবার তেলেভাজা হলে, তা হজমের সমস্যা তৈরি করে। দুপুরের খাবারে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ভিটামিন ও ফ্যাটের পরিমাণ ঠিকমতো থাকা জরুরি। অর্থাৎ ভাত কিংবা রুটির সঙ্গে ডাল, সবজি এবং মাছের মতো পদ থাকতে হবে (Malnutrition)। শিশু বয়স থেকেই সবজি, ডাল খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করতে হবে। না হলে শরীরের সবরকম চাহিদা মিটবে না। রাতের খাবার ন'টা থেকে সাড়ে ন'টার মধ্যে শেষ করা জরুরি। হালকা খাবার যেমন স্ট্রু, তার সঙ্গে রুটি কিংবা ডাল আর সবজি এই জাতীয় খাবার মেনুতে রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, সহজেই হজম হবে, এমন খাবার খাওয়া জরুরি। পাশাপাশি মাছ-মাংসের সঙ্গে সবজি যেন সমান ভাবেই খাওয়া হয়, সে দিকে নজর রাখতে হবে। তবেই শরীরে ঠিকমতো পুষ্টি পাবে। তেলে ভাজা খাবার একেবারেই এড়িয়ে চলতে হবে। যা হোক খেয়ে পেট ভরানো নয়। বরং পুষ্টিকর খাবার পর্যাপ্ত খাওয়া হচ্ছে কিনা সে দিকে নজরদারি জরুরি। তবেই একাধিক রোগ প্রতিরোধ করা সহজ হবে।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours