তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
উত্তর থেকে দক্ষিণ, রাজ্যের সর্বত্র বর্ষা হাজির। উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে বৃষ্টির দাপটে ভোগান্তি বাড়ছে। একাধিক জেলায় জমা জলে সমস্যা হচ্ছে। আর সেই ভোগান্তিকে আরও প্রাণঘাতী করে তুলছে সাপের উপদ্রব (Snake Bite)। উত্তরের আলিপুরদুয়ার, মালদা থেকে দক্ষিণবঙ্গের নদীয়া, বর্ধমান, দুই চব্বিশ পরগনা, বর্ষায় সাপের উপদ্রবে নাজেহাল সাধারণ মানুষ।
কী অভিযোগ উঠছে?
রাজ্যের একাধিক জেলার বাসিন্দাদের অভিযোগ, বর্ষা (Rainy Season) শুরু হতেই জল জমছে। নিকাশি ব্যবস্থার বেহাল দশা। তাই নর্দমা দিয়ে জল যাচ্ছে না। রাস্তায় জল জমার পাশপাশি ঘরেও জল জমছে। তাঁরা জানাচ্ছেন, বিভিন্ন স্কুলের ক্লাসরুমেও জল জমছে। আর এর জেরেই বাড়ছে সাপের উপদ্রব। একাধিক সরকারি ও সরকার পোষিত স্কুলে ক্লাসরুমের ভিতরে সাপ থাকার জেরে পড়ুয়ারা ক্লাস করতে পারছে না। জমা জলের জেরে ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া, ডায়ারিয়ার মতো নানান রোগের প্রকোপ বাড়ছে। তার উপরে সাপের উপদ্রব (Snake Bite)। সব মিলিয়ে সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত হচ্ছে।
তবে, সাপের উপদ্রবের চেয়েও বড় দুশ্চিন্তা ওষুধের আকাল। সাপে কামড়ের পরে হাসপাতালে গেলেও ওষুধ পাওয়া যায়নি, এমন অভিযোগ উঠছে। রাজ্যের একাধিক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে অ্যান্টি স্নেক ভেনম (এএসভি) ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে না। সাপের কামড়ের টিকা না থাকায় পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে। রোগীকে নিয়ে এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে যাওয়া আরও কঠিন হয়ে উঠছে বলেই জানাচ্ছেন ভুক্তভোগীদের একাংশ।
দুশ্চিন্তা কোথায়? (Snake Bite)
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, অ্যান্টি স্নেক ভেনম একটি অত্যাবশ্যকীয় ওষুধ। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরেই এই টিকা সমস্ত স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পর্যাপ্ত নেই। চিকিৎসক মহলের একাংশের অভিযোগ, বারবার প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে জানানোর পরেও সমস্যার সমাধান হয়নি। বিশেষত সরকারি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এই টিকা অমিল। কিন্তু কুকুরে কামড়ানোর অ্যান্টি রেবিস টিকা কিংবা সাপে কামড়ানোর অ্যান্টি স্নেক ভেনম-র মতো ওষুধ প্রত্যেকটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে থাকা জরুরি। তাঁরা জানাচ্ছেন, সাপে কামড়ানোর ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে এই টিকা দিলে প্রাণনাশের ঝুঁকি কমে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফেও স্পষ্ট জানানো হয়েছে, সাপের কামড়ে মৃত্যুঝুঁকি কমাতে পারে একমাত্র অ্যান্টি স্নেক ভেনম। কামড়ের পরে যত দ্রুত এই ওষুধ দেওয়া হবে, তত মৃত্যুর আশঙ্কা কমবে। পাশপাশি কিডনি সহ শরীরের একাধিক অঙ্গ ক্ষতির ঝুঁকিও কমবে। কিন্তু চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, এই রাজ্যে অনেকক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, ওষুধের জন্য রোগী ও পরিজনদের বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরতে হচ্ছে। এর জেরে অনেকটাই দেরি হয়ে যাচ্ছে। মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে।
কী বলছেন রাজ্য প্রশাসনের কর্তারা? (Snake Bite)
স্বাস্থ্য ভবন অবশ্য ওষুধের আকালের অভিযোগ মানতে নারাজ। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, অনেক সময়েই প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলি থেকে নির্দিষ্ট সময়ে ওষুধের তালিকা পাঠানো হয় না। কোন ওষুধের প্রয়োজন বেশি, সে সম্পর্কে স্পষ্ট তালিকা না পৌঁছলে, সরাবরাহ করতে দেরি হয়। আবার বর্ষার সময়ে (Rainy Season) রাস্তার অবস্থা স্বাভাবিক থাকে না। তাই অনেক সময়েই প্রত্যন্ত এলাকায় ওষুধ পৌঁছতে সময় লাগে। কিন্তু এক-দুদিনের মধ্যেই সেই সমস্যা মিটে যায়। ওই স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, "ওষুধের কোনও আকাল নেই। সব হাসপাতালেই অ্যান্টি স্নেক ভেনম ওষুধ রয়েছে। প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রেও প্রয়োজন মতো ওষুধ পৌঁছে যাচ্ছে। দুশ্চিন্তার কারণ নেই।"
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours