Bangladesh Crisis: কোটা-বিরোধী আন্দোলনে সামিল, তার পরেও আক্রান্ত! বাংলাদেশে আতঙ্কে হিন্দু পড়ুয়ারা

Anti Hindu violence: ঢাকার রাজপথে কোটা-আন্দোলনে পা মিলিয়েছিলেন, তবু বাংলাদেশে আক্রান্ত হিন্দু পড়ুয়ারা...
WhatsApp_Image_2024-08-08_at_1218.36_PM
WhatsApp_Image_2024-08-08_at_1218.36_PM

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ঢাকার রাজপথে কোটা-আন্দোলনে পা মিলিয়েছিলেন বাংলাদেশের (Bangladesh Crisis) হিন্দু ছাত্রছাত্রীরাও। চাকরির আশায় নতুন দিনের স্বপ্ন দেখেছিলেন তাঁরাও। কিন্তু আন্দোলনকারীদের কথামতো দেশ দ্বিতীয়বার ‘স্বাধীন’ হতেই ঘুম ভাঙল এই পড়ুয়াদের। স্বপ্ন ভেঙে কঠিন বাস্তবে আছড়ে পড়লেন বাংলাদেশের হিন্দু ছাত্রছাত্রীরা। পরিস্থিতি যেন ক্রমাগত খারাপ হচ্ছে। শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর, সে দেশের দখল নিয়েছে সেনাবাহিনী। কিন্তু তাতে অবস্থার যে খুব একটা উন্নতি হয়েছে এমনটা নয়। ছাত্র আন্দোলন দিয়ে যা শুরু হয়েছিল, তা এখন লুটতরাজ, হিন্দু সংখ্যালঘুদের হত্যা, ধর্ষণ, বাড়ি-মন্দির ভাঙচুরে গিয়ে দাঁড়িয়েছে।

রাতে ঘুম নেই

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (Bangladesh Crisis) প্রাক্তন ছাত্র সাম্প্রতিক কালে হিংসার শিকার নিলয় কুমার বিশ্বাস (২৬), রাতে ঘুমাতে পারছেন না। পরিবার-পরিজনের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তায় দিন কাটছে তাঁর। তিনি জানান, ঢাকায় নিজেকে তুলনামূলক নিরাপদ মনে হলেও, রাজধানীর বাইরে থাকা বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের কাছ থেকে আসা উদ্বেগজনক খবর তাঁর ঘুম কেড়ে নিয়েছে। নিলয়ের কথায়, আন্দোলনের শুরুতে হিন্দু শিক্ষার্থীরাও অংশ নিয়েছিল। তাঁরাও মুসলিম সহপাঠীদের সঙ্গে মিলে কোটা সংস্কারের দাবি জানিয়েছিলেন। তখন হিন্দু-মুসলিম ভেদ বুঝতে পারেননি। কিন্তু এখন তাঁরাই উগ্রবাদীদের আক্রমণের মূল লক্ষ্য হয়ে উঠেছে। বিশ্বাস বলেন, "আমাদের বাড়ি ও মন্দিরগুলোতে হামলা চালানো হচ্ছে, আমরা ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে আছি। ধর্মীয় বিদ্বেষের কারণে আজ হিন্দু সম্প্রদায় খুবই অসহায় বোধ করছে।"

কীসের জন্য আন্দোলন 

বাংলাদেশে (Bangladesh Crisis) হিন্দুদের ঘর পুড়ছে, মহিলাদের নিগ্রহ করা হচ্ছে, এমন কি দুই বাংলার অত্যন্ত প্রিয় গুনী শিল্পী রাহুলের বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। মূর্তি ভাঙা, মুক্তিযুদ্ধের জাদুঘরে আগুন দেওয়া, এটা কোটা আন্দোলনের উদ্দেশ্য ছিল না, বলেই মনে করছে বাংলাদেশে ছাত্রদের একাংশ। কুটনৈতিক মহলের মতে, সকল ধরনের সাম্য ও মৈত্রীর কথা বলে, যে আন্দোলনের শুরু হয়েছিল তার প্রথম শর্তই হওয়া উচিত, সংখ্যালঘুদের প্রাণ, মানবাধিকারের প্রতিষ্ঠা, তা করতে ব্যর্থ আন্দোলনকারীরা। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে দেশব্যাপী শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করেছিল। বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে ১৯৭১ সালের মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ আসন সংরক্ষিত ছিল। আন্দোলনের চাপে ২০১৮ সালে শেখ হাসিনার সরকার এই কোটা ব্যবস্থা বাতিল করে। কিন্তু চলতি বছরের জুনে হাইকোর্টের রায়ে আবারও পূর্বের কোটা ব্যবস্থা পুনর্বহাল হলে নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয়।

এগিয়ে আসুক মুসলিম বন্ধুরা

কোটা সংস্কার আন্দোলনে হিন্দু শিক্ষার্থীরা সক্রিয়ভাবে অংশ নিলেও, শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর শুরু হওয়া অস্থিরতায় তারা এখন নিজেদেরই লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। বিশ্বাসের মতে, হিন্দুদের বাড়ি, মন্দির ধ্বংস ও নারীদের ওপর সহিংসতা বেড়েছে। তিনি বলেন, "আমাদের রক্ষা করার জন্য আমাদের মুসলিম বন্ধুদেরই এগিয়ে আসতে হবে।"

আরও পড়ুন: বাংলাদেশ হিন্দুহীন হলে ক্ষতি ভারতেরই, দাবি ‘ওয়ার্ল্ড হিন্দু ফেডারেশন’ কর্তার

শান্তির আবেদন

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে উত্তপ্ত হয়েছিল পদ্মাপারের দেশ (Bangladesh Crisis)। প্রধানমন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ঘোষণা করেছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ শাহবুদ্দিন। তবে অশান্তি এখনও জিইয়ে রয়েছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় হিন্দু-সহ সংখ্যালঘুদের উপর হামলা হচ্ছে বলে অভিযোগ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী আরিয়া ভৌমিক, যিনি শুরুতে শেখ হাসিনার পদত্যাগকে স্বাগত জানিয়েছিলেন, এখন হামলার শিকার হয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, "ধর্মের ভিত্তিতে নয়, মানবতার ভিত্তিতে আমরা একসঙ্গে দাঁড়িয়েছিলাম। কিন্তু এখন আমরা, হিন্দুরা, আক্রান্ত হচ্ছি।" বিশ্ববিদ্যালয়ের হিন্দু শিক্ষার্থীরা (Anti Hindu violence) এখন অসহায়ভাবে নিজেদের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষার চেষ্টা করছেন। শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন। কিন্তু শান্তি...তা হয়তো অলীক স্বপ্ন!

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles