Durga Puja 2024: দশমীর দিন সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন হিন্দু বধূরা, কবে শুরু হয়েছিল এই রীতি?

Sindur Khela: দেবীবরণের পর কেন হয় সিঁদুর খেলা, জানেন কি?
Durga_Puja_2024
Durga_Puja_2024

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সারা বছর অপেক্ষার পর মহালয়া শুরু হলেই চারদিকে পুজো পুজো (Durga Puja 2024) গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। আনন্দে মেতে ওঠে মন। আর দশমী আসা মানেই মন বিষাদে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। দশমী মানেই বিজয়া। এবার মাকে বিদায় দেওয়ার পালা। সিঁদুরে রাঙা মায়ের মুখখানি যে বড়ই প্রিয় আম বাঙালির। মিষ্টিমুখ করিয়ে ঘরের মেয়ে উমাকে এবার কৈলাসে পাঠানোর শুরু হয় তোড়জোড়। আর এই সূত্র ধরেই সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন বাড়ির বধূরা। বিজয়া দশমীর একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হল সিঁদুর খেলা। হিন্দু বিবাহ রীতিতে সিঁদুরদান একট লৌকিক আচার। স্বামীর মঙ্গল কামনায় সিঁদূর পরেন বিবাহিত মহিলারা। দুর্গা বিবাহিত হওয়ায় তাঁকে সিঁদুর লাগিয়ে, মিষ্টি মুখ করিয়ে বিদায় জানানো হয়।

সিঁদুর খেলার প্রচল কবে? (Durga Puja 2024)

সিঁদুর খেলার (Sindur Khela) প্রচলন ঠিক কবে থেকে, তার সঠিক কোনও তথ্যপ্রমাণ নেই। ইতিহাসবিদ ও শাস্ত্রজ্ঞ পণ্ডিতদের কেউ কেউ বলেন, দুশো বছর আগে সিঁদুর খেলার প্রচলন হয়েছিল। তখন বর্ধিষ্ণু জমিদার পরিবারগুলিতে দশমীর দিন প্রতিমা বিসর্জনের আগে বাড়ির মহিলারা একে অপরকে সিঁদুরে রাঙিয়ে স্বামী ও পরিবার পরিজনদের মঙ্গল কামনা করতেন। আবার অন্য একটি মত অনুযায়ী, সিঁদুর খেলার ঐতিহ্য চারশো বছরের পুরনো। অন্য কোনও কারণ নয়, শুধুমাত্র খেলার ছলেই এই প্রথার চল হয়। মায়ের বিসর্জনের দিন সকলের মনই ভারাক্রান্ত থাকে। তাই ওইদিন একটু আনন্দ-উল্লাসের জন্যই সিঁদুর (Durga Puja 2024) খেলার প্রবর্তন হয়। সেই ঐতিহ্যই সমান ভাবে চলছে আজও।

পুরাণ মতে সিঁদুর খেলা

পুরাণ মতে, ৯ দিন ৯ রাত্রি মহিষাসুরের সঙ্গে যুদ্ধ হয় দশভূজা দুর্গার। দশমীর দিনে মহিষাসুর বধ করেন দুর্গা। অধর্মের ওপর ধর্ম ও অসত্যের ওপর সত্যের জয়ের দিন এটি। সেই জয়কে চিহ্নিত করতেই দশমীর আগে বিজয়া শব্দটি ব্যবহৃত হয়। দশমীর দিনে এই জয়লাভ বলে দিনটিকে বিজয়া দশমী বলা হয়। পুরাণ মতে সিঁদুর ব্রহ্মের প্রতীক। বিবাহিত রমণীরা সেই ব্রহ্মস্বরূপ সিঁদুর সিঁথিতে ধারণ করে থাকেন স্বামী ও পরিবারের মঙ্গলকামনায়। শ্রীমদ্ভগবত অনুসারে, গোপিনীরা কাত্যায়নী ব্রত পালন করতেন। যমুনা নদীর তীরে মাতার মাটির মূর্তি স্থাপন করে, ধূপ-ধুনো জ্বালিয়ে এই ব্রত পালিত হত। এরপর গোপীনিরা নাকি সিঁদুর খেলায় মেতে উঠতেন। একে অপরকে সিঁদুর পরিয়ে তাঁরা আসলে শ্রীকৃষ্ণের মঙ্গল কামনা করতেন বলেই কথিত রয়েছে।

সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন সকলে

বারোয়ারি মণ্ডপ (Durga Puja 2024) হোক অথবা বাড়ির পুজো, শাড়ি পরে মাতৃ জাতিকে সিঁদুর খেলতে দেখা যায়। শুধুমাত্র বিবাহিত বা প্রচলিত ভাষায় সধবা মহিলারা নন, এখন অবিবাহিত মহিলারা, প্রচলিত ভাষায় যাদের কুমারী মেয়ে বলা হয়, তাঁদেরকেও দেখা যায় সিঁদুর খেলায় মেতে উঠতে। কথিত আছে যে এই সিঁদুর লাগালে বিবাহিতরা সৌভাগ্যবতী হওয়ার বর পান। বাঙালি মহিলাদের মধ্যে সিঁদুর খেলার সাথে ধুনুচি নাচও দেখা যায়। মনে করা হয় মা দুর্গা ধুনুচি নাচে খুশি হন। প্রাচীনকালে লাল সিঁদুরকে ভারতীয় নারীরা বেছে নিয়েছিলেন তাঁদের অন্যতম প্রসাধনী হিসেবে। গালে সিঁদুর মেখে, হাতে প্রসাদের রেকাবি নিয়ে সেলফি তুলে তা সোশ্যাল মিডিয়াতে আপলোড করাটাও এখন রীতি হয়ে গিয়েছে। পুজো মানে তো প্রেমের মরসুম। মণ্ডপের পুষ্পাঞ্জলিতে শাড়ি-পাঞ্জাবিতে প্রেমিক-প্রেমিকাদের উপস্থিতিও চোখে পড়ে। দশমীর দিন তাই প্রেমিকের হাতে সিঁদুরের ছোঁয়া না পেলে প্রেমটাও ঠিক জমে না।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles