Kali Puja 2024: ঝোপ-জঙ্গলে ঘেরা মন্দির! দেবী চৌধুরানী-ভবানী পাঠকের কালীপুজোর রোমাঞ্চই আলাদা

Devi Chaudhurani: দুর্গাপুর থেকে শিলিগুড়ি, এখনও স্মৃতিতে দেবী চৌধুরানী ও ভবানী পাঠকের কালী-সাধনা
parliament_-_2024-10-28T181642825
parliament_-_2024-10-28T181642825

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জনপ্রিয় উপন্যাস থেকেই দেবী চৌধুরানী, ভবানী পাঠকের সঙ্গে বাঙালির পরিচয়। প্রচলিত গল্প অনুযায়ী, এক সময় বিপ্লবীদের আস্তানা ছিল ভবানী পাঠকের কালীমন্দির (Kali Puja 2024)। সেখানে মাতৃ-আরাধনা করেই তাঁরা যেতেন লক্ষ্যপূরণে। কথিত আছে, ভবানী পাঠক ও দেবী চৌধুরানী যৌথভাবে ডাকাতি করে বিপ্লবীদের দেশসেবায় সাহায্য করতেন। সেই সময়কার অনেক নিদর্শন আজও বর্তমান বাংলার নানা প্রান্তে, লোকাচারে। 

দুর্গাপুরে ভবানী পাঠকের মন্দির

দুর্গাপুর সিটি সেন্টারের অম্বুজা আবাসন এলাকায় এখনও গা-ছমছম জঙ্গলের পরিবেশে অনেক ভক্ত আসেন ভবানী পাঠক ও দেবী চৌধুরানীর মন্দির দর্শন করতে। তারাপীঠ মন্দিরে মায়ের পুজোর রীতি ও নিয়ম মেনে শ্যামাকালী পুজোর (Kali Puja 2024) আগের নিশিরাতে ভবানী পাঠকের মা কালীর পুজো অনুষ্ঠিত হয় এখানে। ভূত চতুর্দশীতেই শুরু হয় দেবী আরাধনা। ভবানী পাঠকের মা কালী আজও বন্দে মাতরম্ মন্ত্রে পূজিত হন। অম্বুজা আবাসন কংক্রিটে মোড়া অভিজাত এলাকায় অবস্থিত হলেও সেই সময়কার গা-ছমছমে পরিবেশ আজও বিদ্যমান। দুর্গাপুরের মানুষ আজও এই মন্দিরটিকে ভবানী পাঠক ও দেবী চৌধুরানীর মন্দির নামেই চেনেন। মন্দিরের পুরোহিত সূত্রে জানা যায়, প্রবেশ পথে ও মন্দিরের ভিতরে মায়ের বেদিতে খোদাই করা রয়েছে দেশাত্মবোধক মন্ত্র, 'ওঁ বন্দে মাতরম্ জয় জয় ভারতবর্ষম'। এছাড়াও এই মন্ত্রের সঙ্গে আরও উচ্চারিত হয় 'ঐক্যম শরণম্‌ গচ্ছামি', 'সত্যম শরণম্‌ গচ্ছামি', স্বরাজ শরণম্‌ গচ্ছামি'।

মালদহে দেবী চৌধুরানীর কালী-সাধনা

প্রাচীন কালীপুজো ঘিরে ভক্তদের ঢল নামে মালদার গোবরজনা কালীবাড়িতে। মনস্কামনা নাকি বিফলে যায় না। তাইতো এই মন্দিরে ভক্তদের ভিড় ক্রমশ বেড়েই চলেছে। কালীপুজোর দিন শুধুমাত্র বাংলা নয়, বিহার, ঝাড়খণ্ড থেকে বহু ভক্ত আসেন মালদহের প্রাচীন গোবরজনা কালীমন্দিরে। লোকমুখে প্রচলিত রয়েছে এই পুজো নাকি শুরু করেছিলেন ভবানী পাঠক। এক সময় এই অঞ্চল ঘন জঙ্গলে ঘেরা ছিল। মন্দিরের পাশ দিয়েই বয়ছে কালিন্দ্রী নদী। নৌকায় যাওয়ার পথে দেবী চৌধুরানী ও ভবানী পাঠক এখানে নোঙর করেন নৌকা। সেই সময় জঙ্গলে ভবানী পাঠক কালীর পুজো দিয়ে যান। পরে স্থানীয়রা প্রতি বছর পুজো দিতেন এই জঙ্গলে বিশাল এক বট গাছের নীচে। কয়েক পুরুষ ধরে এই পুজোর দায়িত্ব পালন করে আসছে স্থানীয় চৌধুরী পরিবার।

আরও পড়ুন: ধনতেরাসে বিধি মেনে পুজোয় অকাল মৃত্যুর হাত থেকে মুক্তি, লাভ হয় অপার ঐশ্বর্য

শিলিগুড়িতে ভবানী পাঠকের আরাধ্যা কালী

বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাসে ভবানী পাঠক চরিত্রের বাস্তবে কোনও অস্তিত্ব রয়েছে কি না, তা নিয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে। তবে উপন্যাসেই ইঙ্গিত ছিল, অষ্টাদশ শতাব্দীতে সন্ন্যাসী বিদ্রোহের সময়ে ভবানী পাঠক নাকি তিস্তা লাগোয়া বোদাগঞ্জে আত্মগোপন করেছিলেন। সেই সময়েই তিনি এখনকার শিকারপুর চা বাগানের জমিতে অস্থায়ী কালী মন্দির (Kali Puja 2024) গড়ে পুজো করতেন বলে মানুষের বিশ্বাস। উপন্যাসের সেই চরিত্রের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের যোগাযোগ নিয়ে যত বিতর্কই থাক না কেন, স্থানীয় বাসিন্দারা ভবানী পাঠকের অস্তিত্বে কেবল বিশ্বাসীই নন, তাঁর প্রতিষ্ঠিত কালীমন্দিরের মূর্তি গড়ে আজও পুজো করেন তাঁরা। মূলত, দেবী চৌধুরানীর মন্দিরের খ্যাতিতেই বিভিন্ন প্রান্তের কালী-গবেষকরা এখানে আসেন। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের পর্যটকদের কাছে এটি বাড়তি আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। এখানকার কালীমন্দির জাগ্রত ও প্রসিদ্ধ বলেই স্থানীয় ভক্তদের বিশ্বাস রয়েছে। এই মন্দিরে রীতিমতো নিয়ম ও নিষ্ঠার সঙ্গে বছরে দুবার কালীপুজো হয়। একবার আষাঢ় মাসে, আরেকবার কার্তিক মাসে। ঝোপ-জঙ্গলে ভরা, অরণ্যের মাঝে এই কালীপুজোর আলাদা রোমাঞ্চ রয়েছে ভক্তদের কাছে। 

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles