Jagadhatri Puja 2024: রবিবার মাত্র একদিন জগদ্ধাত্রী পুজো হবে কৃষ্ণনগরে, চলছে চূড়ান্ত পর্যায়ের মণ্ডপসজ্জার কাজ

Krishnanagar: কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর কোথায় কী থিম, জেনে নিন এক ঝলকে
Jagadhatri_Puja_2024_(2)
Jagadhatri_Puja_2024_(2)

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের হাত ধরেই কৃষ্ণনগরের মাটিতে প্রথম জগদ্ধাত্রী পুজোর (Jagadhatri Puja 2024) সূচনা হয়েছিল। পরে, তাঁর উদ্যোগে এই পুজো চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। চন্দননগরে এই পুজো শুরু হওয়ার পিছনে রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের ভূমিকা রয়েছে বলে ইতিহাস থেকে আমরা জানতে পারি। স্বাভাবিকভাবে সেই জগদ্ধাত্রী পুজোকে কেন্দ্র করে কৃষ্ণনগর জুড়ে এখন সাজো সাজো রব।

কীভাবে শুরু হয়েছিল কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজো? (Jagadhatri Puja 2024)

ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, খাজনা দিতে না পারার কারণে নবাব মীর কাশেমের হাতে বন্দি হলেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র। অন্য মতে, নবাব আলিবর্দির হাতে কৃষ্ণচন্দ্র বন্দি হন। তাঁকে পাঠানো হল বিহারের মুঙ্গেরের জেলে। বন্দি দশা কাটানোর পর তিনি যখন নদীপথে বাড়িতে ফিরছিলেন, তখন কৃষ্ণনগরে (Jagadhatri Puja 2024) পৌঁছানোর আগে ধুবুলিয়াতে বিসর্জনের বাজনা শুনতে পান। তখন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র নৌকার মাঝিদের জিজ্ঞাসা করেন এটা কিসের বাজনা। তখন তাঁরা উত্তর দেন, দুর্গাপুজোর বিসর্জনের বাজনা। তার আগে থাকতেই রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের রাজত্বে দুর্গাপুজো হয়ে আসছিল। সেবছর দুর্গাপুজো করতে না পারার কারণে কৃষ্ণচন্দ্রের মন খুব খারাপ হয়ে যায়। তিনি বাড়িতে আসার পর সেই রাতেই স্বপ্নাদেশ পান। তাঁকে বলা হয় যেহেতু তিনি দুর্গাপুজো দিতে পারেননি, দুর্গা মায়ের আর এক রূপ রয়েছে সেই পুজো তিনি দিতে পারেন। এরপরেই তিনি রাজদরবারে এসে বিভিন্ন পণ্ডিতদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন, জগদ্ধাত্রী নামে একটি মাতা রয়েছে যাকে পুজো করা যায়। প্রায় ২৬৫ বছর আগে দুর্গাপুজোর নবমীর ঠিক একমাস পর কার্তিক শুক্লা নবমীতে জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু করেন তিনি।

আরও পড়ুন: ৯৭ বছরে পা দিলেন লালকৃষ্ণ আডবানি, জন্মদিনে বর্ষীয়ান নেতাকে শুভেচ্ছা মোদি-শাহের

কৃষ্ণনগরে কোথায় কী থিম?

পুরানো ঐতিহ্য ও পরম্পরা বজায় রেখে আজও কৃষ্ণনগরে ধুমধাম করে পালিত হয় জগদ্ধাত্রী পুজো (Jagadhatri Puja 2024)। মূলত দুর্গাপুজোর একমাস পর কার্তিক শুক্লা নবমীতেই এই পুজো হয়ে থাকে। এবছরও কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রী পুজোয় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ চমক রয়েছে। পুরানো ঐতিহ্য মেনেই কৃষ্ণনগরের রাজবাড়িতে পূজিত হচ্ছেন জগদ্ধাত্রী মাতা। এবছরের চাষা পারা বারোয়ারি ইতিমধ্যেই তাদের ঐতিহ্যবাহী বড়মা তৈরিতে ব্যস্ত রয়েছে। কৃষ্ণনগর পাত্র বাজার স্বীকৃতি ক্লাব পুজো কমিটি এবার আফ্রিকার জাঞ্জিবারের ডোমিনোজ টাওয়ারের আদলে তৈরি মণ্ডপ তৈরি করেছে। এবছর ক্লাব অন্যনার গুরুত্বপূর্ণ থিম হস্তশিল্পের সাবেকিয়ানা। অর্থাৎ বাংলা তথা নদিয়ার যে হস্তশিল্প রয়েছে, সেই হস্তশিল্প গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে এই মণ্ডপে। প্রতি বছরের মতোই প্রভাত সংঘ তাদের থিম করেছে অরণ্যকন্যা। ক্লাব অন্নপূর্ণার থিম রয়েছে মহাকাল। অন্যদিকে গোলাপপট্টি বারোয়ারির থিম রয়েছে আলোক সুধা। তবে বাগাডাঙ্গা বারোয়ারি থিমের মণ্ডপ তৈরি না করলেও তাদের বাঘা মা অতি ঐতিহ্যপূর্ণ।

ঘট বিসর্জন ঘিরে উন্মাদনা

কৃষ্ণনগরে এবছর আগামী রবিবার মাত্র একদিন জগদ্ধাত্রী (Jagadhatri Puja 2024) পুজো হবে। সেই কারণে বিভিন্ন মণ্ডপ সম্পূর্ণভাবে তৈরি না হলেও প্রায় আংশিক কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। চূড়ান্ত পর্যায়ের কাজ চলছে। তা সত্ত্বেও ইতিমধ্যেই কৃষ্ণনগরে আলোকসজ্জায় পরিপূর্ণ হয়েছে। গোটা রাজ্য থেকেও সাধারণ মানুষ কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজো দর্শনে ইতিমধ্যেই আসতে শুরু করেছেন। আগামীকাল এবং পরশু সাধারণ মানুষের আরও ভিড় বাড়বে বলে জানা যায়। তবে, কৃষ্ণনগর জগদ্ধাত্রী পুজোর মূল আকর্ষণ সাং অথবা বিসর্জন। আগামী সোমবার সকাল থেকেই একাধিক বারোয়ারি প্রথমে ঘট বিসর্জন দেবে। এরপরেই বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন প্রতিমা নিয়ে কাঁধে করে বিসর্জনের পথে এগিয়ে যাবে তারা। আর এই বিসর্জন দেখার জন্য হাজার হাজার ভক্তরা রাত জেগে উপভোগ করে থাকেন। তবে এবছর প্রশাসনের পক্ষ থেকেও কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles