মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সুকেশ চন্দ্রশেখরের অর্থ তছরুপ মামলায় নাম জড়াল অভিনেত্রী জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজের (Jacqueline Fernandez)। ইডির দায়ের করা অভিযোগপত্রে রয়েছে অভিনেত্রীর নাম। দিল্লির একটি আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা দিয়েছে ইডি (Enforcement Directorate)। এর আগেও অর্থ তছরুপ (extortion) মামলায় অভিযুক্ত সুকেশ চন্দ্রশেখরের (Conman Sukesh Chandrashekar) সঙ্গে সম্পর্কে থাকার কারণে খবরের শিরোনামে উঠে এসেছেন অভিনেত্রী। ইতিমধ্যেই একাধিকবার ইডি জ্যাকলিনকে তলব করেছে। অভিনেত্রীর কনম্যানের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি বেশ কিছুদিন ধরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছিল। কিন্তু এই বিষয়ে কখনই নিজের মুখে কিছু স্বীকার করেননি জ্যাকলিন।
আরও পড়ুন: দেশবাসীর সুবিধাই আগে! জানুন রাশিয়া থেকে তেল কেনা নিয়ে কী মত বিদেশমন্ত্রীর
অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগের ভিত্তিতে, তাঁর আইনজীবী প্রশান্ত পাতিল একটি প্রকাশ্য বিবৃতি জারি করেছেন। সেখানে উল্লেখ করা রয়েছে যে জ্যাকলিন এখনও অভিযোগের কোনও অফিসিয়াল কপি পাননি। তিনি বলেন, "ইডি যে অভিযোগ ফাইল করেছেন সেই ব্যাপারে তথ্য আমরা কেবল মিডিয়ার মাধ্যমেই পেয়েছি। আদালত বা ইডি, কারও তরফেই কোনও অফিসিয়াল যোগাযোগ করা হয়নি। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের করা কোনও অভিযোগের অফিসিয়াল কপি পাননি আমার মক্কেল। তবে যদি মিডিয়ার রিপোর্ট সত্যি হয়, তাহলে এটা দুর্ভাগ্যজনক যে আমার মক্কেলকে এই মামলায় অভিযুক্ত করা হচ্ছে।"
আরও পড়ুন: অনুপ্রবেশ ইস্যুতে কোনও আপোশ করবে না মোদি সরকার, জানাল বিজেপিও
এখনই জ্যাকলিনকে গ্রেফতার করতে পারবে না ইডি। তবে দেশের বাইরে যেতে পারবেন না অভিনেত্রী। জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজের হেয়ার ড্রেসারের মাধ্যমেই যোগাযোগ হয় দুজনের। প্রথমে কনম্যান সুকেশ চন্দ্রশেখরের পাঠানো মেসেজের উত্তর দেননি জ্যাকলিন। পরবর্তীতে তিনি তাঁর হেয়ারড্রেসারের মাধ্যমে অভিনেত্রীর কাছে পৌঁছন। নিজের পরিচয় দিয়ে সুকেশ বলেছিলেন যে, তিনি একটি টিভি নেটওয়ার্ক এবং একটি জুয়েলারি ব্র্যান্ডের মালিক। ইডি আধিকারিকরা জানিয়েছেন, অভিনেত্রী তখনও জানতেন যে তিহার জেল থেকে ফোনগুলি করতেন সুকেশ।
অভিনেত্রী নিজের বয়ানে জানিয়েছেন, সুকেশ চন্দ্রশেখর প্যারোলে বের হওয়ার পর তাঁর সঙ্গে অভিনেত্রীর মাত্র দুবার দেখা হয়েছিল। ভিডিও কলের মাধ্যমেই কথা হত তাঁদের। এই ভিডিও কল করা হল তিহার জেল থেকেই।
এর আগে একাধিকবার অভিনেত্রীকে তলব করেছে ইডি। চলতি বছরের জুন মাসে শেষবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজকে। অভিনেত্রীর সাত কোটি ২৭ লক্ষের সম্পত্তি এবং ১৫ লক্ষ নগদ টাকার সঙ্গে আর্থিক তছরুপ মামলার যোগ পেয়েছেন গোয়েন্দারা। একটি বিবৃতিতে ইডি জানায়, "জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজকে পাঁচ কোটি ৭১ লক্ষ টাকার উপহার দিয়েছেন সুকেশ চন্দ্রশেখর। প্রতারণার টাকা দিয়েই ওই উপহার কেনা হয়েছিল।" পাশাপাশি, এও জানানো হয়েছিল যে সুকেশের দীর্ঘদিনের সহযোগী পিঙ্কি ইরানির মাধ্যমেই অভিনেত্রীকে উপহার পাঠাতেন সুকেশ। এই উপহারের তালিকায় ৫২ লক্ষ টাকার ঘোড়া, নয় লক্ষ টাকার পার্সিয়ান ক্যাট সহ আরও অনেক মূল্যবান জিনিসপত্র রয়েছে। এছাড়াও সুকেশ Gucci এবং Chanel -এর একাধিক ব্যাগ ও পোশাক দিয়েছিলেন জ্যাকলিনকে। পাশাপাশি, এক চিত্রনাট্যকারকে ওয়েব সিরিজ লেখার জন্য জ্যাকলিনের হয়ে ১৫ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন তিনি। এছাড়া জ্যাকলিন নিজে জানিয়েছেন লুই ভিতন, ডিওর - এর মতো বহুমূল্য সামগ্রী, মিনি কুপার গাড়ি উপহার হিসেবে পেয়েছিলেন তিনি।
দিল্লির এক ব্যবসায়ী চেন্নাই-এর বাসিন্দা সুকেশ চন্দ্রশেখরের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, এক বছরে তাঁর থেকে ২০০ কোটি টাকা প্রতারণা করেছে সুকেশ চন্দ্রশেখর। সেই মামলাতে ডেকে পাঠানো হয়েছিল অভিনেত্রী জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজকে। গত ৩০ অগাস্ট ইডির দফতরে প্রায় ৫ ঘণ্টার ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল জ্যাকলিনকে। জ্যাকলিনের সঙ্গে কথা বলে ইডি-র হাতে আসে বহু জরুরি তথ্য। সুকেশ চন্দ্রশেখরকে ২০০ কোটি টাকার প্রতারণায় গ্রেফতার করা হয়। অভিযোগ, এই ব্যক্তির কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকার বহুমূল্য উপহার পেয়েছিলেন জ্যাকলিন।
+ There are no comments
Add yours