তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
চোখ রাঙাচ্ছে অ্যাডিনো ভাইরাস। বছরের শুরুতেই এই ভাইরাসের (Adeno Virus) দাপটে নাজেহাল হয়েছিল রাজ্যবাসী। কয়েকশো শিশুর প্রাণহানি ঘটেছিল। কলকাতার হাসপাতালে শিশু ভর্তি নিয়ে নাজেহাল হয়ে উঠেছিলেন বাবা-মায়েরা। সেই ভাইরাসের দাপট ফের দেখা দিয়েছে।
কী বলছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ?
কলকাতার একাধিক হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ফের অ্যাডিনোর (Adeno Virus) উপসর্গ নিয়ে শিশুরা ভর্তি হচ্ছে। ভর্তি থাকা রোগীদের বেশির ভাগের বয়স পাঁচ বছরের বেশি। তবে, ভর্তি থাকা রোগীদের জন্মগত বা ক্রনিক ফুসফুস ঘটিত সমস্যা থাকার জেরে, পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক হয়েছে। তাই এখন থেকেই সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। কারণ, পরিস্থিতি যে কোনও সময় বিপজ্জনক হতে পারে বলেই তাঁদের আশঙ্কা।
কোন কোন উপসর্গে বাড়তি সতর্কতা জরুরি?
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, অ্যাডিনো ভাইরাসে (Adeno Virus) আক্রান্ত হলে সর্দি-কাশির মতো উপসর্গ দেখা যায়। তার সঙ্গে জ্বর হয়। তাছাড়াও চোখে সংক্রমণ হয়। তার জেরে ভোগান্তি বাড়ে শিশুদের। তাই সর্দি-কাশির পাশাপাশি চোখ লাল হয়ে উঠলে বা চোখে অস্বস্তির মতো উপসর্গ দেখা দিলে বাড়তি সতর্ক হতে হবে। তাছাড়া, যাদের হাপানি বা ফুসফুসের অন্য কোনও সমস্যা কিংবা শ্বাসকষ্ট জাতীয় কোনও সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য বাড়তি সতর্কতা জরুরি বলেই জানাচ্ছে চিকিৎসক মহল। কারণ, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা থাকলে অ্যাডিনো বাড়তি বিপদ তৈরি করছে। তাই জ্বর বা কাশির মতো উপসর্গ দেখা দিলেই আর সময় নষ্ট করা যাবে না। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
বর্ষাকাল কি অ্যাডিনো (Adeno Virus) আক্রমণে বাড়তি শক্তি জোগাবে?
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, বর্ষার মরশুমে অ্যাডিনো বাড়তি শক্তি সঞ্চয় করবে। কয়েক মাস আগে অ্যাডিনো যখন থাবা বসিয়েছিল, তখন শীতের শেষ ও গরমের শুরু ছিল। অর্থাৎ, ঋতু পরিবর্তনের সময়েই এই ভাইরাস দাপট বাড়িয়েছিল। এ বছর বর্ষায় দ্রুত তাপমাত্রার পারদ কমছে। আবহাওয়ার তারতম্য দ্রুত হচ্ছে। ফলে, ভাইরাসঘটিত রোগে আক্রান্তের ঝুঁকি বাড়ছে। এই আবহাওয়ায় অ্যাডিনোও শক্তি বাড়াতে পারে বলেই আশঙ্কা করছে বিশেষজ্ঞ মহল। তাছাড়া, স্কুল পড়ুয়ারা যাতায়াতের সময় অনেকেই হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে যায়। ফলে, সর্দি-জ্বরের আশঙ্কা বেড়ে যায়। তাই বর্ষায় অ্যাডিনোর (Adeno Virus) ঝুঁকি বাড়ছে বলেই জানাচ্ছে বিশেষজ্ঞ মহল।
সন্তানকে কীভাবে সুস্থ রাখবেন?
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, তাপমাত্রার এই তারতম্যে সচেতনতা সবচেয়ে জরুরি। অতিরিক্ত এসি না চালানোর পরামর্শ দিচ্ছে চিকিৎসক মহল। তাঁরা জানাচ্ছেন, কোনও ভাবেই এই আবহাওয়ায় সারা রাত এসি চালিয়ে ঘুমনো চলবে না। এতে সর্দি-কাশির ঝুঁকি বাড়বে। তাছাড়া, এসি চালালেও তাপমাত্রা ২৫-২৬ ডিগ্রির নিচে রাখা যাবে না।
বৃষ্টিতে ভিজলে অবশ্যই বাড়িতে ফিরে গরম জলে ফের স্নান করে নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। তাছাড়া গরম দুধ বা যে কোনও গরম পানীয় খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। কারণ তাতে গলাব্যথা বা অন্যান্য সমস্যা কমে।
আইসক্রিম বা ঠান্ডা পানীয় এই আবহাওয়ায় বাচ্চাদের না দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে চিকিৎসক মহল। কারণ, তাতে ভাইরাস ঘটিত রোগে আক্রান্তের ঝুঁকি বেড়ে যাবে।
এছাড়াও, বাইরে থেকে ফিরে অবশ্যই হাত-মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। পরিচ্ছন্নতা যে কোনও ভাইরাস ঘটিত অসুখ ঠেকাতে সাহায্য করে।
চোখে কোনও রকম অস্বস্তি হলে কিংবা লাল হয়ে গেলে, বারবার চোখ পরিষ্কার জলে ধুতে হবে। প্রয়োজনে গরম জলে পরিষ্কার তুলো ভিজিয়ে চোখ পরিষ্কার করার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। এতে ভাইরাসের (Adeno Virus) শক্তি কমবে বলেই তাঁরা জানাচ্ছেন।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours