মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কেষ্টর বাড়ির পরিচারকই এখন কাউন্সিলর! এমনকি এই পরিচারকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টেও হত কোটি কোটি টাকার লেনদেন। এমনটাই দাবি করল সিবিআই। গরু পাচার মামলার (Cattle Smuggling Case) তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে উঠে আসছে। ফলে ততই জোরালো হচ্ছে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) বিরুদ্ধে মামলা। এই মামলায় সিবিআই চার্জশিটে দাবি করেছে যে, কেষ্টর বাড়ির পরিচারক বিশ্বজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় ওরফে মুনের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকেও বিশাল পরিমাণ টাকার লেনদেন হয়েছে। আর যার পরিমাণ দেখে চক্ষু চড়কগাছ গোয়েন্দা অফিসারদের।
তবে কে এই বিশ্বজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়?
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, ২০১১ সালে মাসিক ৫ হাজার টাকা বেতনে অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) বাড়িতে পরিচারক হিসেবে কাজে যোগ দেন তিনি। কিন্তু সেই বিশ্বজ্যোতির ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে প্রায় ৪৬ লক্ষ নগদ টাকা। ফলে একজন পাঁচ হাজার টাকা মাইনের পরিচারকের অ্যাকাউন্টে কীভাবে এত টাকা জমা পড়ল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সিবিআই। তবে জানা গিয়েছে, বর্তমানে বিশ্বজ্যোতি বোলপুর পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। চার্জশিটে সিবিআই আরও দাবি করেছে, এখন বেতন হিসেবে অনুব্রতের পরিবারের থেকে মাসে ২০ হাজার টাকা পান তিনি। এছাড়া তাঁর আয়ের অন্য কোনও উৎসের প্রমাণ মেলেনি। তবুও তদন্তে উঠে এসেছে, একটি ব্যাংকের বোলপুর শাখায় বিশ্বজ্যোতির নামের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে মোট ৪৫ লক্ষ ৭৩ হাজার ৬০৪ টাকা নগদ জমা করা হয়েছে। এছাড়াও পরে জমা করা হয় ৬২ লক্ষ ৭৭ হাজার ৩৪৫ টাকা। ফলে সব মিলিয়ে কোটি টাকার মালিক অনুব্রতর বাড়ির কাজের লোক। গোয়েন্দাদের দাবি, ওই অ্যাকাউন্টে যা লেনদেন হয়েছে, সবই অনুব্রত অথবা তাঁর দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের নির্দেশে।
আরও পড়ুন: গরুপাচার মামলায় কেষ্টর বিরুদ্ধে সাক্ষী দেবেন শতাব্দী?
সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, মুনকে সিবিআইয়ের আধিকারিকরা অস্থায়ী ক্যাম্পে ডেকে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় ও বয়ান রেকর্ডও করা হয়েছে৷ তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় মুন জানিয়েছেন, তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্টের যাবতীয় লেনদেন হয়েছে ‘মালিকে’র (Anubrata Mondal) নির্দেশে৷ সেখান থেকেই তাঁদের অনুমান, তাঁর নামে যে ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলি রয়েছে তা নিয়ন্ত্রণ করত অনুব্রত মণ্ডলের প্রাক্তন দেহরক্ষী সায়গল হোসেন (Saigal Hossain)৷
সিবিআই তরফে অভিযাগ উঠেছে যে, গরুপাচারের টাকা একাধিক প্রভাবশালীকে দেওয়া এবং বিভিন্ন ব্যবসায় খাটানোর জন্যই সেভ অডিটর হিসেবে অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) বাড়ির পরিচারক বিশ্বজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিল ও এর মাধ্যেমেই লেনদেন করা হত। গোয়েন্দারা আরও দাবি করেছেন, শুধুমাত্র বিশ্বজ্যোতি নয়, অনুব্রতর বাড়ির অন্যান্য পরিচারকের নামেও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। বর্তমানে গরুপাচার-কাণ্ডের বেআইনি আর্থিক লেনদেনের ঘটনার তদন্ত করছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের গোয়েন্দারা।
+ There are no comments
Add yours