মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: চিন সীমান্ত ঘেঁষা অরুণাচল প্রদেশের (Arunachal Pradesh) প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলির বিকাশের জন্য, সড়ক যোগাযোগ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মোদি সরকার এই অঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ বিকাশের জন্য বেশ কয়েকটি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। অরুণাচল প্রদেশের সীমান্ত মহাসড়ক হিসেবে মনোনীত জাতীয় মহাসড়ক-৯১৩ নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যেই ৬ হাজার ৬২১ কোটি টাকা মঞ্জুর করা হয়েছে। অরুণাচল প্রদেশের ফ্রন্টিয়ার হাইওয়ের বিভিন্ন অংশের জন্য মোট ১৭,০০০ কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ করেছে কেন্দ্র।
কোন কোন জায়গা দিয়ে যাবে এই সড়ক
এই প্রকল্পের অন্তর্গত মহাসড়কের মোট দৈর্ঘ্য ১৭০০ কিলোমিটার। অরুণাচল প্রদেশের জনবসতিহীন বা অল্প জনবসতিপূর্ণ এলাকার মধ্য দিয়ে এই রাস্তা যাবে। এতে ভারত-চিন সীমান্তে নতুন টানেল এবং সেতু ছাড়াও ৮০০ কিলোমিটার গ্রিনফিল্ড সেকশন থাকবে। এটি বোমডিলা থেকে শুরু হয়ে নাফরা, হুরি ও মনিগং হয়ে যাবে। কিছু পয়েন্টে, রাস্তাটি প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার খুব কাছাকাছি— চিন সীমান্ত থেকে ২০ কিলোমিটারেরও কম দূরত্ব দিয়ে যাবে। রাস্তাটি শেষ হবে বিজয়নগরে— ভারত-মায়ানমার সীমান্তের কাছে। এই সড়ক তৈরি হলে যেমন একদিকে চিনের সীমান্তবর্তী অরুণচলে ভারতীয় (India-China Border) সেনা জওয়ানদের যাতায়াতে সুবিধা হবে। তেমনি পর্যটন শিল্পেরও প্রসার ঘটবে। অঞ্চলের আর্থ সামাজিক উন্নতি হবে।
কবে শেষ হবে এই রাস্তা
২০২৭ সালের মধ্যে এই রাস্তা তৈরির কাজ শেষ করা যাবে বলে আশা করছে কেন্দ্র। রাজ্যের কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থান— তাওয়াং, মেচুকা, টুটিং, কিবিথু এবং ডং-কে সংযুক্ত করবে এই নতুন রাস্তা। এটা তৈরি করতে মোট খরচ হবে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা। গত কয়েক সপ্তাহে, সড়ক পরিবহণ মন্ত্রক এই মহাসড়কের ৭৭০ কিলোমিটারের জন্য তহবিল অনুমোদন করেছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গড়করি বলেছেন এখনও পর্যন্ত হুরি-তালিহা বিভাগ, বিলে-মিগিং বিভাগ, খারসাং-মাইও-গান্ধীগ্রাম-বিজয়নগর বিভাগ এবং বোমডিলা-নাফরা-লাদা বিভাগের জন্য ছয়টি প্যাকেজের জন্য তহবিল বরাদ্দ করা হয়েছে।
চিনকে ঠেকাতে এই প্রকল্পের গুরুত্ব
গালওয়ানকাণ্ডের পরে লাদাখ, সিকিম, অরুণাচল প্রদেশের এলএসি-তে চিনা ফৌজের সক্রিয়তার কথা মাথায় রেখে জরুরি ভিত্তিতে পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ শুরু করেছে ভারত। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে দ্রুত সেনা এবং সামরিক সরঞ্জাম চিন সীমান্তে পাঠানোর জন্য বিশেষ ভাবে সড়কপথ (Arunachal Pradesh) নির্মাণে গুরুত্ব দিতে চাইছে নয়াদিল্লি। কিছুদিন আগেই, অরুণাচলেই সেলা টানেলের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। জওয়ানরা যাতে সীমান্তের কাছে অতি দ্রুত পৌঁছে যেতে পারেন, যাতে অস্ত্রশস্ত্র তাড়াতাড়ি নিয়ে যাওয়া যায়, তার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হবে এই সেলা টানেল। ঠিক একইভাবে, নতুন সড়ক পথও কেন্দ্রের সেই ভাবনার প্রতিফলন ঘটাবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
📢 𝐀𝐫𝐮𝐧𝐚𝐜𝐡𝐚𝐥 𝐏𝐫𝐚𝐝𝐞𝐬𝐡 🛣#PragatiKaHighway #GatiShakti #BuildingTheNation@PMOIndia @PemaKhanduBJP @KirenRijiju @TapirGao @BiyuramWahgeBJP @BJP4Arunachal pic.twitter.com/RGoqS8SiK9
— Nitin Gadkari (मोदी का परिवार) (@nitin_gadkari) March 12, 2024
সামরিক সরঞ্জাম এবং রসদ পরিবহণের পাশাপাশি এই প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য হল স্থানীয় পর্যটন শিল্পে উন্নতি আনা। এই সড়ক পথের ফলে বহু দুর্গম জায়গায় সহজে পৌঁছনো যাবে। প্রকৃতির কোলে লুকিয়ে থাকা দূরবর্তী গ্রামগুলির যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হলে পর্যটন শিল্পও প্রসার পাবে।
আরও পড়ুন: ‘ওয়ান মিশন টু রকেট’! একযাত্রায় দু’দফায় উৎক্ষেপণ, চন্দ্রযান ৪ নিয়ে কী জানাল ইসরো?
চিনকে গুরুত্ব নয়
সম্প্রতি অরুণাচল প্রদেশে (Arunachal Pradesh) সফরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi)। সেখানে তিনি ৮২৫ কোটি টাকার সেলা টানেল উদ্বোধন করেন। ভারতের অরুণাচল প্রদেশ দক্ষিণ তিব্বতের অংশ বলে বরাবর দাবি করে আসছে চিন। ফলে অরুণাচল প্রদেশে যে কোনও ভারতীয় কর্মকাণ্ডকে নিশানা করে বেজিং। তবে চিনের সমস্ত কৌশল, সওয়ালকে বারংবার নস্যাৎ করেছে কেন্দ্র। দিল্লির তরফে বলা হয়েছে, বাস্তব অবস্থার কোনও পরিবর্তন হবে না অরুণাচল, ভারতের অংশ ছিল ও থাকবে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours