Bangladesh Crisis: বাংলাদেশে ধর্মীয় নিপীড়ন চলছেই, হিন্দু শিক্ষাবিদদের পদত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে

Hindu Persecution: বাংলাদেশে সিস্টেমেটিক টার্গেটের শিকার হিন্দুরা, এবার কর্মক্ষেত্র থেকে হিন্দুদের বিতাড়িত করা হচ্ছে...
hindu(1)
hindu(1)

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: প্রায় এক মাস ধরে অশান্ত বাংলাদেশ। শুরুটা করেছিলেন সে দেশের তরুণরা, চাকরিতে কোটা সংস্কারের প্রতিবাদে আন্দোলন। তবে সেখানে ছাত্র জমায়েতে নির্বিচারে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে তৎকালীন বাংলাদেশের পুলিশের ওপর। যার ফলে বহু তরুণ তরতাজা প্রাণ চলে যায় অকালে। আর তারপর গর্জে ওঠে গোটা দেশ। আন্দোলন এত বড় রূপ নেয় যে অগাস্টের ৬ তারিখ পদত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। এরপরই বদলে যায় আন্দোলনের মুখ। দেখা যায় আন্দোলনকারীরা গণভবনে লুঠ চালায়। বাড়ি বাড়ি ডাকাতি শুরু হয়। শুরু হয় হিন্দু মন্দির ভাঙচুর, হিন্দুদের হত্যাও করা হয়। এবার কর্মক্ষেত্র থেকে হিন্দুদের বিতাড়িত করার পালা।

ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে পদত্যাগে বাধ্য

সূত্রের খবর, বাংলাদেশে হিন্দু শিক্ষক, অফিসার ও পুলিশ, ডাক্তারদের চাকরি থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করছে জেহাদিরা। হিন্দুদের ভয় দেখানো হচ্ছে, নির্যাতন করা হচ্ছে, আর তারপর তাঁরা নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। শুধুমাত্র ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে ইসলামপন্থীরা বাংলাদেশের হিন্দু শিক্ষাবিদদের চাকরি থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করছেন। গত কয়েক দিনে, বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় এমন অনেক ঘটনার খবর পাওয়া গিয়েছে। সূত্র মতে, এখনও পর্যন্ত প্রায় ৬০ জন হিন্দু শিক্ষক, অধ্যাপক ও সরকারি কর্মকর্তাকে চাপের মুখে পদত্যাগ করতে হয়েছে। 

২০ অগাস্ট, ইস্কনের সহ-সভাপতি ও মুখপাত্র রাধারমণ দাস এক্সে (পূর্বে টুইটার) একটি পোস্টে জানান, কিভাবে গৌতম চন্দ্র পাল নামক এক হিন্দু শিক্ষক ইসলামপন্থীদের এই সিস্টেমেটিক টার্গেটের শিকার হয়েছেন। গৌতম চন্দ্র পাল আজিমপুর সরকারি কলেজে রসায়ন পড়াতেন এবং তিনি সর্বোত্তম রসায়ন শিক্ষক হিসেবে সম্মানিত হন। এখন তাঁকে কলেজের মুসলিম ছাত্রদের দ্বারা পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। 

নিশানায় নার্সিং কলেজ

১৯ অগাস্ট, ঢাকার হোলি রেড ক্রিসেন্ট নার্সিং কলেজের সহকারী অধ্যাপক সোনালী রানি দাসকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়।  তিনি জানান, কীভাবে মুসলিম ছাত্ররা তাঁকে তাঁর পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেন। অন্য এক হিন্দু শিক্ষিকার কথায়, "আমার ছাত্ররা এটা করেছে। আমি কত ছাত্রকে পড়িয়েছি। তাদের অনেকেই এখনও আমার সঙ্গে যোগাযোগ রাখে। আমি বিশ্বাস করতে পারছি না যে আমার ছাত্ররা আমাকে আক্রমণ করেছে। তাঁরা আমাদের বাঁচতে দেবে না," ৫৫ বছর বয়সি ওই শিক্ষিকা জানান, কিভাবে তিনি তাঁর অফিসের জানালা দিয়ে লাফ দিয়ে পালাতে বাধ্য হয়েছিলেন। এমনই কয়েকজন ছাত্র এক হিন্দু শিক্ষিকা খুকু রানি বিশ্বাসকে তাঁর অফিসে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রেখে পদত্যাগে বাধ্য করেন। তাঁকে ‘কাফির’ ও ‘মালাউন’ বলে অপমান করা হয়। 

ভারতে ফিরে যাও

খুলনা প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মিহির রঞ্জন হালদারকে ১২ অগাস্ট পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়। একইভাবে, চাঁদপুরের পুরানবাজার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদারকেও পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়। সোশ্যাল সাইটে দেখা যায়, কীভাবে দিনাজপুর জেলার সেটাবগঞ্জ সরকারি কলেজের মুসলিম ছাত্ররা অধ্যক্ষ সুবোধ চন্দ্র রায় এবং তাঁর অফিস সহকর্মী নির্মল চন্দ্র রায়ের পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছে। প্রখ্যাত গায়ক সুবীর নন্দীর কন্যাকে হেনস্থা করা হয় এবং তাঁকে "ভারত চলে যাও" বলা হয়। 

১৪ অগাস্ট, কয়েকজন মুসলিম ছাত্র ময়মনসিংহ জেলার কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিন্দু অধ্যাপক সৌমিত্র শেখরকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করে। সূত্রের খবর, মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ৩৬৩টি পৌরসভার মেয়র, ৬০টি জেলা পরিষদ এবং ৪৯৩টি উপজেলার চেয়ারম্যানকে তাঁদের পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

 

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles