Bharatiya Nyaya Sanhita: আইপিসি অতীত! দেশে জারি হল ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতা’, নতুন কী রয়েছে এতে?

New Criminal Laws: ঔপনিবেশিকতার শেষ ছাপ মুছল! দেশে ফৌজদারি আইনে নয়া অধ্য়ায়ের সূচনা, জানেন ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় কী বলা হয়েছে?
parliament_-_2024-07-01T092647277
parliament_-_2024-07-01T092647277

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আজ, সোমবার, ১ জুলাই থেকে গোটা দেশে চালু হচ্ছে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (Bharatiya Nyaya Sanhita)-সহ নতুন তিন অপরাধমূলক আইন। এর ফলে ভারতীয় আইন ব্যবস্থা থেকে পুরোপুরি মুছে যাবে ব্রিটিশ আমলে তৈরি হওয়া নিয়মগুলি। তার বদলে স্বাধীনতার ৭৫ বছর পর জায়গা করে নেবে ভারতের নতুন তিনটি ফৌজদারি আইন (New Criminal Laws) — ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (BNS), ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা (BNSS) ও ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম (BSA)। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলছেন, ‘১ জুলাই থেকে বদলাচ্ছে স্বাধীন ভারতের ইতিহাস। ভারতীয় ন্যায়বিচারের ঐতিহ্যকে মাথায় রেখে নতুন আইন তিনটি আনা হয়েছে যার সঙ্গে ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ শাসনের আর কোনও সম্পর্ক রইল না।’

কার পরিবর্তে কী

১৮৬০ সালে তৈরি ‘ইন্ডিয়ান পিনাল কোড’ (ভারতীয় দণ্ডবিধি)-র পরিবর্তে হয়েছে ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতা’ (Bharatiya Nyaya Sanhita)। ১৮৯৮ সালের ‘ক্রিমিনাল প্রসিডিওর অ্যাক্ট’ (ফৌজদারি দণ্ডবিধি)-র নতুন রূপ ‘ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা’ এবং ১৮৭২ সালের ‘ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট’ (ভারতীয় সাক্ষ্য আইন)-এর বদলে কার্যকর হচ্ছে ‘ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম’। তবে, নতুন ফৌজদারি আইন চালু হলেও পুরনো আইনগুলি যে একেবারে ব্যবহার হবে না, তাও নয়। কারণ, দেশের বিভিন্ন আদালত ও থানায় রবিবার পর্যন্ত পেন্ডিং কেসের সংখ্যা প্রায় সাড়ে চার কোটি, যার সবই চলবে পুরনো আইন মোতাবেক। নতুন কোনও অভিযোগ আইপিসি অনুসারে আর দায়ের করা যাবে না। 

নয়া আইনের বৈশিষ্ট্য

এত দিন আইনে সাজার কথা বলা ছিল। এ বার নতুন আইনের নামের মধ্য দিয়েই সাধারণ মানুষ যাতে ন্যায় পান সেই ভাবনা প্রকাশ পেয়েছে। ভারতীয় বিধানে ন্যায়দণ্ডের কাছে সবাইকে সমান চোখে দেখার কথা বলা রয়েছে। ন্যায় সংহিতায় (Bharatiya Nyaya Sanhita) নতুন ২০টি অপরাধ চিহ্নিত করা হয়েছে। আর ভারতীয় দণ্ডবিধিতে থাকা ১৯টি বিধান বাদ পড়েছে ন্যায় সংহিতায়। একই সঙ্গে ৩৩টি অপরাধের জন্য কারাদণ্ডের সাজার মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। ৮৩টি অপরাধের জন্য জরিমানার পরিমাণও আগের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। আবার ২৩টি এমন অপরাধ চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে একটি বাধ্যতামূলক সর্বনিম্ন শাস্তির কথা বলা রয়েছে ন্যায় সংহিতায়।

প্রযুক্তি নির্ভর, অনলাইন প্রক্রিয়া

নয়া আইনগুলোর (Bharatiya Nyaya Sanhita) সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হল, এফআইআর থেকে শুরু করে আদালতে বিচার প্রক্রিয়া পর্যন্ত পুরো ব্যবস্থাটাই থাকবে অনলাইনে। তার ফলে অভিযোগ দায়ের থেকে মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি পর্যন্ত সবটাই হবে প্রযুক্তি চালিত। মামলা যাতে বছরের পর বছর ধরে পেন্ডিং না থাকে, সে জন্য বিচারপ্রক্রিয়া বাধ্যতামূলক ভাবে শেষ করতে হবে ৩ বছরের মধ্যে এমনই বলা হয়েছে ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতায়।

আরও পড়ুন: স্কুল থেকেই পাচার মিড ডে মিলের চাল! গ্রেফতার ১, কাঠগড়ায় তৃণমূল বুথসভাপতি

নারী সুরক্ষায় জোর

নতুন আইনে (New Criminal Laws) নারী সুরক্ষা এবং নারীদের সঙ্গে ঘটা বিভিন্ন অপরাধের ক্ষেত্রে বিধি আরও কঠোর করা হয়েছে। নয়া আইনে ১৮ বছরের কমবয়সি অর্থাৎ নাবালিকা ধর্ষণে সাজা হবে মৃত্যুদণ্ড অথবা আজীবন কারাদণ্ড। গণধর্ষণের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ২০ বছর থেকে আজীবন কারাবাসের সাজার কথা বলা হয়েছে। যৌন হিংসার মামলার ক্ষেত্রে নির্যাতিতার বয়ান নেওয়া হবে তাঁরই বাড়িতে। এক জন মহিলা ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে সেই বয়ান নথিবদ্ধ করার কথাও বলা হয়েছে ভারতীয় ন্যায় সংহিতায়। বিয়ে বা অন্য প্রতিশ্রুতি দিয়ে মহিলাদের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের অপরাধের জন্য ১০ বছরের সাজার কথা বলা হয়েছে।

নতুন অপরাধ 

নতুন আইনে (Bharatiya Nyaya Sanhita) সাইবার অপরাধ এবং আর্থিক প্রতারণার মতো নতুন অপরাধ যুক্ত করা হয়েছে। এত দিন দেশে গণপিটুনির ক্ষেত্রে কোনও আলাদা আইন ছিল না। এ বার এমন অপরাধে কারও মৃত্যু হলে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত সাজার কথা বলা রয়েছে। পাশাপাশি, পরিবেশ দূষণ এবং মানব পাচারের মতো অপরাধকে ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় সাজার আওতায় আনা হয়েছে। তার জন্য আলাদা আলাদা বিধানের কথাও রয়েছে এই আইনে। 

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles