মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পুদুচেরি হোক বা পাঞ্জাব কিংবা রাজস্থান (Rajasthan) বরাবর মুখ্যমন্ত্রী বদল করতে গিয়েই সমস্যায় পড়েছে কংগ্রেস (Congress crisis)। দলের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে কার্যত ব্যর্থ কংগ্রেস হাইকমান্ড (congress highcomand)। সনিয়া গান্ধী (Sonia Gandhi) বা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) দিল্লির বাইরে দলের রাশ নিজেদের হাতে রাখতে পারেননি। স্থানীয় নেতৃত্ব বারবার আঘাত হেনেছে দলের আভ্যন্তরীন শৃঙ্খলায়। অন্যদিকে সেই সমস্যায় খুব একটা পড়তে হয়নি বিজেপিকে। যখনই প্রয়োজন পড়েছে দলের স্বার্থে, শৃঙ্খলার প্রশ্নে, ভাবধারা বজায় রাখতে সক্রিয় থেকেছেন অমিত শাহ (Amit Shah), নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi।)। দলের সর্ভারতীয় নেতৃত্বের কথা সর্বদাই বিনা প্রশ্নে মেনে নিয়েছে স্থানীয় নেতৃত্ব। তা সে ত্রিপুরা হোক বা আসাম। গুজরাট হোক বা কর্নাটক।
আরও পড়ুন: মোদির সফল নেতৃত্বের দৌলতেই আজ বিশ্বে ভারতের গুরুত্ব বৃদ্ধি, বললেন জয়শঙ্কর
সম্প্রতি রাজস্থানে সরকার সামলানো দায় হয়ে গিয়েছে কংগ্রেসের। রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটকে কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি হিসেবে দেখতে চাইছেন সনিয়া-রাহুলরা। সনিয়া ঘনিষ্ঠ অশোক সেই পদে আসীন হলেও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীত্ব ছাড়তে নারাজ। কিন্তু কংগ্রেসের এক ব্যক্তি এক পদ নীতিতে মুখ্যমন্ত্রীত্ব ছাড়তে হবে গেহলটকে। তাহলে মরুরাজ্যে পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী কে? কংগ্রেস হাইকমান্ডের পছন্দ রাহুল-ঘনিষ্ঠ সচিন পাইলট। কিন্তু রাজস্থানের রাজনীতিতে গেহলট-পাইলট দ্বৈরথ দীর্ঘদিনের। দুজনেই হাত শিবিরের প্রতিনিধি হলেও তাঁদের মধ্যে মনোমালিন্য বহুদিনের। ফলে সচিনকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দেখতে নারাজ গেহলট শিবির। ইতিমধ্যেই গেহলট শিবিরের ৮৩ জন বিধায়ক,হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, যদি সচিন পাইলট রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী হন,তাহলে তাঁরা ইস্তফা দেবেন। যার অবিশ্যম্ভাবী ফলাফল হল রাজস্থানে কংগ্রেসের সরকার পড়ে যাওয়া।
আরও পড়ুন: কংগ্রেস নির্বাচন প্রহসন! তোপ অমিত মালব্যর, কী বললেন বিজেপির আইটি সেলের প্রধান?
একটু পিছন দিকে হাঁটা যাক, ২০০৮ সালে রাজস্থান থেকে বেশ খানিকটা দূরে পুদুচেরিতে একই ছবি দেখা যায়। কংগ্রেসের হাইকমান্ডের মত শুনে এন রঙ্গস্বামীকে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরানো হয়। তিনি নতুন পার্টি তৈরি করেন। হাইকমান্ডের মতে পুদুচেরির শাসনভার যায় কংগ্রেসের বৈথিলিঙ্গমের কাছে। ২০২০ সালে কংগ্রেসের সরকারও পড়ে যায়,রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হয় পুদুচেরিতে। সম্প্রতি পাঞ্জাবেও ধাক্কা খায় কংগ্রেস। এ বছর মার্চে সেখানে বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবি হয় কংগ্রেসের। ভোটের চার মাস আগে সেখানে মুখ্যমন্ত্রী বদল করেন সনিয়া,রাহুল। ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংয়ের জায়গায় মুখ্যমন্ত্রী করা হয় চরঞ্জিত সিং চান্নিকে। প্রাক্তন ক্রিকেটার নভজ্যোত সিং সিধুর সঙ্গে অমরিন্দরের বিবাদের জেরে মুখ্যমন্ত্রী বদলই একমাত্র বিকল্প ছিল কিনা তা নিয়ে বিতর্ক দেখা দেয় কংগ্রেসে।
আরও পড়ুন: রাজস্থানে ৮২ জন কংগ্রেস বিধায়কের ইস্তফা! আজ কি সনিয়ার সঙ্গে বৈঠক অশোক, সচিনের?
অন্যদিকে দেখতে গেলে বিধানসভা ভোটের আগে বহু রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী পরিবর্তন করেছে বিজেপি। পার্টির যাবতীয় ক্ষোভ বিক্ষোভ সামলে তা সফল হয়েছে। ক্ষমতার হস্তান্তর নিয়ে কোথাও সংঘাত প্রকট হয়নি। উত্তরাখণ্ডে সেই ফর্মুলার পর সামনেই ২০২২ গুজরাতে নির্বাচনের আগে গোটা মন্ত্রিসভা বদল করেছে বিজেপি। ত্রিপুরাতেও মুখ্যমন্ত্রী বদল করা হয়েছে। কিন্তু দলের প্রতি আনুগত্যের প্রশ্নে চুপ থেকেছেন সবাই। হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করেছেল পদ্ম শিবির।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।
+ There are no comments
Add yours