মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: হুগলির জাঙ্গিপাড়ায় রাস্তার নর্দমার পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া ব্যালট মামলায় রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে ভর্ৎসনা কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি অমৃতা সিনহার। বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি হয় বিচারপতি সিনহার এজলাসে। সেখানেই তিরস্কৃত হয় কমিশন। আদালতের পর্যবেক্ষণ, “পঞ্চায়েতে জিতলেই হাতে টাকা। আর সেই জন্যই এত দ্বন্দ্ব।” “রাস্তায় ব্যালট পড়ে থাকলে আর নির্বাচনের স্বচ্ছতা কোথায়?” প্রশ্ন বিচারপতি সিনহার। বৈধ ব্যালট পেপার গণনার আগে কীভাবে সেগুলো গণনা কেন্দ্রের বাইরে গেল ২০ জুলাইয়ের মধ্যে হলফনামায় তা জানানোর নির্দেশও দিয়েছে আদালত। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ২৫ জুলাই।
জাঙ্গিপাড়ার বিডিওকে তলব
বুধবার জাঙ্গিপাড়ায় একটি রাস্তার ধার থেকে উদ্ধার হয় শয়ে শয়ে বৈধ ব্যালট পেপার। ব্যালট পেপারগুলিতে সিপিএমের প্রতীকে ভোট দেওয়া ছিল। সেগুলি কুড়িয়ে নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন হুগলির বাম নেতারা। রাস্তায় ব্যালট পেপার পড়ে থাকার কারণ জানতে চেয়ে জাঙ্গিপাড়ার বিডিওকে তলব করেছিলেন বিচারপতি সিনহা। বৃহস্পতিবার বেলা ২টোয় আদালতে হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল তাঁকে। একই সঙ্গে তলব করা হয়েছিল পঞ্চায়েতের রিটার্নিং অফিসারকেও। ওই বুথের ভোটের দায়িত্বে যাঁরা ছিলেন, তাঁদেরও নামের তালিকা চেয়েছিলেন বিচারপতি। গণনা কেন্দ্রের সিসিটিভি ফুটেজ এবং ভিডিও ফুটেজও আদালতে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি।
কমিশনের আইনজীবীকে তিরস্কার
এদিন জাঙ্গিপাড়ার বিডিও আদালতে (Calcutta High Court) জানান, প্রিসাইডিং অফিসার জয়দেব দে-কে ব্যালটগুলি ইস্যু করা হয়েছিল। কিন্তু সই মিলছে না। পঞ্চায়েত রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব ছিল ভোটের দিন বিষয়টি খতিয়ে দেখার। কিন্তু তার পরে আর আমার কোনও দায়িত্ব নেই। এই বুথ থেকে সন্ত্রাসের কোনও খবর রিপোর্ট হয়নি। কমিশনের আইনজীবীকে তিরস্কার করেন বিচারপতি সিনহা। বলেন, “প্রিসাইডিং অফিসারকে একজন আইনজীবী হিসেবে নয়, একজন নাগরিক হিসেবে বলুন তো, কী চলছে এটা? কীসের জন্য এত গোলমাল, গন্ডগোল? আসলে এটা একটা কাজ। জয় পেলে টাকা ইনকাম করার রাস্তা খুলে যাবে। তাই এত লড়াই। মামলার পাহাড় জমছে আদালতগুলোতে। কতগুলো ইলেকশন পিটিশনের সমাধান হয়েছে, তথ্য ঘেঁটে বলুন তো। প্র্যাক্টিক্যাল অভিজ্ঞতা থেকে বলুন।”
আরও পড়ুুন: প্রধানমন্ত্রীর ডিগ্রি বিতর্ক, কেজরিওয়াল, সঞ্জয় সিংহকে হাজিরার নির্দেশ গুজরাটের আদালতের
এর পরেই আইনজীবী (Calcutta High Court) বলেন, “এখনও কিছু প্রমাণিত নয়। ইলেকশন পিটিশন করতে হবে। এই মামলা গ্রহণযোগ্য নয়।” প্রত্যুত্তরে বিচারপতি সিনহা বলেন, “ভোট গণনার সময় গোছা গোছা ব্যালট পেপার রাস্তায় পাওয়া গেল, এরপরও বলছেন কিছু প্রমাণিত নয়! এটা বাড়াবাড়ি না? আপনাদের বিডিও স্বীকার করছেন এগুলো আসল ব্যালট, তার পরেও কিছু প্রমাণিত নয় বলে বিষয়টা লঘু করার চেষ্টা করছেন!”
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours