মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ২০১৯ সালের ৬ সেপ্টেম্বর। চন্দ্রযান-২ মিশনে অবতরণের ঠিক প্রাক মুহূর্তে ভেঙে পড়ে ল্যান্ডার বিক্রম। প্রধানমন্ত্রীর সামনে সেদিন কান্নায় ভেঙে পড়েন ইসরো চেয়ারম্যান কে শিবন। ৪ বছরের অপেক্ষা ও ইসরোর পরিশ্রমের পর ফের একবার চাঁদের মাটি ছোঁয়ার স্পর্ধা দেখাতে চলেছে চন্দ্রযান-৩ (Chandrayaan 3)। একবার ব্যর্থ হলেও এবার প্রস্তুতিতে কোনও ফাঁক রাখতে চাইছে না ইসরো। বুধবারই চন্দ্রযান-৩-এর উৎক্ষেপণের দিন ঘোষণা করে দিল ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।
আরও পড়ুন: নিউমোনিয়ার প্রকোপ থেকে বাঁচতে শিশুদের মতো বয়স্কদেরও কি টিকা জরুরি?
চন্দ্রযান-৩ (Chandrayaan 3) কবে পাড়ি দিচ্ছে
জানা গিয়েছে, আগামী ১৩ জুলাই দুপুর আড়াইটে নাগাদ চাঁদের দেশে রওনা দেবে চন্দ্রযান-৩। মহাকাশযানটি উৎক্ষেপণ করা হবে শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ কেন্দ্রের সবচেয়ে ভারী লঞ্চ ভেহিকেল থেকে। এই লঞ্চ ভেহিকেলের নাম মার্ক-৩। এই মিশনটির জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে মোট ৬১৫ কোটি টাকা।
চাঁদের মাটিতে নেমে দু সপ্তাহ গবেষণা চালাবে
ইসরো সূত্রে খবর, চন্দ্রযান-২ অভিযানে পাঠানো অরবিটরটি এখনও ভালোভাবেই চাঁদকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে। তাই এবারের অভিযানে ইসরো আর কোনও অরবিটার পাঠাবে না চাঁদের কক্ষপথে। চাঁদের মাটিতে নামতে কক্ষপথে থাকা চন্দ্রযান-২ এর অরবিটারেরই সাহায্য নেওয়া হবে। সব কিছু ঠিক থাকলে চন্দ্রযান-৩ (Chandrayaan 3) এর সঙ্গে যাওয়া ল্যান্ডার আর তার ভিতরে থাকা রোভার চাঁদের মাটি স্পর্শ করবে।
চাঁদের দেশে রোভারের কাজ
চাঁদের মাটিতে নেমে রোভারটি গবেষণা চালাবে দু’সপ্তাহ। যার জন্য এসা-র পাশাপাশি নাসার ডিপ স্পেস নেটওয়ার্কেরও সাহায্য নেবে ইসরো। কী কারণে চন্দ্রযান-২ এর ল্যান্ডার বিক্রমের সফ্ট ল্যান্ডিং সফল হয়নি, তা নিয়েও একটি রিপোর্ট তৈরি করেছে ইসরো। সেখানে বিজ্ঞানীরা খুঁজে পেয়েছেন আসল কারণ।
আরও পড়ুন: অনুমোদন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় গবেষণা সংস্থা
চন্দ্রযান ২-এর সময় যা ঘটেছিল
এর আগে, ২০১৯ সালে চাঁদের বুকে অবতরণের চেষ্টা চালিয়েছিল ইসরো। সেটিই ছিল চাঁদের মাটি ছোঁয়ার ক্ষেত্রে ভারতের প্রথম প্রয়াস। চন্দ্রযান ২-কে নিয়ে পাড়ি দিয়েছিল জিএসএলভি রকেট। তাতে ছিল একটি ল্যান্ডার ‘বিক্রম’ ও একটি রোভার ‘প্রজ্ঞান’। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণের কথা ছিল চন্দ্রযান ২-এর। মূলত, চাঁদে জলের অস্তিত্বর প্রমাণের খোঁজ করা এবং পৃথিবীর উপগ্রহের মাটি ও তার তলায় থাকা খনিজের সন্ধান করাই ছিল প্রজ্ঞানের লক্ষ্য।
কিন্ত, অবতরণের ঠিক আগে মিশন কন্ট্রোলের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় চন্দ্রযান ২-এর। যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে নির্দিষ্ট কক্ষপথ ও অবতরণ স্থল থেকে বিচ্যুত হয়ে গিয়ে অবশেষে চাঁদের বুকে আছড়ে পড়ে (বিজ্ঞানের পরিভাষায় হার্ড ল্যান্ডিং) চন্দ্রযান ২।
চন্দ্রযান ৩ নিয়ে সতর্ক ইসরো
চার বছর আগের সেই ভুলের পুনরাবৃত্তি করতে নারাজ ইসরো। তা থেকে শিক্ষা নিয়ে অনেক পরিবর্তন করা হয়েছে চন্দ্রযান ৩-এ (Chandrayaan 3)। যেমন প্রথমেই অবতরণের স্থান পরিবর্তন করা হয়েছে। পাশাপাশি, ল্যান্ডার ও রোভার নামানোর ক্ষেত্রেও বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ
+ There are no comments
Add yours