মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সাগরের মধ্যে আরও একটি জলাশয়! তাও আবার প্রাণঘাতী! এমনটাই জানিয়েছেন মিয়ামি ইউনিভার্সিটির (University of Miami) বিজ্ঞানীরা। রহস্যে ভরা পৃথিবীতে কখন যে কী উদ্ধার হয় তার কোনও ঠিক নেই। আর যা কিছুরই খোঁজ পাওয়া যাক না কেন, তা মানুষকে বিস্মিত করে। লোহিত সাগরের (Red Sea) ১.৭ কিলোমিটার নীচে এই ব্রাইন পুলটি উদ্ধার করা হয়েছে। সম্প্রতি তার খোঁজ পেয়েছেন মিয়ামি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা (Scientists)। তাঁরা জানিয়েছেন এই জলাশয়ে কোনও প্রাণী গেলেই তার মৃত্যু নিশ্চিত। দশ ঘণ্টা ধরে লোহিত সাগরের নীচে তল্লাশি চালিয়ে এই জলাশয়ের সন্ধান মিলেছে।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই জাতীয় জলাশয় আসলে ‘ব্রাইন’ প্রজাতির (Brine Pool)। ব্রাইন আসলে সমুদ্রের তলদেশের এক প্রকার নিম্নচাপ। যেখানে লবণের ঘনত্ব ও জলের চাপ সমুদ্রের বাকি অংশের তুলনায় অনেক বেশি। এখানে বিভিন্ন রকমের রাসায়নিক উপাদানও জলের সঙ্গে মিশে রয়েছে। ফলে যে কোনও সামুদ্রিক প্রাণী বা অন্য কিছু এখানে প্রবেশ করলেই তার মৃত্যু হবেই।
গবেষণার প্রধান গবেষক স্যাম পারকিস (Sam Purkis) এই পুলটিকে পৃথিবীর সবচেয়ে মারাত্মক পুল বলেছেন। তিনি বলেছেন, "যে কোনও প্রাণী ওই পুলে গেলে মৃত্যু নিশ্চিত।" পারকিস আরও জানান যে মাছ, চিংড়ি এবং ঈল অন্য প্রাণীদের শিকারের জন্য এই জায়গাটি ব্যবহার করে থাকে। কারণ এই প্রাণীগুলি অন্য প্রাণীদের খাওয়ার জন্য এই মারাত্মক পুলের কাছে লুকিয়ে থাকে। যাতে তাদের শিকার করতে সুবিধা হয়।
তিনি আরও জানান, এই পুল নিয়ে গবেষণা করলে জানা যেতে পারে যে, কীভাবে লক্ষ লক্ষ বছর আগে পৃথিবীতে মহাসাগর তৈরি হয়েছিল। তাছাড়া এই বিষাক্ত লবণাক্ত পরিবেশে যে বিরাট সংখ্যক জীবাণু বসবাস করছে, এর থেকেই বোঝা যাবে যে চরম পরিবেশে কীভাবে অন্যান্য প্রাণী বেঁচে থাকতে পারে। পৃথিবীতে কতটা চরম অবস্থাতেও বেঁচে থাকা সম্ভব এটি বুঝতে পারলেই জানা যাবে যে সৌরজগতের অন্যান্য গ্রহে এবং তার বাইরে অন্য কোথাও জীবনের হদিশ আছে কি নেই।
তবে পৃথিবীতে এটিই প্রথম ব্রাইন জলাশয় নয়। গত তিরিশ বছর ধরে লোহিত সাগর, ভূমধ্যসাগর এবং মেক্সিকো উপসাগরে অন্তত এক ডজন ব্রাইন জলাশয়ের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
+ There are no comments
Add yours