মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রাজধানী দিল্লিতে আফতাবের নৃশংসতায় গোটা দেশ শিউরে উঠেছে। মানুষ যে কতটা পাশবিক হয়ে উঠতে পারে তারই সাক্ষী থাকল পুরো দেশ (Delhi-Mehrauli Murder)। দিল্লিতে বান্ধবী শ্রদ্ধা ওয়াকারকে খুন করে দেহ ৩৫ টুকরো করে ফ্রিজে রেখে দিয়েছিল আফতাব। প্রতিদিন মাঝরাতে সেই দেহাংশ ঝোপঝাড়ে গিয়ে ফেলে আসত, একথা ইতিমধ্যেই স্বীকার করেছে আফতাব। এরইমধ্যে এক নতুন তথ্যের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। জানা গিয়েছে, কীভাবে রক্ত পরিষ্কার করতে হয়? নৃশংসভাবে খুনের পর সেটাই গুগলে সার্চ করেছিল অভিযুক্ত আফতাব আমিন পুনাওয়ালা। দিল্লির ছত্তরপুর পাহাড়ি এলাকার আবাসনের বাসিন্দাদের চোখে-মুখেও এখন আতঙ্কের ছাপ। সেখানকার বাসিন্দারা কেই বিশ্বাসই করতে পারছেন না যে, আফতাবের মত মানুষ এমন পাশবিক কাজ করতে পারে। কারণ তাদের কাছে আফতাব একজন ভালো মানুষ। তবে জানেন কি কীভাবে সে ওই বাড়িতে শ্রদ্ধাকে খুন করে, নীচে প্রতিবেশী থাকা সত্ত্বেও কেউ কীভাবে টের পেলেন না, গন্ধ যাতে কেউ না পায় তার জন্যই বা সে কী করত? এই বিষয়ে বিশদে জানলে আরও বেশি শিউরে উঠবে মানুষ।
কীভাবে খুন করল?
সূত্রের খবর অনুযায়ী, ধর্মীয় ব্যবধানের কারণে শ্রদ্ধার বাড়ির লোক তাদের সম্পর্ককে মেনে না নিলে তাঁরা দিল্লিতে চলে আসেন ও বাড়ি ভাড়া নিয়ে একসঙ্গে থাকা শুরু করেন। শ্রদ্ধা আফতাবকে বিয়ে করতে চাইলেও আফতাব তাতে রাজি না হওয়ায় তাঁদের মধ্যে প্রায় ঝগড়া লেগেই থাকত। সূত্রের খবর, গত ১৮ মে অভিযুক্ত আফতাব ও শ্রদ্ধার ঝগড়া চরমে পৌঁছয়। এই ঝগড়ার সময় শ্রদ্ধা চেঁচামেচি শুরু করেন। প্রতিবেশীরা যাতে তাঁদের ঝগড়া না শুনে ফেলে, সেই ভয়ে শ্রদ্ধাকে চুপ করাতে যায় আফতাব। শ্রদ্ধার মুখ চেপে ধরে। আর এতেই মৃত্যু হয় তরুণীর। কিন্তু এরপর এই কাণ্ড লুকোতে যা করল আফতাব তা আরও হাড় হিম করে দেওয়ার মত ঘটনা। এরপরেই একটি ফ্রিজ কিনে আনে ও শ্রদ্ধার দেহ ৩৫টি টুকরোয় কেটে ফ্রিজারে রেখে দেয়। শুধু তাই নয়, গন্ধ যাতে না বের হয় তার জন্য ব্যবহার করা হত আগরবাতি, ধূপ এবং রুম ফ্রেশনার (Delhi-Mehrauli Murder)।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তার পুরো একদিন লেগেছে শ্রদ্ধার দেহকে টুকরো টুকরো করে কেটে ব্যাগে ভরতে। আর এসব তার বাথরুমে করে। আবার তার ঘরের মেঝেও অনেকবার মুছেছে। পুলিশ আরও জানিয়েছে, শ্রদ্ধাকে খুন করার ২-৩ মাস পর্যন্ত তার কেটে রাখা মাথা রেখে দেয় ও তারপর ফেলে দেয়। রাত দুটো নাগাদ জঙ্গলে যেত। ঘণ্টাদুয়েক পরে ফিরে আসত। প্রায় ২০ দিন ধরে সেই কাজ করেছিল সে (Delhi-Mehrauli Murder)।
প্রতিবেশীরা কী বলছেন?
যেই বাড়িটি তারা ভাড়া নিয়েছিল, তার নীচের এক প্রতিবেশী বলেন, তারা কখনও বুঝতেই পারেনি (Delhi-Mehrauli Murder)। এই প্রতিবেশী আরও জানান, তিনি একটি প্রাইভেট ফার্মে কাজ করেন এবং প্রায়ই তাঁর সেখানেই দিন কেটে যায়। তিনি বলেন, “আমরা জুলাই মাসে এখানে এসেছি। আমি এই মহিলাকে কখনও দেখিনি ও তার বিষয়ে শুনিনি। আমরা আফতাবকে কাজে যেতে দেখতাম বা ঘোরাঘুরি করতে দেখতাম, কিন্তু কোনওদিন সন্দেহজনক কিছু মনে হয়নি। নম্র স্বভাবের ছিল আফতাব।” প্রতিবেশীরা আরও জানিয়েছেন, দু'জনেই বাড়িওয়ালার কাছে তাদের আইডি কার্ড জমা দিয়েছিল। কিন্তু, বেশিরভাগ প্রতিবেশী কখনও শ্রদ্ধাকে দেখেননি। কারণ,খুন হওয়ার আগে মাত্র তিনদিনই সেখানে ছিল শ্রদ্ধা ।
অন্য এক প্রতিবেশী কুসুম লতা বলেন, তিনি সম্ভবত শ্রদ্ধাকে একবার বা দু'বার দেখেছেন। মাঝে মাঝে আফতাব জোরে গান চালাতেন এবং কখনও কখনও ঝগড়া শোনা যেত, তবে এধরনের ঘটনা খুবই সাধারণ। এক দোকানদার জানান, তিনি আফতাবকে নিয়মিত দেখতেন কিন্তু তার সম্পর্কে সন্দেহজনক কিছু মনে হয়নি। আশেপাশের অনেকেই ভেবেছিলেন তিনি একা থাকেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার তাকে গ্রেফতারের পর তারা ১৩ টি শরীরের অংশ মেহরুলি ফরেস্ট অঞ্চল থেকে খুঁজে পেয়েছে, যার বেশিরভাগই হাড় (Delhi-Mehrauli Murder)।
+ There are no comments
Add yours