মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ডার্বি এবং ডুরান্ড কাপ জিতেও চুপচাপ মোহনবাগানের (Mohun Bagan Super Giant) কোচ জুয়ান ফেরান্দো। শুধুই ঠোঁটের কোণে হালকা হাসির রেখা। বাকি সময় শান্ত। এটাই কি সেরা ডার্বি জয়? ফেরান্দোর উত্তর, “এটা বলা যাবে না। কারণ গোটা প্রতিযোগিতাতেই অনেক কঠিন দলের বিরুদ্ধে খেলেছি আমরা। মুম্বই সিটি, এফসি গোয়া, আজ ইস্টবেঙ্গল— কারও বিরুদ্ধেই জেতা সহজ হয়নি। নিজেদের বার বার কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়তে হয়েছে। তবে আগেও বলেছি এটা প্রাক মরসুম প্রস্তুতি। খেলোয়াড়েরা চাপের মুখে নিজেদের সেরাটা দিয়েছে। এখনও উন্নতির অনেক জায়গা রয়েছে।”
কী বললেন কুয়াদ্রাত
অন্যদিকে, ট্রফি জিততে না পারলেও ক্রমশ হারতে থাকা একটা দলকে সাফল্যের পথ দেখাতে পেরে খুশি ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) কোচ কার্লোস কুয়াদ্রাত। ফাইনালে ওঠার জন্য দলের ফুটবলারদের কৃতিত্ব দিলেন তিনি। কুয়াদ্রাতের কথায়, “আমার মনে হয় শেষ বার ইস্টবেঙ্গল কোনও ট্রফি জিতেছে ২০১৯ সালে। তার আগে জাতীয় পর্যায়ের কোনও প্রতিযোগিতায় জিতেছে ২০১২ সালে। তা হলে এত দিন পরে যে একটা প্রতিযোগিতার ফাইনালে উঠতে পেরেছি আমরা এটাই গর্বের ব্যাপার নয় কি?”এর পরেই পড়শি ক্লাবের উদাহরণ টেনে এনেছেন ইস্টবেঙ্গল কোচ। বলেছেন, “যে কোনও প্রোজেক্ট সফল ভাবে দাঁড় করাতে সময় লাগবে। আমরা গত তিন বছর আইএসএল খেলছি। মোহনবাগানও তিন বছর আগে আইএসএলে এসেছে। প্রথম বার ওরা রানার্স হয়েছিল। বেশির ভাগ প্রতিযোগিতায় সেমিফাইনাল বা ফাইনালে গিয়েই দৌড় শেষ হয়ে যাচ্ছিল। এত দিন পর ট্রফি জিতেছে। আইএসএলের পর ডুরান্ড কাপ। ওদের কাছে আর্থিক শক্তিও বেশি ছিল। তাতেও ওদের সময় লেগেছে। তাই এই পদক জিতে আমি গর্বিত। অনেকের কঠোর পরিশ্রম জড়িয়ে আছে এই ফলের পিছনে। এখনও অনেক কাজ করতে হবে আমাদের।”
গোটা দলকে কৃতিত্ব দিলেন ফেরান্দো
ডুরান্ড কাপে (Durand Cup 2023) ইস্টবেঙ্গলের নতুন কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত (Carles Cuadrat) হয়ে উঠেছিলেন স্বপ্নের সওদাগর। কিন্তু ফাইনাল ল্যাপটা আর পার করাতে পারলেন না তিনি। জ্বলন্ত লাল-হলুদ মশাল নিভিয়ে দিল সেই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগান সুপার জায়েন্ট। জুয়ান ফেরান্দোর (Juan Ferando) আইএসএল চ্যাম্পিয়ন টিম জিতল ১৭ নম্বর ডুরান্ড কাপ। গঙ্গাপাড়ের শতাব্দী প্রাচীন ক্লাবের লকাররুমে ঐতিহ্যবাহী ট্রফিটি এনে দিলেন দিমিত্রি পেত্রাতোস (Dimitri Petratos)। তাঁর একমাত্র গোলই মোহনবাগানকে চ্যাম্পিয়ন করে দিল। দশ জনে হয়ে যাওয়ার পরে কোনও দল ডার্বির মতো এত গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে জিতেছে, এমন উদাহরণ খুব বেশি নেই। কয়েক জন ফুটবলারকে বদলেই বাজিমাত করে গেলেন ফেরান্দো। কী বলেছিলেন ফুটবলারদের? স্প্যানিশ কোচের উত্তর, “দলকে একটা কথা সব সময়েই বলি, কঠিন সময়েই নিজেদের সেরাটা বের করে আনতে হবে। রোজ বলার কারণে এ রকম মুহূর্তে কী করতে হবে সেটা ওরা বুঝে গিয়েছে। তাই আমার কাজ ছিল স্রেফ কৌশলের ব্যাপারটা ঠিক রাখা। বাকিটা ফুটবলারেরাই জানত যে কাকে কী করতে হবে। ও রকম পরিস্থিতিতে থেকেও ম্যাচ বের করার জন্য গোটা কৃতিত্ব দলের।”
আরও পড়ুন: ধরাশায়ী ইস্টবেঙ্গল, ১০ জনে খেলেও ডুরান্ড জয় মোহনবাগানের
লাল কার্ডটাই টার্নিং পয়েন্ট
ডার্বির একমাত্র গোল যাঁর পা থেকে এসেছে, সেই দিমিত্রি পেত্রাতোস ম্যাচের পর আবেগপ্রবণ হয়ে বললেন, “আসলে তখন এতটাই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলাম যে কী করছি নিজেই জানতাম না। মনে হয়েছিল নিজের দলের সমর্থকদের সঙ্গে এই সেলিব্রেশন করা দরকার। তাই ওই দিকে ছুটে গিয়েছি।” ইস্টবেঙ্গল কোচ কুয়াদ্রাতের মতে, অনিরুদ্ধ থাপার লাল কার্ডটাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। বলেছেন, “ওদের কাছে প্রতিভাবান খেলোয়াড় রয়েছে। একজন ফুটবলার কমে যাওয়ায় ওদের হারানোর কিছু ছিল না। তাই আক্রমণ করা ছাড়া ওদের কাছে উপায় ছিল না। সেটাই করেছে। আমাদের সেই সময় নিজেদের আরও নিয়ন্ত্রণে রাখা দরকার ছিল। সেটা আমরা পারিনি। তবে এর থেকে ভবিষ্যতে শিক্ষা নিতে হবে।”
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours