মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মাঝে আর মাত্র কয়েক দিন। সপ্তাহান্তেই শুরু বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব — দুর্গা পুজো (Durga Puja 2022)। তবে উৎসবের মরশুমে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো নিজেকে সুস্থ রাখা। সরকারি-বেসরকারি অধিকাংশ হাসপাতালেই চিকিৎসকদের ছুটি নেওয়ার হিড়িক। তাই অধিকাংশ হাসপাতালেই চিকিৎসক ঘাটতি দেখা যায়। বিশেষত সপ্তমী থেকে দশমী অধিকাংশ হাসপাতালের বেশ কিছু বিভাগ চিকিৎসক শূন্য থাকে। তাই বড় বিপদ ঘটলে বাড়তি ভোগান্তির আশঙ্কা থেকেই যায়। পুজোর সময় তাই বড় বিপদ এড়াতে বাড়তি সচেতনতা জরুরি।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হৃদরোগ, কিডনিজনিত সমস্যায় আক্রান্ত রোগীরা আগাম সর্তক হোন। নিয়মিত ওষুধগুলো কোনও ভাবেই বাদ দেওয়া যাবে না। বিশেষত যাঁরা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভোগেন, তাঁরা নিয়ম করে ওষুধ খাবেন। কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত রোগীরা নিয়ম মাফিক ওষুধের পাশাপাশি জল খাওয়ার ক্ষেত্রে ও বাড়তি নজর দেবেন।
পুজোর সময় ডায়ালিসিস সেন্টারগুলোতে কর্মীদের ছুটির জন্য পরিষেবা অনিয়মিত যায়। তাই কিডনি সমস্যায় আক্রান্ত রোগীদের বাড়তি সতর্কতা দরকার। ডায়বেটিস আক্রান্তদের শারীরিক সুস্থতার দিকে বাড়তি নজরদারি জরুরি। ইনসুলিন নিলে, তা কোনও ভাবেই বাদ দেওয়া যাবে না। তাহলেই বাড়তি বিপদ হতে পারে।
আরও পড়ুন: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে চান? জানুন কী কী খাবেন
তবে, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ কিংবা ডায়বেটিস আক্রান্ত রোগীদের বড় বিপদ এড়াতে খাবারের দিকে বিশেষ নজরদারি দেওয়া দরকার বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। কারণ, খাদ্যাভ্যাসে গোলমাল হলে শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে পারে। অনেক সময়েই দেখা যায়, পুজোর সময় অতিরিক্ত তেল-মশলার খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাই খাবারে রাশ দেওয়া অত্যন্ত জরুরি বলেই মনে করছেন পুষ্টিবিদদের একাংশ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যাঁরা উচ্চ রক্তচাপ কিংবা হৃদরোগের সমস্যায় ভোগেন, তাঁদের জন্য অতিরিক্ত তেল-মশলার খাবার বা অতিরিক্ত প্রোটিন অনেক সময়েই বিপদ ডেকে আনে। পুজোর সময় কমবেশি সকলেই বাইরের খাবার খান। কিন্তু পরপর অতিরিক্ত তেল যুক্ত খাবার বিপদ বাড়াতে পারে। তাই পুজোর সময় বাইরের খাবার বিশেষত ফাস্ট ফুড খাওয়ার ক্ষেত্রে রাশ টানতে হবে। বার্গার, হট ডগ থেকে বিরিয়ানি, যে কোনও তেল যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।
তবে, ক্রনিক রোগের পাশপাশি রাজ্যে চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গি (Dengue)। পুজোর মরশুমে মশাবাহিত এই রোগের দাপট যেন কয়েক গুণ বেড়েছে। তাই জ্বর নিয়ে বিশেষ সতর্কতা জরুরি বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল। ডেঙ্গি হলে সাধারণ দেহের তাপমাত্রা অনেকটাই বেড়ে যায়। তাই জ্বর হলে দেরি করা চলবে না। দ্রুত রক্ত পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে। কারণ প্রথম থেকেই রোগ নির্ণয় না করলে বিপদ বাড়তে পারে। উৎসবের মরশুমে ভোগান্তি আরও বেশি হওয়ার ঝুঁকিও থাকবে।
আরও পড়ুন: পুজোর আগেই স্বস্তির খবর! 'করোনা মহামারীর শেষ দেখা যাচ্ছে', ঘোষণা 'হু' প্রধানের
তাই জ্বর এলেই রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে। চিকিৎসকের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ না করা গেলে অন্তত টেলি যোগাযোগের মাধ্যমে সমস্যা জানাতে হবে। পাশাপাশি, এলাকার ব্লাড ব্যাংকের যোগাযোগ নম্বর রাখতে হবে। যাতে প্লেটলেটের প্রয়োজন হলে যোগাযোগ করা যায়। তবে, ডেঙ্গি ছাড়াও এই সময়ে নানান ভাইরাস ঘটিত জ্বর হয়। তাই বেশি পরিমাণ জল খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞ মহল। কারণ, যে কোনও রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষেত্রে দেহে পর্যাপ্ত পরিমাণ জল থাকা জরুরি।
তবে, অধিকাংশ সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, রোগী পরিষেবায় অসুবিধা হবে না। জরুরি পরিষেবা যাতে ব্যাঘাত না ঘটে, তার জন্য সবরকম পরিকল্পনা করা হয়েছে। চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্য কর্মীদের জন্য বিশেষ ডিউটি রোস্টার তৈরি করা হয়েছে। তাই দুশ্চিন্তার কারণ নেই। তবে, সচেতনতা অবলম্বন করলে উৎসবের দিনে বড় বিপদ এড়ানো যাবে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।
+ There are no comments
Add yours