মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশি উদ্বাস্তুদের মন জয় করতে এনআরসির বিরোধিতা করে পথে নেমেছিল রাজ্যের তৃণমূল। অথচ দুর্গাপুরে (Durgapur) ৩৫-৪০ বছর বসবাস করেও জোটেনি বসত জমির পাট্টা। বাদ পড়েছে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার তালিকা থেকেও। রাজ্যের উদ্বাস্তুদের দুর্দশা কেমন, তা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিল কাঁকসার গোপালপুরের উদ্বাস্তু কলোনিগুলি। এমনকী জব কার্ড আছে, অথচ গত ৮-৯ বছর ধরে জোটেনি ১০০ দিনের কাজ, এমন সমস্যাও রয়েছে। বৃহস্পতিবার এদের প্রতি এই ধরনের একাধিক চরম বঞ্চনার প্রতিবাদে গোপালপুর পঞ্চায়েতে ডেপুটেশন দিল বিজেপির উদ্বাস্তু সেল।
দুর্গাপুরে (Durgapur) সমস্যা কী?
কাঁকসার (Durgapur) গোপালপুরের উত্তরপাড়ার জামাইপাড়া, সুকান্ত পল্লি, ভোলানাথ পল্লি, সত্যনারায়ণ পল্লি, বিটুনিয়া-এই সব এলাকায় মূলত বাংলাদেশ থেকে আগত উদ্বাস্তুদের বসবাস রয়েছে। এখানকার বেশিরভাগ মানুষই দিনমজুর। কিন্তু এলাকার মানুষের অভিযোগ, তাঁরা বঞ্চিত। সরকার তাঁদের কোনও কাজ দেয়নি। স্থানীয় বাসিন্দা মায়া ঘরামি, গৌরাঙ্গ ঢালি প্রমুখ জবকার্ডধারী বলেন, বহু আবেদন করেছি। তবুও সরকারি কাজ পাইনি।
উদ্বাস্তু সেলের বক্তব্য
উদ্বাস্তু সেলের পক্ষে কৃষ্ণ মাল ও মনোজ ঢালি বলেন, "প্রায় ৩৫-৪০ বছর বসবাস করেও বসত জমির পাট্টা জোটেনি। আর তার ফলেই প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়ি জোটেনি তাদের। এক কথায় চরম দুর্দশার মধ্যে রয়েছে উদ্বাস্তু পরিবারের (Durgapur) মানুষগুলি। রাজ্যে উদ্বাস্তুদের প্রতি কি এটাই তৃণমূল সরকারের সহানুভূতির নমুনা? কেন এই বঞ্চনা? কেনই বা বসত জমির পাট্টা মেলেনি? এসবের উত্তর আমরা চেয়েছি।
পঞ্চায়েত সমিতির বক্তব্য
কাঁকসা (Durgapur) পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভূমি রক্ষা কমিটির কর্মাধ্যক্ষ কাঞ্চন লায়েক সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, চলতি অর্থ বছরে দুই পর্যায়ে ব্লকে প্রায় ৩০০ ভূমিহীনকে পাট্টা দেওয়া হয়েছে। ওই এলাকার বাসিন্দারা পাট্টার জন্য কোনও আবেদনই করেনি। গত মার্চ মাসে গোপালপুর পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকায় ১০টি দুয়ারের সরকারের শিবির হয়েছে। ওই শিবিরে নিয়ম মতো আবেদনকারীদের তথ্য যাচাই করে, পাট্টা প্রদান করা হয়েছে। তাই নিয়ম মেনে যদি আবেদন করা হয়ে থাকে, তাহলে বিষয়টি তদন্ত করে প্রকৃত প্রাপকদের পাট্টা দেওয়া হবে।
পঞ্চায়েত প্রধানের বিবৃতি
গোপালপুর (Durgapur) পঞ্চায়েতের প্রধান জয়জিৎ মণ্ডল জানান, গোপালপুর পঞ্চায়েতে ২৫ টি সংসারে সাড়ে ৫ হাজার জবকার্ড রয়েছে। গত ২০১৯-২০ ও ২০২০-২১ অর্থ বছরে যা কাজ হয়েছে, তা কেন্দ্র সরকার সেই টাকা এখনও পাঠায়নি। উল্টে কাজই বন্ধ করে দিয়েছে। তবে কাজ শুরু হলে অন্যত্র কাজ দেওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
এইসব টানাপোড়েনের মাঝে পড়ে উদ্বাস্তু মানুষের জীবন কীভাবে চলবে, সেটাই এখন সব চেয়ে বড় প্রশ্ন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours