মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: একটানা বৃষ্টিতে পুজোর আগে বন্যা (Flood Situation) পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে হুগলিতে। জলের পরিমাণ এতটাই বেড়েছে যে ডুবেছে রাস্তা। ডুবেছে বাড়ি। ক্ষতিগ্রস্ত চাষভূমি। হুগলির আরামবাগ, পুড়শুড়া, খানাকুল— যেদিকে তাকানো যায় সব দিকে একই পরিস্থিতি। খতিয়ে দেখতে বুধবার বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে, প্রশাসনের বিরুদ্ধে মানুষের মনের ক্ষোভ আঁচ ভালোমতো টের পেলেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন বন্যা কবলিত এলাকার মানুষ। দুর্গতরা মুখ্যমন্ত্রীর (Mamata Banerjee) সামনেই ক্ষোভ উগড়ে দেন।
মমতার সামনেই ক্ষোভ জানালেন দুর্গতরা (Flood Situation)
এদিন, বন্যা পরিস্থিতি (Flood Situation) সরজমিনে খতিয়ে দেখতে জেলা সফরে বেরিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথমে পুড়শুড়া পৌঁছন তিনি। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে। সেখানেই কেউ কেউ মুখ্যমন্ত্রীর সামনেই নিজেদের ক্ষোভের কথা তুলে ধরেন। মুখ্যমন্ত্রীকে একজন বলেন, "একটা ত্রিপল পর্যন্ত আসেনি। খাবার পর্যন্ত আসেনি।” আরও এক মহিলা বলেন, "আমরা প্রতিবছর বন্যায় ভুগি।” উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি জানি। জল ছাড়ছে তো।’’ মমতা এলাকা ছাড়তেই বিক্ষোভ শুরু হয় বন্যা দুর্গতদের।
গোপাল জানা নামে এক ব্যক্তি জানালেন, মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের সঙ্গে কথা বলেননি। ওই ব্যক্তি বললেন, ‘‘মাইকে অঞ্চল থেকে হেঁকে যাচ্ছেন, উঁচু জায়গায় ঠাঁই নাও। কিন্তু যাবটা কোথায়? একটা ত্রিপল নেই, কিচ্ছু নেই। দিদি এলেন। নামলেন। সব মহিলাদের সঙ্গে কথা কি বলেছেন? আর নেতাগুলো একবার আসে।” আরও এক মহিলা অভিযোগ করে বললেন, ‘‘উনি যে এলেন একবার দাঁড়িয়ে অন্তত দেখতে পারতেন। উনি সাহায্য করবেন না? নাকি আমরা হড়কা বানে ভেসে যাব। বাঁধটা অন্তত ঠিক করে দিন। উনি এলেন আর টাটা-বাইবাই করে চলে গেলেন।’’ এলাকার আরও এক মহিলা বলেন, ‘‘এসে দাঁড়িয়ে তো দেখতে হবে? জোর হাত করে এসে চলে গেলে হবে?’’
আরও পড়ুন: সব দাবি না মানা পর্যন্ত চলবে আন্দোলন, গভীর রাতে ঘোষণা জুনিয়র ডাক্তারদের
খোঁজ নেয়নি কেউ, ক্ষোভ জানালেন জলমগ্ন বাসিন্দারা
হুগলির পাশাপাশি বন্যা-পরিস্থিতি পশ্চিম মেদিনীপুরেও। ঘাটালের চন্দ্রকোণার শিলাবতী নদীর জল বিপদ সীমা ছাড়িয়েছে। নদীর জল (Flood Situation) গ্রামের অলিতে-গলিতে বাড়িতে কড়া নাড়ছে। বাড়ির উঠোন পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে নদীর জল। ডুবেছে বাড়ির উঠোনে থাকা রান্না করার উনুন। বন্ধ দু'বেলার রান্না। গ্রামের মহিলা থেকে পুরুষ সবাই নিজের নিজের উঠোনে মাটির বাঁধ দিয়ে বাড়ির ভিতর বন্যার জল প্রবেশ আটকাতে হিমশিম খাচ্ছে। ইতিমধ্যে জলের চাপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কয়েকটি মাটির বাড়ি। যে হারে নদীর জল গ্রামে প্রবেশ করছে, তাতে বসতবাড়ি রক্ষা হবে কি না, পরিবারের সদস্যদের কোথায় ঠাঁই হবে, এনিয়ে দুশ্চিন্তায় খাওয়া-দাওয়া থেকে রাতের ঘুম উড়েছে চন্দ্রকোনার ভবানীপুর গ্রামের ২০০টি পরিবারের। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন জলবন্দি বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, গ্রামে এহেন পরিস্থিতিতে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য থেকে প্রশাসনে জানিয়েও কেউ খোঁজ নেয়নি। জানা গিয়েছে, কয়েক হাজার হেক্টর চাষের জমি জলের তলায় রয়েছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours