Music Therapy: শিশু থেকে বয়স্ক, কোন কোন অসুখ নিরাময়ে সাহায্য করে মিউজিক থেরাপি?

গান শুনেই কমবে রোগ, একাধিক কঠিন রোগে ওষুধের মতো কাজ করতে পারে সঙ্গীত!
Music_Therapy
Music_Therapy

তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল

বিনোদন কিংবা অবসর যাপনের সঙ্গী হিসেবেই নয়। রোগ নিরাময়েও বিশেষ সাহায্য করে গান‌। মনের জটিল রোগ থেকে স্নায়ুর সমস্যা কিংবা মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা সংক্রান্ত সমস্যার মতো একাধিক কঠিন রোগে ওষুধের মতো কাজ করতে পারে সঙ্গীত। রাগের ওঠা-নামার সঙ্গে তাল মেলাতে পারলেই কমবে নানান জটিল শারীরিক সমস্যা। চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, শিশু থেকে বয়স্ক, বিভিন্ন বয়সের মানুষের নানান জটিল রোগ নিরাময়ে মিউজিক (Music Therapy) থেরাপির ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এবার জেনে নিন কোন কোন রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে মিউজিক থেরাপি?

পারকিনসন্স-এ বিশেষ উপকারী মিউজিক থেরাপি (Music Therapy)

চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, মস্তিষ্কের স্নায়ুর এক জটিল রোগ হল পারকিনসন। এই রোগে আক্রান্ত হলে হাত ও পায়ের কার্যক্ষমতা কমে যায়। স্বাভাবিক জীবন যাপন ব্যাহত হয়। রোগী কোনও সিদ্ধান্ত ঠিকমতো নিতে পারেন না। এমনকি প্রতিদিনের সাধারণ কাজগুলোও ঠিকমতো করতে পারেন না। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়, বছর চল্লিশের পরে এই রোগে অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন‌। ৬০-র চৌকাঠ পেরতেই এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। তাই বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, মিউজিক থেরাপি এই রোগ নিরাময়ে বিশেষ সাহায্য করে। তাঁরা জানাচ্ছেন, সঙ্গীত শুনলে শরীরে নিউরো-কেমিক্যাল বাড়ে। আর এই নিউরো-কেমিক্যাল মস্তিষ্ক সক্রিয় রাখতে বিশেষ সাহায্য করে। পারকিনসন রোগীর মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা নিয়েই সমস্যা হয়। তাই মিউজিক থেরাপি এই রোগের নিরাময়ে সাহায্য করে।

সিজোফ্রেনিয়া রোগ নিয়ন্ত্রণে সঙ্গীতের বিশেষ ভূমিকা

মিউজিক থেরাপি সবচেয়ে বেশি‌ প্রভাব ফেলে সিজোফ্রেনিয়া রোগীর উপরে। মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, দেহের হরমোনের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে মিউজিক থেরাপি খুবই উপকারী (Music Therapy)। বিশেষত সঙ্গীত খুব দ্রুত স্ট্রেস হরমোনকে কাবু করতে পারে। সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের বিপদ বাড়ায় এই স্ট্রেস হরমোন। তাই মিউজিক থেরাপি নিলে এই রোগ সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

কথার আড়ষ্টতা কাটায় মিউজিক থেরাপি (Music Therapy)

শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, শিশুদের মধ্যে কথা বলা নিয়ে নানান সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তাঁরা জানাচ্ছেন, অধিকাংশ পরিবারেই এখন শিশু একা থাকে। ছোট পরিবার। তাই সারাদিন কথা শোনার মানুষ কমছে। শিশুর তাই কথা শিখতেও অসুবিধা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে জটিল শারীরিক সমস্যা না থাকলেও শিশুর কথায় মারাত্মক আড়ষ্টতা রয়েছে। ফলে শিশুর বিকাশে বাধা তৈরি হচ্ছে। আত্মবিশ্বাস নষ্ট হচ্ছে। শিশু মনস্তাত্ত্বিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, শিশুর জন্মের ছ’মাস পর থেকেই নিয়মিত শিশুকে রুচিশীল গান শোনালে শিশুর কথার আড়ষ্টতা সহজেই কাটবে। স্পষ্ট কথা বলতে শিখবে।

রক্তচাপ ও হৃদস্পন্দনের অনিয়ন্ত্রিত ওঠা-পড়া স্বাভাবিক করে

মানসিক অবসাদ কিংবা মানসিক চাপে ভুগলে তার সরাসরি প্রভাব রক্তচাপের উপরে পড়ে‌। এমনই জানাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, এর জেরে অনিয়ন্ত্রিতভাবে হৃদস্পন্দনের ওঠানামা হয়‌। হৃদপিণ্ডের কার্যকারিতার সমস্যা হয়। এই ধরনের সমস্যা কমায় মিউজিক থেরাপি (Music Therapy)। মানসিক চাপকে সঙ্গীত সহজেই কাবু করতে পারে। ফলে রক্তচাপ ও স্বাভাবিক থাকে। হৃদস্পন্দন নিয়ন্ত্রণে রাখে।

মিউজিক থেরাপি কী? (Music Therapy)

চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, মিউজিক থেরাপি দু’ধরনের হয়ে থাকে। অ্যাক্টিভ থেরাপি এবং প্যাসিভ থেরাপি। কোন ধরনের থেরাপি প্রয়োজন, তা রোগীর সমস্যা কতখানি গুরুতর, তার উপরে নির্ভর করেই বিশেষজ্ঞরা সিদ্ধান্ত নেন। অ্যাক্টিভ থেরাপিতে রোগী থেরাপিস্টের সঙ্গে একসাথে কোনও বাদ্যযন্ত্র বাজান। কিংবা অনেক সময় সঙ্গীত রচনাও করেন। বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, অটিস্টিক শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য এই অ্যাক্টিভ মিউজিক থেরাপি খুবই উপকারী। শিশু কোনেও বাদ্যযন্ত্র বাজাতে পারলে কিংবা নির্দিষ্ট কিছু গান নিজের মতো করে তৈরি করতে পারলে, তাদের শরীরের বিভিন্ন পেশির মধ্যে সমন্বয় বাড়ে। মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতাও বাড়ে। আবার, প্যাসিভ থেরাপিতে রোগী বিশ্রামে থাকেন। বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো গান শোনেন। কিংবা কোনও নির্দিষ্ট বাদ্যযন্ত্র শোনেন। যেমন বহু গর্ভস্থ মহিলা নানান জটিল সমস্যায় ভোগেন। তাদের জন্য এই প্যাসিভ মিউজিক থেরাপি খুব উপকারী। চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, এই ধরনের থেরাপিতে মা ও শিশু দুজনেই সুস্থ থাকে। বড় বিপদ এড়ানো সহজ হয় (Music Therapy)।

 

DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles