TMC: নাপিতের কাজ করে দিন কাটত, এখন কোটি কোটি টাকার মালিক এই তৃণমূল নেতা, কে জানেন?

নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে গুণধরকে ইডি ডাকতেই বেরিয়ে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য
TMC_(13)
TMC_(13)

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আবারও নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম উঠে এল হুগলি জেলার আরামবাগ মহকুমার। সামনে এল তৃণমূল (TMC) পরিচালিত আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গুণধর খাঁড়ার নাম। বৃহস্পতিবার ইডি দফতরে তলব করা হয়েছিল তাঁকে। এই ঘটনা নিয়ে তোলপাড় জেলা রাজনীতি। নিয়োগ দুর্নীতিতে আগেই হুগলির শান্তনু এবং কুন্তলের নাম শিরোনামে উঠে এসেছে। এবার দুর্নীতিকাণ্ডে নাম জড়াল আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির। সূত্রের খবর, শান্তনু, কুন্তল এবং সাহিদ ইমাম নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে গ্রেফতার হয়েছে। তাদের ছায়া সঙ্গী ছিলেন তিনি। বর্তমানে তিনি সালেপুর ১নম্বর পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা।

কে এই গুণধর খাঁড়া?

গুণধর খাঁড়া শাসক দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পাওয়া থেকে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক হয়ে ওঠার ঘটনা অনেকটা রূপকথার গল্পের মতো। দিন আনা দিন খাওয়া ঘরে অভাবি নাপিত পরিবারে জন্ম তাঁর। বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর পৈতৃক বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়। পড়াশুনা তিনি খুব বেশিদূর জানেন না। তবে, মাজা-ঘষা করে নাম সই করা ভালো করে শিখে নিয়েছেন তিনি। একসময় তিনি ক্ষুর, কাঁচি নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে ঘুরে মানুষের চুল-দাড়ি কাটতেন। শুরুর দিকে এটাই ছিল রোজগারের মাধ্যম তাঁর। তারপর হুগলি জেলার সালেপুর এলাকায় একটি সেলুনের দোকান শুরু করেন তিনি। বেশ কয়েক বছর পর তিনি অন্য আর একটি পেশায় যুক্ত হন। চাষিদের কাছ থেকে ধান কিনে চাল তৈরি করে গ্রামে গ্রামে ঘুরে তিনি চাল বিক্রি করতেন। জানা যায়, ১৯৮৩ সালে কংগ্রেসের হয়ে আরামবাগের সালেপুর পঞ্চায়েতের সদস্য হন। ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর দল বদল করে তিনি তৃণমূলে (TMC) যোগদান করেন। এরপর ভোটে জিতে জন প্রতিনিধি হয়ে নিজের প্রভাব বাড়াতে শুরু করেন। ২০১৩ সালে সালেপুর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে তিনি প্রধান নির্বাচিত হন। পরে, ২০১৮ সালে তিনি পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী হন। সেখানে জয়ী হয়ে তিনি আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হন।

কত সম্পত্তির মালিক এই তৃণমূল (TMC) নেতা?

গুণধরবাবু তৃণমূলের জনপ্রতিনিধি হওয়ার পর আস্তে আস্তে তাঁর সম্পত্তি ফুলে-ফেঁপে উঠতে শুরু করে। প্রথমে তিনি ধানের বীজ ব্যবসা শুরু করেন। প্রথমদিকে অবশ্য পার্টনারশিপেই ব্যবসা চললেও পরবর্তীতে ক্ষমতার জোরে ব্যবসা নিজের হাতে হাতিয়ে নেন। এলাকা সূত্রে জানা যায়, তাঁর একটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি রয়েছে, যার নাম কালীমাতা সিড ফার্ম। এই কোম্পানিটি সালেপুরের পাঁচ মাইল এলাকায় রয়েছে। তাঁর রাজকীয় বহুতলবাড়ি আছে। এমনকী তাঁর নামে বাঁকুড়ার তালডাঙরা এলাকাতেও একাধিক জমি এবং বহু বাড়ি রয়েছে। সবমিলিয়ে তিনি কোটি কোটি টাকার মালিক। গুণধরবাবু নিজের ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে নিজের দুই মেয়ে, মেয়ের জামাই ও তাদের বন্ধুবান্ধবদের চাকরি দিয়েছেন বলে অভিযোগ। বেশ কয়েকদিন আগে চাকরি করে দেওয়ার নামে বেকার যুবক-যুবতীদের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকার প্রতারণার অভিযোগে নাম উঠে এসেছে তাঁর। তাই এবার নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডি দফতরে তলব করা হয় তাঁকে। নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে তিনি ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। ২৬ জনকে চাকরি দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু, কারও চাকরি হয়নি। ইডি-র কাছে তিনি সব তথ্য দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles