মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বিহারে বিষমদ কাণ্ডের (Hooch Tragedy) জেরে বিপাকে পড়েছে নীতিশের গটবন্ধন সরকার। বেড়েই চলেছে মৃতের সংখ্যা। সরকারি হিসেব অনুযায়ী ইতিমধ্যেই বিষ মদ খেয়ে মৃত্যু হয়েছে ৫৩ জনের। এখনও অনেকেই অসুস্থ। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এরই মাঝে এক বিস্ফোরক দাবি করেছেন বিহারের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী সুশীল মোদি। তাঁর দাবি, বিষ মদ কাণ্ডে (Hooch Tragedy) মৃতের সংখ্যা ১০০ পার করেছে। তথ্য লুকোনোর চেষ্টা করছে বিহার সরকার। তিনি আরও দাবি করেন, অসুস্থদের মধ্যে অনেকে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন। সেই তথ্যও প্রকাশ্যে আনেনি নীতিশ প্রশাসন। সুশীল মোদি বলেন, "ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ভয়ে মৃত দেহ লুকিয়ে রাখছে সরকার। এটাই প্রথম না। এই ঘটনার কিছুদিন আগে আরও এক জায়গায় বিষ মদ খেয়ে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।"
এর আগে ১৫ ডিসেম্বর নীতিশ প্রশাসনকে এক হাত নেন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী গিরিরাজ সিং। তিনি বলেন, "মদ (Hooch Tragedy) অনেকটা ঈশ্বরের মতো। চোখে দেখা যাচ্ছে না, কিন্তু সর্বত্র বিক্রি হচ্ছে।" আরও এক কেন্দ্রীয়মন্ত্রী অশ্বিনী চৌবে দাবি করেন রাজ্যে আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখতে অপারক নীতিশ প্রশাসন।
এদিকে বিষমদ কাণ্ডের (Hooch Tragedy) তদন্ত এবং মৃতের পরিবারগুলির ক্ষতিপূরণের বিষয়ে একটি বিশেষ তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। আজ শুক্রবার, রাজ ভবনের সামনে প্রতিবাদ সভার ডাক দিয়েছেন বিজেপি বিধায়করা।
২০১৬ সালেই বিহারে মদ নিষিদ্ধ হয়েছে। তবুও মদ বিভীষিকা পিছু ছাড়ছে না নীতিশ কুমারের। নিয়মিতহারে বিষ মদ খেয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে রাজ্যের যত্রতত্র। এই মৃত্যু কোথায় গিয়ে থামবে তা এখনও কেউই বলতে পারছেন না।
এই ঘটনায় (Hooch Tragedy) নীতিশ সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন বিরোধীরা। উত্তাল হয়েছে বিধানসভা। বিজেপি বিধায়করা নীতিশের পদত্যাগের দাবি করেছেন। এমনকী বিধানসভায় নীতীশ কুমার তাঁর আচরণের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে, এমন দাবিও তোলা হয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার নীতীশ বিষ মদ কাণ্ড নিয়ে বলতে গিয়ে বলেন, "মদ অত্যন্ত খারাপ একটি জিনিস। মদ খেলে মরতেই হবে। সাম্প্রতিক ঘটনা তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ।" নীতিশের এই 'অসংবেদনশীল' মন্তব্যের পরেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বিহার বিধানসভা।
আরও পড়ুন: সুপারম্যান চরিত্রে আর ফিরবেন না, নিজেই জানালেন হেনরি ক্যাভিল
ছাপরার বিষ মদ কাণ্ডের ঘটনায় ইতিমধ্যে স্টেশন হাউস অফিসার রীতেশ মিশ্র, কনস্টেবল বিকেশ তিওয়ারীকে বৃহস্পতিবার সাসপেন্ড করা হয়েছে। মরহৌরা সাব ডিভিশনাল পুলিশ অফিসার যোগেন্দ্র কুমারের সুপারিশে এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। পাশাপাশি আর কারা এই ঘটনায় জড়িত তাঁদেরও চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে প্রশাসন।
ক্ষতিপূরণ নিয়ে কী বললেন নীতিশ?
বিরোধীরা মৃতের পরিবারকে (Hooch Tragedy) ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি তুললে সে সম্ভাবনা উড়িয়ে দেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার। তিনি বলেন, "শেষবার যখন বিষমদ কাণ্ডে কারোর মৃত্যু হয়েছিল সেই সময় তাঁদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলেছিলেন কয়েকজন। কেউ মদ্যপান করেন তাঁরা মারা যাবেন। এবং তার উদাহরণ আমাদের চোখের সামনেই রয়েছে। সমবেদনা জানাই। এতে সরকারের কিছু করার নেই।" তিনি এদিন আরও বলেন, "আমি পুলিশ অফিসারদের বলেছি, তাঁরা যেন দরিদ্রদের না গ্রেফতার করেন। যারা রাজ্যে মদ তৈরি করছে এবং এর ব্যবসা চালাচ্ছে তাদের গ্রেফতার করা উচিত। তারা এই কাজ ছেড়ে নতুন করে অন্য কোনও কাজ শুরু করতে চাইলে বিহার সরকার তাদের নতুন কাজ শুরু করার জন্য ১ লক্ষ টাকা দিতে প্রস্তুত। দরকার পড়লে আমরা এই টাকার পরিমাণও বাড়িয়ে দেব। তবে এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকা যাবে না।"
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।
+ There are no comments
Add yours