মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সমাজে শিশু নির্যাতন এবং নারী ধর্ষণ রোধ করতে নিজের সাড়ে তিন বছর কন্যাকে, মা লক্ষ্মী রূপে পুজো করে অভিনব উপায়ে প্রতিবাদ জানালেন বাগচি দম্পতি। এমন পুজো কার্যত সামজিক সচেতনতার প্রতীক। এই পুজো অনুষ্ঠিত হয়েছে, নদিয়া জেলার (Nadia) ভারত বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী কৃষ্ণগঞ্জ থানার নাঘাটা পাড়ায়। মা লক্ষ্মীর এই অভিনব পুজোতে খুশির উচ্ছ্বাস এলাকায়।
কন্যাকে মা লক্ষ্মী রূপে পুজো (Nadia)
লক্ষ্মী পূর্ণিমার পুণ্য তিথিতে, সারা বিশ্ব যখন ধন-সম্পদ লাভের আশায় ব্রতী, ঠিক সেই মুহূর্তে নিজের সাড়ে তিন বছর বয়সী একরত্তি শিশু কন্যাকে, দেবী লক্ষ্মী রূপে ধর্মীয় রীতি মেনে পুজো করলেন বাবা-মা। সেই সঙ্গে, পৃথিবী থেকে শিশু নির্যাতন ও নারী ধর্ষণের মতো অসামাজিক ঘটনা যাতে আর না ঘটে, তার জন্য প্রার্থনা করলেন এই বাগচি দম্পতি। নাঘাটা (Nadia) এলাকার বাগচি পরিবারের ঠাকুর ঘরের সিংহাসনে, মা লক্ষ্মীর প্রতিকৃতি রয়েছে। মায়ের সামনেই এদিন নিজের শিশু কন্যা অরিত্রিকা বাগচিকে, মা লক্ষ্মীর রূপে সজ্জিত করে, পুরোহিত ডেকে পুজো করলেন তাঁরা।
কন্যার মায়ের বক্তব্য
নদিয়ার (Nadia) পুজো প্রসঙ্গে, কন্যা অরিত্রিকা বাগচির মা ঝুমা বাগচি বলেন, “মেয়ে সন্তানকে পরিবারের লক্ষ্মী হিসাবে দেখছি আমরা। নারী হল মাতৃশক্তির আরেক রূপ। মূলত সেই কারণেই মা লক্ষ্মীর মৃন্ময়ী মূর্তির বদলে, ঘরের মেয়েকেই আমরা মা লক্ষ্মী হিসাবে আরাধনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” পাশাপাশি নিজের মেয়েকে ভগবান রূপে আরাধনা করার মধ্যে দিয়ে, সমাজ থেকে শিশু-নারী নির্যাতনের মতো অমানবিক ঘটনার, চিরতরে অবলুপ্তির আহ্বান জানিয়েছেন পরিবার।
কন্যার বাবার বক্তব্য
বহুক্ষেত্রে গ্রাম বাংলার বহু জায়গায় বাস্তব জীবনে মেয়েদের পিছন সারিতে ফেলে রাখার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। তাই কন্যা অরিত্রিকা বাগচির বাবা অর্জুন বাগচি বলেন, “কন্যা সন্তানদের প্রতি ভ্রান্ত ধারণা ও অসামাজিক মনোভাবকে মুছে দিতে হবে। নারীদের প্রতি সামাজিক সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে।”
দুর্গা পুজোকে কেন্দ্র করে কুমারী পুজোর প্রচলন থাকলেও, কোনও শিশু কন্যাকে লক্ষ্মী রূপে আরাধনা করার ঘটনা এখনও পর্যন্ত নজিরবিহীন। বাগচি দম্পতির এই কর্মকাণ্ডকে স্বচক্ষে দেখে, নাঘাটার (Nadia) বাড়িতে এইদিন ভিড় জমান আশেপাশের প্রতিবেশীরাও।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours