মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: অভাবের সংসারে ঋণদানকারী সংস্থার কাছ থেকে মায়ের নামে টাকা তুলে, সুদের কিস্তি দিতে না পাড়ায়, বেপাত্তা হয়ে যান ছোট ছেলে। এরপর এই ঋণের কিস্তি মেটানোর দায় চাপে মা-বাবার উপর। কিস্তি না মেটাতে পেরে আত্মঘাতী হন প্রৌঢ় দম্পতি, আর এই ঘটনায় শক্তিগড়ে (Purba Bardhaman) তীব্র শোরগোল পড়েছে। উল্লেখ্য, রাজ্যে করোনা অতিমারির পর থেকে ক্রমশ কর্মসংস্থানের পরিসর কমে গেছে। বেকারত্বের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানুষের হাতে টাকা নেই। বিরোধীরা বার বার অভিযোগ করেছেন, রাজ্যে বিনিয়োগ নেই, শিল্প কারখানা বন্ধ, চাকরির নিয়োগে দুর্নীতি চলেছে। এই অবস্থায় জেলায় জেলায় বেকারদের ঋণদানকারী সংস্থা টার্গেট করে ঋণ দেয় এবং দেওয়ার পর থেকেই সুদের কিস্তি নিয়ে ব্যাপক চাপ তৈরি করে। এই চাপের কবলেই শক্তিগড়ের গোপালপুর গ্রামে আত্মঘাতী হন প্রৌঢ় দম্পতি। ঠিক এই ভাবেই জেলায় ঋণাদনকারী সংস্থা, অভাবের সংসার গুলিতে ঋণ দিয়ে ঋণের কিস্তি আদায়ের নামে সর্বস্বান্ত করেছে বলে অভিযোগ করছেন এলাকার মানুষ।
কীভাবে আত্মঘাতী (Purba Bardhaman)
সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়ের (Purba Bardhaman) এই আত্মঘাতী প্রৌঢ় দম্পতির নাম হেমন্ত মালিক এবং রেখা মালিক। ঋণের কারণেই তাঁরা আত্মহত্যা করেন। এই দম্পতির ছোট ছেলে রমেশ মালিক, মায়ের নামে একাধিক ক্ষুদ্র ঋণদানকারী সংস্থা থেকে ঋণ নিয়েছিলেন। কিন্তু ঠিক মতন কিস্তি দিতে পারছিলেন না। এরপর যুবক স্ত্রী সন্তানকে নিয়ে অন্যত্র পালিয়ে যান। এরপর ঋণের দায় চাপে মা-বাবার উপর। এই সুদের কিস্তির বোঝা না সামলাতে পেরে আত্মঘাতী হন মা-বাবা।
এলাকার মানুষের অভিযোগ
স্থানীয় বাসিন্দা (Purba Bardhaman) সুতপা মণ্ডল ঋণ প্রদানকারী সংস্থা সম্পর্কে বলেন, "এখানে ঋণ পেতে কোনও সরকারি সমবায়ের কাছে যেতে প্রয়োজন হয় না। কোনও কাগজপত্র লাগে না। সরকারি ব্যাঙ্কেও যেতে হয় না। বাড়িতে বসেই ঋণ পাওয়া যায়। কিন্তু সপ্তাহে সপ্তাহে কিস্তি না দিতে পারলে প্রবল চাপ তৈরি করে ঋণ প্রদানকারী সংস্থা গুলি। এই চাপের আত্মঘাতী হয়েছেন ওই দম্পতি"। অভিযোগের সুরে আরও বলেন, প্রয়োজনের সময় রাজ্য সমবায় এবং ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ মেলে না। ঋণ নিতে গেলে থাকে কাগজপত্র জমা করার জটিলতা। তাই এই ঋণ প্রদানকারী গোষ্ঠীদের উপর নির্ভর করতে বাধ্য হয় মানুষ। রাজ্যের সরকারি সমবায় গুলি ভালো ভাবে কাজ করলে, মানুষকে এই রকম ঋণদানের সংস্থার কাছে গিয়ে নিঃশেষ হতে হতো না।
মৃত দম্পতির পরিবারের বক্তব্য
মৃত দম্পতির বড় ছেলে সনাতন মালিক বলেন, “ভাই ঋণ নিয়েছিল মায়ের নামে। বুধবারে ঋণ প্রদানকারী সংস্থা থেকে সুদের কিস্তি নিতে আসে। বাবা-মা সারাদিন দুশ্চিন্তায় কিছুই খাননি। রাতে চা খেয়ে শুয়ে পড়েছিলেন। বৃহস্পতিবার তাঁদের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়”।
উল্লেখ্য প্রশাসন (Purba Bardhaman) সূত্রে জানা গেছে, জেলা জুড়ে ঋণ দেওয়ার নাম করে কিছু সংস্থা জাল বিস্তার করে রয়েছে। ঋণের ফাঁদে গরীব মানুষেরা শিকার হচ্ছেন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের , Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours