মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের জোড়াসাঁকো (Jorasanko) ঠাকুরবাড়ির ক্যাম্পাসে তৃণমূলের (TMC) দলীয় কার্যালয় নিয়ে বড় পদক্ষেপ নিল কলকাতা হাইকোর্ট। জোড়াসাঁকো ক্যাম্পাসে অবৈধভাবে যে তৃণমূলের শিক্ষাবন্ধু সমিতির কার্যালয় তৈরি করা হচ্ছে, তা ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। সোমবার এই নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। কলকাতা পুরসভাকে তিন সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে এই নির্দেশকে কার্যকর করার জন্যে।
মামলাটি কী?
রবীন্দ্রভারতীর জোড়াসাঁকো (Jorasanko) ক্যাম্পাসে হেরিটেজ ভবন ভেঙে বানানো হচ্ছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের শিক্ষাবন্ধু সমিতির কার্যালয়। আর এই অভিযোগে আদালতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন স্বদেশ মজুমদার নামের এক ব্যক্তি। সেই মামলার প্রেক্ষিতেই আজ এমন নির্দেশ দিল আদালত। মামলাকারীর আইনজীবী শ্রীজিব চক্রবর্তীর অভিযোগ, জোড়াসাঁকোর বাড়িতে যে ঘরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে প্রথমবার বঙ্কিমচন্দ্র চটোপাধ্যায়ের দেখা হয়েছিল, সেই ঘরে এখন তৃণমূলের শিক্ষাবন্ধু সমিতির কার্যালয় তৈরি করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, এটি ‘গ্রেড ওয়ান’ হেরিটেজ। আর এই ভবনেরই দুটি ঘর ভেঙে ফেলা হচ্ছে।
তিনি আরও অভিযোগ করেছেন যে, জোড়াসাঁকোর (Jorasanko) সেই ঘরে এখন রবি ঠাকুর, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের একটিও ছবি নেই। তাঁদের বদলে সেখানে টাঙানো হয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের ছবি।
আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই বড় ধাক্কা শাসক শিবিরে, হাতছাড়া হল ঝালদা পুরসভা
তৃণমূলের কার্যালয় ভাঙার নির্দেশ
আর এসব অভিযোগ উঠে আসায় হেরিটেজ ভবনে আর ভাঙচুর করা যাবে না বলে এর আগেই স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ ও বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব। আর এরপর এদিন সেই মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চও কড়া নির্দেশ দিয়ে বলল যে তৃণমূলের পার্টি অফিস (Jorasanko) ভেঙে ফেলতে হবে। আজ মামলার শুনানি চলাকালীন প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘হেরিটেজ ভবন না হলেও ইচ্ছে মতো যে কোনও জায়গায় এভাবে পার্টি অফিস তৈরি করা যায় কি?’
জোড়াসাঁকো (Jorasanko) ক্যাম্পাসে শাসকদলের কার্যালয় তৈরি হওয়া নিয়ে শোরগোল পড়ে গেলে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। আর এরপরেই মামলার শুনানিতে এমন নির্দেশ দেওয়া হয়। আজ হাইকোর্টের তরফে আরও বলা হয়েছে যে, ক্যাম্পাসে যে অংশে নতুন নির্মাণ করা হয়েছে তা ভেঙে ফেলে জায়গাটিকে ফের আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে ও এটির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে হেরিটেজ বিভাগকে। এছাড়াও পুনরুদ্ধারের পর হেরিটেজ ভবন বলে আলাদা করে চিহ্নিত করতে হবে ওই জায়গাকে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ১৮ ডিসেম্বর।
+ There are no comments
Add yours